তাড়াশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাকে হত্যার হুমকি, অভিযুক্ত শনাক্ত না হওয়ায় আতঙ্ক
Published: 15th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীদের একজন মেহেদী হাসান নিরব। সম্প্রতি তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পেয়ে তাড়াশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী নিরব। তবে প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও হুমকিদাতাকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এতে আতঙ্কে রয়েছেন নিরব ও তার পরিবার।
জানা গেছে, নিরব তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের কুন্দাশন গ্রামের তোফায়েল আহমেদের ছেলে। তিনি স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি প্রার্থী।
জিডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিরবের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্ট দেখছেন। এমন সময় ‘ছন্নছাড়া বাঁধন’ নামের একটি আইডি থেকে তার একটি পোস্টে কমেন্ট করে ‘জীবনে একবারই বসন্ত পেয়েছিস, শেষবারের মত হেসে নে। তুই যেভাবে বেড়ে গেছিস এর ফল তোকে নির্মমভাবে ভোগ করতে হবে’।
একই আইডি থেকে তার মেসেঞ্জারে লিখেছে ‘আমার জীবনের একটাই উদ্দেশ্য তোকে মেরে ফেলা, জবাই করার সময় হলেই তোকে জবাই করবো’। এ নিয়ে ভুক্তভোগী নিরব ও তাঁর পরিবারের লোকজন আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে মেহেদী হাসান নিরব বলেন, জুলাই বিপ্লবে দেশের জন্য লড়াই করেছি। আন্দোলনের শুরুতে বিভিন্ন হুমকি পেলেও গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর সকালে আমাকে হত্যার হুমকির বিষয়টি নিয়ে আমি ও আমার পরিবার উদ্বিগ্ন। তাই থানায় জিডি করেছি।
বুধবার বিকাল ৩টার দিকে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) বিষয়টি নিশ্চিত করে তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নির্বিচার পাখির মতো গুলি করা হয়: মামুনুল হক
ইসলামি জনতাকে বারবার বুলেটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেছেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নির্বিচার পাখির মতো গুলি করা হয়। ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনের কারণে আলেমদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ২০২৪ সালে জুলাই বিপ্লবে এ দেশে আপামর তৌহিদি জনতা, ছাত্রজনতা, কৃষক–শ্রমিক–মজুরদের হত্যা করে বাংলাদেশকে রক্তে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা শাখার আয়োজনে সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।
আগামীর বাংলাদেশ ইসলামের বাংলাদেশ হবে বলে দাবি করেন মামুনুল হক। তিনি জানান, বিগত সময়ে যারা ক্ষমতার মসনদে ছিল, তারা দেশের প্রতিনিধি নয়; বরং ভিনদেশি কৃতদাসী হিসেবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় নয়, ভিনদেশিদের স্বার্থ আদায় করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। দেশটাকে উজাড় করে সোনার বাংলাকে শ্মশান বানিয়ে মানুষের রক্ত ও জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে দেশটাকে গুমের রাজত্বে পরিণত করা হয়েছিল। বাংলাদেশটাকে মৃত্যুকূপে পরিণত করা হয়েছিল।
বিগত সরকারের আমলে ইসলামি নেতাদের বছরের পর বছর বিনা বিচারে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল অভিযোগ করে মামুনুল হক বলেন, জেল–জুলুম–হুলিয়া চালানো হয়েছিল, ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছিল। কারাগারে বিনা চিকিৎসায় আলেমদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল—১৫টি বছর ছিল আলেম–ওলামা তথা ইসলামপন্থীদের রক্ত দেওয়ার, ত্যাগ ও কোরবানির সময়। সব জুলুম–নির্যাতনের পর চব্বিশের বিপ্লব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চব্বিশের এ বিপ্লবে যারা বুক চিতিয়ে জীবন দিয়েছিল, তাদের সিংহভাগ ছিল আলেমসমাজ। জীবন ও রক্তের বিনিময়ে বিদেশি আধিপত্যমুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করা হয়েছে। নতুন করে আবার বিদেশি পরাজিত শক্তি অন্য কারও মাথার ওপর ভর করে বাংলার মানুষকে যদি জিঞ্জিরাবদ্ধ করতে চায়, তা বরদাশত করা হবে না।
ঐক্যবদ্ধ জনগণ যাদের প্রতিহত করেছে, তারা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা শপথ করছি, জীবন দিয়ে যেই ফ্যসিবাদ বিতাড়িত করেছি, সেই ফ্যাসিবাদ ভিন্নরূপে বাংলার ক্ষমতার মসনদে আসার পাঁয়তারা করলে আমরা রাজপথে লড়াই করে মোকাবিলা করব। নিজের বক্তব্যে চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি বন্ধ ও জুলাই সনদের আইনিভিত্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীকের পাশাপাশি গণভোটে হ্যাঁ ব্যালটে সিল দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ আবদুল লতিফের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমীন, নায়েবে আমির শাহ মুহাম্মদ সাঈদ নূর, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদী, ফুলবাড়িয়া আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী মুফতি আবদুল কাদের, জামায়াত মনেনানীত প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুল হাসানসহ খেলাফত মজলিসের অন্য নেতারা।
একই দিন বিকেলে ভালুকা সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশেও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মামুনুল হক।