ইউক্রেনে এবার পয়সা উশুল করতে চান ট্রাম্প
Published: 20th, February 2025 GMT
গত তিন বছরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে কোটি কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার সেই সহায়তার বিনিময় চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেছেন, ‘ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ এটা নিশ্চিত করবে যে এই অর্থের (ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সামরিক সহায়তার) কিছু অংশ হলেও আমরা ফেরত পেতে চলেছি।’
ট্রাম্প ওয়াশিংটনের সাহায্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের খনিজ ছাড় মঞ্জুর করার জন্য কিয়েভের ওপর চাপ দিচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুত ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে দেশটির সঙ্গে একটি সরল চুক্তিতে আসতে চাইছে। চুক্তির শর্ত নিয়ে হয়তো পরে বিস্তারিত আলোচনা হবে। যেমন ইউক্রেনের বিশাল খনিজ সম্পদের কতটুকু যুক্তরাষ্ট্র নেবে, সেটাও হয়তো পরে আলোচনা হবে। এ বিষয়ে জানেন, এমন দুই ব্যক্তি গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে একটি বিস্তারিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ওই প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছেন। ওই প্রস্তাবে গ্রাফাইট, ইউরেনিয়াম, টাইটানিয়াম, লিথিয়ামসহ ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ৫০ শতাংশ মালিকানা চেয়েছে ওয়াশিংটন।
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি তৈরির অন্যতম উপাদান লিথিয়াম।
যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রস্তাব জেলেনস্কি বাতিল করে দেওয়ায় এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি হতে সময় লাগবে। ওই দুই সূত্র এমনটাই বলেছেন।
কিন্তু ট্রাম্প আগে ইউক্রেনের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চাইছেন। কিয়েভকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও সামরিক সহায়তা পাঠানোর অনুমোদন দিতে বা ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে একটি আনুষ্ঠানিক শান্তি আলোচনা শুরুর আগেই ট্রাম্প এটা করতে চান।
এই সমঝোতা প্রস্তাবে রাজি হতে ইউক্রেন বিনিময়ে কী চায়, তা নিয়ে আলোচনার জন্য ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক দূত কেইথ কেলগ এ সপ্তাহেও কিয়েভে অবস্থান করছেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি আজ বৃহস্পতিবার কেইথ কেলগের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এই বৈঠক ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতা—সবই গঠনমূলক হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের কর্মকর্তারা যদি একটি চুক্তিতে উপনীত হতে চান, তবে জেলেনস্কিকে নিয়ে কী করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের এই ব্যক্তিকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
ট্রাম্পের এই উপদেষ্টা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
রয়টার্স থেকে এ বিষয়ে জানতে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থাকে সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুনজেলেনস্কি ‘স্বৈরশাসক’, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তাঁর দেশ থাকবে না: ট্রাম্প১৩ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্র একদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে চাইছে। অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির সম্পর্কের ফাটল দিন দিন বড় হচ্ছে।
ট্রাম্প গতকাল জেলেনস্কির সমালোচনা করে তাঁকে ‘নির্বাচন ছাড়া স্বৈরশাসক’ বলেছেন। এর আগে জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার ছড়ানো অপতথ্যের জগতে বাস করছেন।
আরও পড়ুনজেলেনস্কির ওপর কেউ শান্তিচুক্তি চাপিয়ে দেবে না: ট্রাম্পের দূত১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক