মডেল মাসুদের পক্ষে দেওভোগে ক্ষতিগ্রস্থ স্কুল পরিদর্শন করলেন মনির
Published: 10th, July 2025 GMT
দেওভোগ পাক্কারোড এলাকায় একটি বহুতল ভবনের পাইলিং কাজের কারণে ‘দেওভোগ সরকারী প্রাথমিক বালক বালিকা বিদ্যালয়’-এ শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এতে আতঙ্ক হয়ে পড়েন স্কুলটির শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা স্কুলটিতে পাঠদানের জন্য তাদের সন্তানদের পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে বর্তমানে স্কুলটিতে পাঠদান প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ছে।
এদিকে এ অবস্থায় স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন মডেল গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মনির হোসেন সরদার। মডেল গ্রুপের ব্যবস্থপনা পরিচালক মাসুদুজ্জামানের পক্ষে তিনি এ স্কুলটি পরিদর্শনে আসেন বলে জানাগেছে। এসময় তার সাথে ছিলেন, মডেল গ্রুপের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো: আল আমিন, মহানগর যুবদল নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি, জাকির হোসেন সেন্টু ও সরকার আলমসহ আরও অনেকে।
স্কুলটি পরিদর্শন শেষে মনির হোসেন সরদার সাংবাদিকদের জানান, স্কুলটির আশেপাশে বড় বড় ফাটল থাকলেও স্কুলের ভবনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তবুও আমরা একটি ভবনের জন্য চেষ্টা করবো।
এদিকে ইঞ্জিনিয়ার মো: আল আমিন প্রায় একই কথা বলেন। তিনি বলেন, পুরো স্কুল ভবনটি আমরা ঘুরে দেখেছি। ভবনে কোন ফাটল আমরা পাইনি। ভবনটি ঠিক আছে। তবে ভবনের আশে পাশে যে ফাটলগুলো আছে সেই ফাটগুলোকে বন্ধ করে কিছুদিন দেখা যেতে পারে ভবনটি হেলে যায় কি না? তবে তাদের কথায় আশ^স্ত হতে পারেননি অভিভাবকরা। তারা উপস্থিত সকলের সামনে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
অভিভাবকরা বলেন, বর্তমানে আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। এ স্কুলে আমাদের ছোট ছোট বাচ্চারা পড়াশোনা করে। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুব বেশি টেনশনে আছি। কারণ, যে কোন মহুর্তে ভবনটি ভেঙ্গে পড়তে পারে।
তারা ইঞ্জিনিয়ার আল আমিনকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, আপনি বলছেন ভবনটি ঠিক আছে। কিন্তু সরকারী ইঞ্জিনিয়ার এসে সব পরীক্ষা করে আমাদের বলে গেছে ভবনটি সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় আমরা কিছুতেই আমাদের বাচ্চাদের এ স্কুলে পাঠাতে পারি না।
অভিভাবকরা বলেন, আপনারা প্রয়োজনে এ স্কুলে পাঠদান বন্ধ রেখে অন্যত্র পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। কারণ, আমাদের বাচ্চাদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা শুনেছি, আমাদের পাশেই মর্গ্যাণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ রয়েছে। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বহু ভবণ অকার্যকর হয়ে পড়ে রয়েছে, এছাড়া চারুকলা কলেজেও এ স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আপনারা প্রয়োজনে তাদের সাথে কথা বলে আপাতত পাঠদান কার্যক্রম চলমান রাখতে পারেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব যবস থ আম দ র ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’