তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবিতে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে শক্তিশালী ও উদ্দীপনামূলক যুব সমাবেশ। ‘তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত শক্তিশালী করা প্রয়োজন’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার ঢাবির মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে সমাবেশের আয়োজন করে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্প)। এতে অংশ নেয় ঢাকা আহছানিয়া মিশন, নারী মৈত্রী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন।

সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিইউপি, ঢাকা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ও খিলগাঁও মডেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। তামাকমুক্ত ভবিষ্যতের জন্য তাদের সরব উচ্চারণ ছিল এ সমাবেশের প্রাণ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা.

আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেশে ৬৮% মানুষ অসংক্রামক রোগে মারা যায়, যার মধ্যে ৫১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী তামাক। ৩৫ বছরের নিচে তরুণদের মৃত্যুহারও ভয়াবহ। এখনই না জাগলে ভবিষ্যত হাতছাড়া হবে।’ তিনি প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. খালেদা ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন তামাকজনিত রোগে ৪৪২ জন মানুষ মারা যান। বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেন। পরোক্ষ ধূমপানে শিকার ৪২.৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ না হলে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচানো সম্ভব নয়।’

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক নাসরিন আক্তার ডলি বলেন, ‘এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫% প্রাথমিক শিক্ষার্থীর শরীরে উচ্চ মাত্রার নিকোটিন রয়েছে! আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত ধ্বংস হচ্ছে। তামাক কোম্পানির কৌশলের বিরুদ্ধে আইনে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

সমাবেশে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের ৪৯ শতাংশ যুবসমাজ তামাকে আক্রান্ত হলে দেশও অন্ধকারে যাবে। খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করতে হবে। একবার এই ফাঁদে পড়লে বের হওয়া কঠিন। তারা আইনের সংশোধনী পাসের জোর দাবি জানান।

ডর্প-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর জেবা আফরোজা মূল প্রবন্ধে ছয়টি জরুরি সংশোধনী তুলে ধরেন। সেগুলো হলো— ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা। বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ। তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ। ই-সিগারেট নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। খুচরা ও খোলা তামাক বিক্রি বন্ধ এবং স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৯০ শতাংশ করা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রেপ্তারকৃতদের তদন্তে মালয়েশিয়াকে সহায়তা করবে বাংলাদেশ

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৩৫ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ তদন্তে মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ। শুক্রবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন হাজি হাসানের সঙ্গে এক বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এ আশ্বাস দেন।

শুক্রবার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে তাঁরা এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তথ্য ও তদন্তের ফলাফল বিনিময়ের মাধ্যমে অভিযোগের অভ্যন্তরীণ তদন্তে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চান। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দেন।

এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। উভয়ই বাংলাদেশে চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, এলডিসি-পরবর্তী সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিথা হেরাথ এবং কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের উপমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদলের প্রধান পার্ক ইউনজুর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এ সময় দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

বাংলাদেশ ২০০৬ সালে এআরএফের সদস্য হয়। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ফোরামটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ