স্বপ্নার স্বপ্নপূরণ, খবর প্রকাশের পর পেলেন আধা পাকা বাড়ি
Published: 10th, April 2025 GMT
অন্যের বাড়িতে জন্ম স্বপ্না বেগমের। সন্তানদেরও জন্ম হয়েছে রাস্তার পাশে খাসজমির ঝুপড়ি ঘরে। নিজের নামে জমির দলিল ও আধপাকা একটি ঘর পেয়ে তাঁর যেন উচ্ছ্বাসের সীমা নেই। এত দিন খুলনার কয়রা উপজেলার আংটিহারা গ্রামের রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে শিশুসন্তানদের নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। এখন একই এলাকায় তাঁর ঠাঁই হয়েছে একটি আধপাকা ঘরে।
এমন আনন্দঘন মুহূর্তে নিজের সংগ্রামের কথা ভোলেননি স্বপ্না। গতকাল বুধবার সকালে সেগুলোই মনে করে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাঙা ঘরে কী যে কষ্টে ছিলাম! এ রহম পাকা বাড়ির কথা কখনো স্বপ্নেও দেখিনি। আপনারা যে উপকার করলেন, তা জীবনেও ভোলার নয়।’
আরও পড়ুন‘বাঁইচে থাকা যে কত কষ্টের, তা আমার মতোন আর কেউ বুঝবে না’২৯ নভেম্বর ২০২৪স্বপ্নার সংগ্রামের কথা তুলে ধরে গত ২৯ নভেম্বর ‘বাঁইচে থাকা যে কত কষ্টের, তা আমার মতন আর কেউ বুঝবে না’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেটি দেখেই তাঁকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। কয়রা উপজেলার আংটিহারা গ্রামের তিন কাঠা জমির ওপর তোলা হয় দুই কক্ষ, বারান্দাসহ একটি ঘর। এক সপ্তাহ আগে সেটি তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবু হাসান। তিনি জমি ক্রয় ও ঘরটি নির্মাণের সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করছিলেন।
স্বপ্নার জীবনে এই পরিবর্তনের আনন্দ ছড়িয়েছে প্রতিবেশীদের মধ্যেও। প্রতিবেশী দেবব্রত মণ্ডল বলেন, ‘ওদের এবার একটা থাকার ঘর হলো। এতে আমরাও ভীষণ খুশি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে আহত ২০
ঝিনাইদহ পৌর এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক কুকুর পথচারীদের আক্রমণ করে কামড় দেয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১৫ জন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানসহ অন্তত ১৫ জনকে হাসপাতালে টিকাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামদহ মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা দীপু মিয়া বলেন, ‘বিকেলে আমাদের এলাকায় এক পথচারীকে একটি পাগলা কুকুর কামড় দেয়। কুকুরটি কয়েকজন পথচারীকে কামড় দিয়েছে, এমনকি বাড়ির ভেতরে ঢুকে শিশুদেরও আক্রমণ করেছে। দীর্ঘদিন শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে টিকা দেওয়া হয় না। এখন শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু হামদহ মোল্লাপাড়াই নয়, শহরের বিভিন্ন জায়গায় পাগলা কুকুর মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে। সন্ধ্যায় সরকারি বালক বিদ্যালয়ের সামনে এক শিশুকে বাঁচাতে গেলে জামির নামে এক যুবক কুকুরের কামড়ে আহত হন। একইভাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ঢুকে শাহিনুর রহমান নামে এক কর্মকর্তাকে কামড় দেয় কুকুরটি। আর কাঠপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাকও কুকুরের কামড়ে আহত হন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এসএএও শাহিনুর রহমান বলেন, ‘অফিস শেষ করে গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল নিচ্ছিলাম। হঠাৎ গাড়ির নিচ থেকে একটি কুকুর দ্রুত আমার দিকে আসে। তাড়ানোর চেষ্টা করলে সেটি আমার পায়ে কামড়ে দেয়। পরে অনেক চেষ্টা করে কুকুরটিকে তাড়াতে পারি। পরে হাসপাতালে এসে টিকা নিয়েছি।’
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী বসাক বলেন, ‘ঝিনাইদহ শহর থেকে ফিরে সড়ক ভবনসংলগ্ন কাঠপট্টি এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমার ডান হাতে কামড় দেয়। এখন হাতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা করছে। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।’
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ছোয়া ইসরাইল বলেন, কুকুরে কামড়ানো রোগীদের টিকাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত।
ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পৌর এলাকার বেওয়ারিশ কুকুরদের ধরে টিকা দেওয়া হতো। করোনার সময় থেকে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে কী করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।