অন্যের বাড়িতে জন্ম স্বপ্না বেগমের। সন্তানদেরও জন্ম হয়েছে রাস্তার পাশে খাসজমির ঝুপড়ি ঘরে। নিজের নামে জমির দলিল ও আধপাকা একটি ঘর পেয়ে তাঁর যেন উচ্ছ্বাসের সীমা নেই। এত দিন খুলনার কয়রা উপজেলার আংটিহারা গ্রামের রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে শিশুসন্তানদের নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। এখন একই এলাকায় তাঁর ঠাঁই হয়েছে একটি আধপাকা ঘরে।

এমন আনন্দঘন মুহূর্তে নিজের সংগ্রামের কথা ভোলেননি স্বপ্না। গতকাল বুধবার সকালে সেগুলোই মনে করে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাঙা ঘরে কী যে কষ্টে ছিলাম! এ রহম পাকা বাড়ির কথা কখনো স্বপ্নেও দেখিনি। আপনারা যে উপকার করলেন, তা জীবনেও ভোলার নয়।’

আরও পড়ুন‘বাঁইচে থাকা যে কত কষ্টের, তা আমার মতোন আর কেউ বুঝবে না’২৯ নভেম্বর ২০২৪

স্বপ্নার সংগ্রামের কথা তুলে ধরে গত ২৯ নভেম্বর ‘বাঁইচে থাকা যে কত কষ্টের, তা আমার মতন আর কেউ বুঝবে না’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেটি দেখেই তাঁকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। কয়রা উপজেলার আংটিহারা গ্রামের তিন কাঠা জমির ওপর তোলা হয় দুই কক্ষ, বারান্দাসহ একটি ঘর। এক সপ্তাহ আগে সেটি তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবু হাসান। তিনি জমি ক্রয় ও ঘরটি নির্মাণের সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করছিলেন।

স্বপ্নার জীবনে এই পরিবর্তনের আনন্দ ছড়িয়েছে প্রতিবেশীদের মধ্যেও। প্রতিবেশী দেবব্রত মণ্ডল বলেন, ‘ওদের এবার একটা থাকার ঘর হলো। এতে আমরাও ভীষণ খুশি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি সই

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলার পর দেশ দুটি একটি চুক্তিতে সই করেছে। এর ফলে ওয়াশিংটন কিয়েভের মূল্যবান দুর্লভ খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার পাবে ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে তার পুনর্গঠনে তহবিল জোগান দেবে।

গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ চুক্তি সই হয়। এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে জোর দরকষাকষি করে দুই দেশ। চুক্তি সই হওয়ার ব্যাপারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কিছু অনিশ্চয়তা থাকলেও অবশেষে এটি সম্পন্ন হয়।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।

চুক্তি সইয়ের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল’ প্রতিষ্ঠা রাশিয়ার প্রতি একটি বার্তা যে, ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘমেয়াদে এক স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ ইউক্রেন গড়ার শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ চুক্তি একটি অগ্রগতি নির্দেশ করছে। গত মার্চে হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বৈঠকের পর এ সম্পর্ক তলানিতে নেমেছিল।

স্কট বেসেন্ট আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার এ ভাবনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের; যা একটি টেকসই শান্তি ও সমৃদ্ধ ইউক্রেনের প্রতি উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত করে।’

‘স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না’, বলেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।

ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।

ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইউক্রেন পুনর্গঠন তহবিলে’ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি বা সামরিক সহায়তার মাধ্যমে অবদান রাখবে এবং কিয়েভ তার প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে পাওয়া রাজস্বের ৫০ শতাংশ তহবিলে দেবে।

স্পষ্ট করে বলতে গেলে, রাশিয়ার যুদ্ধচেষ্টায় অর্থ বা অন্যান্য সহায়তাদানকারী কোনো রাষ্ট্র বা ব্যক্তিকে ইউক্রেনের পুনর্গঠন থেকে উপকৃত হতে দেওয়া হবে না।স্কট বেসেন্ট, মার্কিন অর্থমন্ত্রী

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তহবিলের সম্পূর্ণ অর্থ প্রথম ১০ বছর শুধু ইউক্রেনে বিনিয়োগ করা হবে, এরপর ‘লাভ অংশীদারদের মধ্যে বণ্টন করা হতে পারে’। তহবিলে দুপক্ষের সমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকবে। এ চুক্তি শুধু ভবিষ্যতের মার্কিন সামরিক সহায়তায় নজর দেব, অতীতের সহায়তা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।

ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিরিদেনকো বলেন, ‘আমরা শুধু বিনিয়োগই পেতে যাচ্ছি না; বরং এমন একটি কৌশলগত অংশীদারকেও পাচ্ছি, যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উদ্ভাবনে সহায়তা করতে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার ফাঁকে এক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল ভ্যাটিকান সিটিতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ