কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ থাকা ভারতের আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটও চালু হয়েছে। ফলে দুই ইউনিট থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতায় ফিরে এসেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আদানি গ্রুপ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধা ৭টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে প্রায় ৭৩৯ মেগাওয়াট, অপর ইউনিট থেকে ৬৩৭ মেগাওয়াটসহ মোট ১৩৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। 

ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট রয়েছে। এই কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে ১৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল। কারিগরি ত্রুটির কারণে গত ৮ এপ্রিল একটি ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে অপর ইউনিট থেকে দৈনিক ৭৫০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে থাকে আদানি। তবে একই কারণে এই ইউনিটও শুক্রবার রাত ১ টার দিকে অচল হয়ে গেলে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম ইউনিট উৎপাদনে ফেরে। 

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় আদানির সঙ্গে ২০১৭ সালে ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব দ য ৎ সরবর হ ইউন ট থ ক

এছাড়াও পড়ুন:

ভরা মৌসুমেও ইলিশ সরবরাহ কম, দাম লাগামহীন

চাঁদপুর থেকে বরগুনা, বরিশাল থেকে পটুয়াখালীর মোকাম– সর্বত্রই এখন ইলিশের দাম নাগালের বাইরে। ভরা মৌসুমেও সরবরাহ কম। এদিকে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন বেশি। এমন প্রেক্ষাপটে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে এবার ইলিশের দামের লাগাম টানার সরকারি চেষ্টা শুরু হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দাম নির্ধারণের প্রস্তাবটিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুমোদন নিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

গত ২৬ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস আদেশে জানানো হয়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের একটি প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি ইলিশের মূল্য নির্ধারণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে অনুমোদন দিয়েছেন। একই সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন গত মাসের শেষ দিকে চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রিসভা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের জানান, চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অস্বাভাবিক দাম হাঁকাচ্ছেন। এতে সাধারণ ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ইলিশ। শুধু চাঁদপুর নয়, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সাগর ও নদীবেষ্টিত জেলাগুলোর ব্যবসায়ীরাও এ সিন্ডিকেটে যুক্ত। 

১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে ইলিশের ভরা মৌসুম। জুলাই থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ইলিশ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনে কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকে না। অথচ মৌসুমের প্রথম দিনই বড় ধরনের হতাশা নিয়ে এসেছে ভোক্তা ও জেলেদের জন্য।

বরিশালের অন্যতম বড় ইলিশ মোকাম পোর্ট রোডে গতকাল মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, স্বল্পসংখ্যক ইলিশ এসেছে। সেখানকার আড়তদাররা জানাচ্ছেন, বড় আকারের ইলিশের প্রতি কেজির দাম ২ হাজার ৩৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। খুচরায় সেই দাম ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় পৌঁছাচ্ছে। এমনকি এক কেজির ওপরে ইলিশ ৪ হাজার টাকায় বিক্রির তথ্যও পাওয়া গেছে।
বরিশালের হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, বর্ষার এই সময় ইলিশের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। বৃষ্টি ও জোয়ার থাকলেও ঘাটে ইলিশের সরবরাহ কম। এ সময়ের তুলনায় আগের বছর অনেক বেশি ইলিশ উঠেছিল বলে জানান তিনি।
বরগুনার পাথরঘাটা, পটুয়াখালীর মহিপুর-আলীপুর, ভোলার চরফ্যাসন, এমনকি চাঁদপুরের সদরের বাজারেও একই ছবি। আড়তে ইলিশ আসছে খুব কম, যেটুকু আসছে তার দাম অস্বাভাবিক বেশি। পাথরঘাটার বিএফডিসির ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার মাসুদ সিকদার জানান, মঙ্গলবার মাত্র ৫৫৬ কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে। এক কেজি ওজনের মাছের দর ছিল ৩ হাজার টাকা।
আড়তদাররা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ট্রলার সাগরে যেতে পারছে না। জেলেরা নদীতে যেতে পারছেন সীমিত আকারে। অন্যদিকে গত বছর নদীতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে জাটকা নিধনের কারণে এবার উৎপাদনেও ধাক্কা লেগেছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো. আলফাজ উদ্দিন শেখ বলেন, ইলিশ সাধারণত ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে নদীতে আসে। জুলাই থেকে বেশি পরিমাণে ইলিশ নদীতে আসে বলেই তখন ভরা মৌসুম ধরা হয়। তবে এবার তুলনামূলক ইলিশ কম ধরা পড়তে পারে। এর সঙ্গে বাজারের চাহিদা, পরিবহন ব্যয় এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিও যুক্ত।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন মন্ত্রিসভা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠিতে প্রস্তাব করেছেন, ইলিশের মূল্য নির্ধারণে কোনো নির্দিষ্ট জেলার প্রশাসন নয়, বরং সমন্বিতভাবে জাতীয় উদ্যোগ নিতে হবে। নদী ও সাগরে আহরণ ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে যুক্তিসঙ্গত মূল্য নির্ধারণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে মূল্যসীমা নির্ধারণ করতে পারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ইলিশ বাজারে স্বস্তি ফিরতে পারে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হলেও এখন দেশের সবচেয়ে দামি মাছ ইলিশ। অথচ যাদের ঘামঝরা পরিশ্রমে মাছ ধরা হয়, সেই জেলেরা পান সামান্য দাম। মাঝখানে মুনাফার লুটছে সিন্ডিকেট। সময় হয়েছে ইলিশের বিষয়ে কার্যকর নীতি গ্রহণ ও নজরদারি বাড়ানোর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা বন্ধে রুশ আগ্রাসন বাড়ার শঙ্কা
  • ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নূরুল হুদার বিরুদ্ধে
  • গাজা উপত্যকার ৮৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে: জাতিসংঘ
  • গ্যাসের অপেক্ষা আর শেষ হয় না
  • মার্কিন অস্ত্র সহায়তা স্থগিতে রুশ হামলা জোরদারের শঙ্কায় ইউক্রেন
  • দাম বাড়ানোর পরও গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহ কৃষকের
  • চীনকে মোকাবিলায় পরীক্ষার মুখে কোয়াডের ঐক্য
  • ৪০টি চৌকি আদালতে ৭১টি ডেস্কটপ কম্পিউটার সরবরাহ
  • বৃহস্পতিবার ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
  • ভরা মৌসুমেও ইলিশ সরবরাহ কম, দাম লাগামহীন