ধর্ম উপদেষ্টা আল্লামা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। সকল রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছে। আমরাও একটি রোডম্যাপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। জনগণের চাহিদা যেদিকে হবে সরকার সেটি বিবেচনায় নিবেন।” 

রবিবার (২০ এপ্রিল) রাতে রাঙামাটি সরকারি কলেজ মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম ওলামা পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সীরাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশে কোনও সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় না, যা হয় তা রাজনৈতিক কারণে। বিশে^র অন্যান্য দেশের তুলনায় এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেক ভালো আছেন।” 

সম্প্রতি নারী সংস্কার কমিশন বাতিল চেয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির আল্লামা মামুনুল হকের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “এই প্রতিবেদন ছাপিয়ে জনগণের কাছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা একটি সংস্কার করলাম সেটি জনগণ গ্রহণ না করলে সেটি বাস্তবায়ন হবে না। যেগুলো গ্রহণযোগ্য সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। যদি সংশোধন করা লাগে সরকার সেটি সংশোধন করবে। যে সমস্ত ধারাগুলো ইচ্ছা অভিপ্রায়ের পরিপন্থি সেগুলো সরকার বিবেচনা করবে।” 
 
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বান্দরবানের থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় স্থানীয়দের সাথে জলকেলিতে আরাকান আর্মির পোশাক পরিহিত ভাইরাল ছবি ও ভিডিও বিষয়ে জানতে চাইতে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “এটা বাংলাদেশ সরকার ও সীমান্ত  রক্ষাকারী বাহিনীর নলেজে আছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনিটরিং করছে, যখনি যেটা প্রয়োজন সেটা করা হবে।”

ঢাকা/শংকর/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োজন

সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরাপদ ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় ও নিরপেক্ষ ভূমিকা অত্যাবশ্যক। সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা, পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বিত নিরাপত্তাব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও সহিংসতা প্রতিরোধ সম্ভব। সরকার এসব প্রস্তুতি নিলে নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা বাড়বে। ভোট সুষ্ঠু হবে। দেশ স্থিতিশীল থাকবে।

‘নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতকরণে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা: সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ কথাগুলো বলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তন কক্ষে এই সেমিনার হয়। সেমিনারের আয়োজক এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।

সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. রোকন উদ্দিন বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ভোট কারচুপি ও সহিংসতায় দলীয় প্রশাসনই মূল ভূমিকা রাখে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মাঠে নামানো জরুরি। এ ছাড়া দেশে এখনো বিপুল অবৈধ অস্ত্র ছড়িয়ে আছে, যা উদ্ধার না হলে নির্বাচনের আগে সহিংসতা বাড়বে। দীর্ঘদিন মাঠে থাকার ফলে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, পারিবারিক জীবন ও মনোবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ ও স্পষ্ট হওয়া উচিত। সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বিদেশি প্রভাব ও ভুয়া প্রচারণা জনগণ-সেনাবাহিনীর সম্পর্ক দুর্বল করতে চায়।

রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় কোন্দল, দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন এবং পুরোনো ধরনের রাজনীতি পরিত্যাগ না করলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না বলে মন্তব্য করেন রোকন উদ্দিন।

সেমিনারে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করতে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। সরকার নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। আদৌ নির্বাচন হবে কি না, সেই প্রশ্নও জনগণের মনে তৈরি হচ্ছে। তাই সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীকে জনগণের পাশে থাকতে হবে। তাহলে ফ্যাসিবাদমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।

অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল থাকলে একতরফা বা রাতের ভোট সম্ভব হতো না বলে মন্তব্য করেন রাশেদ খান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেই ব্যবস্থাকে বাতিল করে দেশকে ফ্যাসিবাদের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল।

আগামী নির্বাচন বানচালের জন্য বিদেশি প্রভাব ও নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কিছু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থিতার আড়ালে চক্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেন সেমিনারে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এসব প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মিলিত ভূমিকা নিতে হবে। নিষিদ্ধ বা বিতর্কিত রাজনৈতিক শক্তিগুলো নির্বাচনে অংশ নিলে অরাজকতা বাড়বে। তাই নির্বাচন কমিশনকে কঠোর থাকতে হবে। জনগণকে সচেতনভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে হবে।

বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির সদস্যসচিব ফাতিমা তাসনীম বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর তরুণসহ সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নতুন সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ধরে রাখতে সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি। বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ভোট দখলের শঙ্কা রয়েছে। তাই সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে ভোটের পাঁচ-সাত দিন আগে থেকেই টহলে নামানো দরকার। সব হটস্পটে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। যাতে নারী, বয়স্ক ও নতুন ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত হয়।

সেমিনারে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান। তিনি বলেন, অ্যাসোসিয়েশন আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার ন্যায়সংগত ও জিরো টলারেন্স প্রয়োগের প্রত্যাশা করে। তারা মনে করে, উপমহাদেশে সহিংসতা, পেশিশক্তি ও প্রশাসনিক পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশেই বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রেখে পেশাদার ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে।সংগঠনটি আশা প্রকাশ করেছে, প্রযুক্তিনির্ভর তদারকি—যেমন ড্রোন মনিটরিং, বডি-ওন ক্যামেরা ও লাইভ বিশ্লেষণ নির্বাচনকে আরও স্বচ্ছ করবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও প্রশাসনের সমন্বিত কমান্ড স্ট্রাকচার দ্রুত প্রতিক্রিয়াসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যা একটি শান্তিপূর্ণ ও আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন উপহার দিতে সহায়ক হবে।

অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মুশফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের সভাপতি বাপ্পী সরকার। সেমিনারে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব জনগণ : মাসুদুজ্জামান
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: খেলাফত মজলিস
  • কথায় নয়, কাজে প্রমাণ দেব: সাতক্ষীরার ডিসি
  • নাশকতাকারীদের ঢাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে: ডিএমপি কমিশনার
  • শঙ্কা ও ভীতি দূর না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়  
  • জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়, জনগণের জীবন বদলানোর বেলায় নেই
  • সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োজন
  • গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পাস করলে কী হবে, ‘না’ পাস করলে কী হবে
  • যশোরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা: রিজভী