কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পরীক্ষা দিতে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে তিন ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাকুন্দিয়ার চরটেকী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ছাত্রীরা হলো উপজেলার চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ফারিয়া জান্নাত (১৪), বাদল মিয়ার মেয়ে আদ্রিতা ইসলাম (১৪) ও বোরহান উদ্দিনের মেয়ে হিমা আক্তার (১৫)। তারা চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণিতে পড়ত।

চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল হক জানান, আজ স্কুলে বাংলা বিষয়ের প্রথম পত্রের শ্রেণি মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে ওই তিন ছাত্রী বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাতের কবলে পড়ে তারা। একপর্যায়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ফারিয়া ও আদ্রিতা মারা যায়। আর গুরুতর আহত হয় হিমা। পরে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে হিমারও মৃত্যু হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নূরে–আলম খান বলেন, ফারিয়া ও আদ্রিতাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এ সময় আহত অবস্থায় হিমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে তার মৃত্যু হয়।

তিন ছাত্রীর এমন মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে দাফনের জন্য নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত

এদিকে জেলার হাওর–অধ্যুষিত মিঠামইন উপজেলায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে কটু মিয়া (৪০) নামের এক কৃষক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

কটু মিয়া চমকপুর গ্রামের মৃত আবদুল মোতালিবের ছেলে। প্রতিবেশী শহিদুজ্জামান শুভ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কটু মিয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির পাশে হাওরে গরু আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরানে রুদ্ধশ্বাস ৪ দিনের অভিজ্ঞতা শোনালেন বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থী

বিকট শব্দ শুনে ঘুমটা ভেঙে গেল। কিসের শব্দ বুঝতে পারলাম না। মুঠোফোনে দেখি, রাত সাড়ে তিনটা। একটু আগে ফজরের আজান হয়েছে, তেহরানে এ সময় ফজরের আজান হয়ে যায়। হোস্টেলের অন্য কক্ষগুলোয় অনেকে উঠেও গেছে। এর মধ্যেই আবার কানফাটানো আওয়াজ। এ কি মেঘের গর্জন? বারান্দায় গিয়ে দেখি, আকাশ পরিষ্কার, একবিন্দু মেঘও নেই। তাহলে কিসের শব্দ?

ততক্ষণে হইচই, চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেছে। চারতলার বারান্দা থেকে নিচে তাকিয়ে দেখি, অনেকেই মাঠে বেরিয়ে এসেছেন। তখনই তৃতীয়বারের মতো আবার শব্দ। এবার পরিষ্কার; এটা বিস্ফোরণের শব্দ। দূরে তাকিয়ে দেখি, আগুন জ্বলছে। যে এলাকায় আগুন জ্বলছে, সেটা আবাসিক এলাকা। অনেকটা আমাদের গুলশানের মতো ভিআইপি এলাকা। সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ নানা পেশার শীর্ষ পদের মানুষদের বসবাস। দিনের আলো পরিষ্কার হওয়ার পর সেখান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেল।

এর মধ্যে চারতলা থেকে নিচে নেমে এসেছি। হোস্টেলের লোকজন বললেন, ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকেও পরে ইসরায়েলি হামলার কথা জানানো হলো। সেই ভোরে কেউ আর ঘুমাতে পারলাম না।

ইরানে ইসরায়েলি হামলার খবর আমাদের রাজশাহীর বাড়িতেও পৌঁছে গেছে। তটস্থ হয়ে কল দিলেন মা, তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ। সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় তেহরানের তিন নম্বর অঞ্চলে। এখানে রাষ্ট্রীয় টিভি স্টেশন, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আছে। হোস্টেলের পাশেই কোরীয় দূতাবাস। তাই এখানে হামলার আশঙ্কা নেই।

১৩ জুন দিনটা এভাবেই শুরু হলো।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে তেহরানের একটি তেল শোধনাগার, ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ