আম উৎপাদন ও বিপণন নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার চাষি, উদ্যোক্তা ও গবেষকদের নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রথম আম সম্মেলন। গতকাল মঙ্গলবার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ক্লাব স্টেডিয়ামে এ আয়োজন করে ম্যাংগো ডেভেলপমেন্ট ফোরাম। দিনব্যাপী সম্মেলনে দেশের ৪৪ জেলার প্রায় ৩৫০ জন আমচাষি ও উদ্যোক্তা অংশ নেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তৌফিক আজিজের সভাপতিত্বে সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ। সম্মেলনে বক্তারা আম উৎপাদন ও বিপণনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিমুখী জোন চিহ্নিতকরণ, প্রশিক্ষিত রপ্তানিকারক তৈরি, আধুনিক প্যাকিং হাউস স্থাপন এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ আম পরিবহন, ওজন পদ্ধতি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা চাষিদের কাছে শোনেন এবং তা নিরসনে উদ্যোগের কথা জানান।
ঢাকার উত্তরা থেকে সম্মেলনে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তা সাইয়েদুল বাশার বলেন, তিনি অনলাইনে আম কেনাবেচার উদ্যোগ নেন তিন বছর আগে। এ সম্মেলনে এসে স্থানীয় বেশকিছু আমচাষির সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন জাতের আম সম্পর্কে জানতে পেরে খুশি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিরা আমের দাম নিয়ে হতাশ। রপ্তানিতেও আছে নানা বাধা। এসব সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড.
সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক শহীদুল হক হায়দারী শহিদ মিয়া বলেন, আম উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও রপ্তানিতে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও এর সমাধান পেতে এবং সারা দেশের আম উদ্যোক্তাদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধ তৈরি করতেই আজকের সম্মেলন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ প ইনব বগঞ জ র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে। এতে নারীর নিরাপত্তা, আবাসন, গবেষণা, আধুনিকায়ন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অধিকারসহ নানা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে লিচুতলায় এ ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ)। ইশতেহারে সাতটি বিষয়কে ‘হ্যাঁ’ ও সাতটি বিষয়কে ‘না’ হিসেবে উল্লেখ করেছে প্যানেলটি। এ ছাড়া তারা ছাত্র সংসদের মেয়াদের ১২ মাসে ২৪টি সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ইশতেহারে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ, আবাসনসংকট নিরসন, মানসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ ক্যাম্পাস, তথ্যসেবা ও আধুনিকায়ন, সব অংশীজনের মধ্যে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণকে ‘হ্যাঁ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে ৫০ টাকা হল ফি; হল দখল ও আসন–বাণিজ্য; ট্যাগিং ও ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি; স্লাটশেমিং, সাইবার বুলিং ও শারীরিক নির্যাতন; ধর্মবিদ্বেষ; মাদক ও ছিনতাই এবং সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে ইশতেহারে ‘না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের দেওয়া ২৪টি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি হলো জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে রাকসু নির্বাচনকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্তকরণ, জুলাইয়ের হামলাকারীদের বিচার, জাদুঘর স্থাপন ও ১৬ জুলাইকে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা করা; ক্যাম্পাসে মানসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা প্রদানে ডাইনিং, ক্যানটিনসহ অন্যান্য জায়গায় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা ও মূল্য নির্ধারণ করা।
অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অধিকার সংরক্ষণে শতভাগ আবাসিকতার রোডম্যাপ ঘোষণা এবং এর আগপর্যন্ত আবাসন ভর্তুকি দেওয়া; শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বারোপ করতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণা বৃত্তি দেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো; লাইব্রেরি ও রিডিং রুম সম্প্রসারণ ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার শীতাতপনিয়ন্ত্রণে আনা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ অন্যান্য আধুনিক সুবিধা নিশ্চিত করা; শিক্ষা কারিকুলাম আন্তর্জাতিকীকরণে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এমওইউ চুক্তি করা ও শিক্ষক বিনিময় প্রথা চালু করা।
প্রশাসনিক কার্যক্রম আধুনিকায়নে একটি অ্যাপের মাধ্যমে সব সুবিধা নিশ্চিত করা এবং টিএসসিসি ও মিলনায়তনের ভাড়া শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে আনা; চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে ২০ শয্যাবিশিষ্ট করা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া; নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট–সেবা দেওয়া; ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ও আলোকবাতির ব্যবস্থা করা।
পরিবহনব্যবস্থা উন্নত করতে ক্যাম্পাসের ভেতরে চলাচলকারী গাড়ির নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা এবং বাসের ট্রিপ বাড়ানো; নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক হেল্পলাইনের আওতায় আনা, ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশনে হিজাব-নিকাব ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিত করা এবং ‘চাইল্ড ডে–কেয়ার’ স্থাপনসহ বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করা; শিক্ষক মূল্যায়নব্যবস্থা চালু করা; তথ্যসেবা নিশ্চিতকরণে একটি অ্যাপ চালু করা এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স চালু করা; শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন অন ক্যম্পাস জব নিশ্চিত করা; পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন করা।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় লিফট, ব্রেইল পদ্ধতি, অডিও বুক, বিশেষ বাথরুম–সুবিধা ও নানা প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় উপাসনালয় ও ধর্মীয় উৎসবে নিরাপত্তা বাড়ানো; সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বাড়াতে হামদ, নাত, কাওয়ালি ইসলামি দর্শনভিত্তিক নানা আয়োজন করা এবং এর সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা; স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া; ক্রীড়া উন্নয়নে বাজেট বাড়ানো ও ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট সুবিধার বৃহৎ সংস্কার করা। সাহিত্য, প্রকাশনা ও সামাজিক সংগঠনের উন্নয়নে বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করা; পরিচ্ছন্ন ও সবুজ ক্যাম্পাসের জন্য প্রকৃতি রক্ষা কমিটির মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া; অপরাধ দমনে অনলাইন-অফলাইনে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া এবং দলীয় শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা।
ইশতেহার ঘোষণা শেষে প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘এটি আকাশকুসুম কোনো প্রস্তাব নয়। আমরা এ সংস্কার বাস্তবায়ন করব। এ ছাড়া জবাবদিহির জন্য আমরা চার্ট টাঙানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সেখানে কোন কাজ কতটুকু হলো, তা উল্লেখ করা থাকবে।’