শিক্ষা ও দক্ষতায় বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশের কর প্রশাসনের আধুনিকায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সম্পৃক্ততা ‘আরও গভীর’ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 

বৃহস্পতিবার ইতালির মিলানে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এমন প্রস্তাব দেন তিনি। অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এডিবির ৫৮তম বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে এ বৈঠক হওয়ার কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টা ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা তুলে ধরে কিছু ক্ষেত্রে এডিবির সম্পৃক্ততা আরও গভীর করার প্রস্তাব দেন। যার মধ্যে রয়েছে- সমন্বিত নদী ব্যবস্থাপনা, কর প্রশাসনের আধুনিকায়ন ও ভবিষ্যতের জন্য উপযোগী শিক্ষা ও দক্ষতায় বিনিয়োগ।

এতে আরও বলা হয়, সালেহউদ্দিন আহমেদ জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলবায়ু সহনশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এডিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে এডিবির মোট ঋণ ৩ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এসেছে ২৯৪ কোটি ডলার। যা উভয় পক্ষের দৃঢ় সহযোগিতার প্রতিফলন।

বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় থাকায় অর্থ উপদেষ্টা এডিবির সহায়তা যেন দেশের পরিবর্তনশীল উন্নয়ন চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়- এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এই রূপান্তরের মুহূর্তটি একটি ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন ও সংস্কার ভিত্তিক সরকারের নেতৃত্বে রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গেও চিহ্নিত। এই প্রেক্ষাপটে তিনি শাসনব্যবস্থা, স্বচ্ছতা ও জনসেবার মানোন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে বাংলাদেশের সাহসী সংস্কার কর্মসূচিতে এডিবিকে সমর্থনের আহ্বান জানান।

অর্থ উপদেষ্টা টেকসই নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে এডিবির জরুরি সহায়তার বিষয়টিও তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে স্মার্ট ও জলবায়ু সহনশীল শহর, উন্নত পৌর সেবা এবং আঞ্চলিক নগর অবকাঠামো। জ্বালানি খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন এবং আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে এডিবির সহায়তাও চান তিনি।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন গতিধারা অব্যাহত রাখতে এডিবির বর্ধিত রেয়াতি সহায়তা শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, বরং এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, কার্যকর জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য কৌশলগত বিনিয়োগ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এডিবির প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সহনশীলতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শুরু থেকেই এডিবি বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বছর এডিবির বার্ষিক সভায় যেসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন মাসাতো কান্দা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন নয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে নিরাপত্তারক্ষী ও শ্রমিকদের জিম্মি করে হিমাগারে ডাকাতি

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় একটি হিমাগারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ‘দেশ কোল্ডস্টোর’ নামের ওই হিমাগারে ঢুকে নিরাপত্তারক্ষী ও শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে বেঁধে রেখে ডাকাতি করে দুর্বৃত্তরা।

হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, ডাকাত দল মুখ ঢেকে ও পায়ে জুতা ছাড়া হিমাগারে প্রবেশ করে। প্রথমে নিরাপত্তারক্ষীদের ও পরে হিমাগারে থাকা শ্রমিকসহ ২৫ জনকে হাত-পা বেঁধে ফেলে। ভোর চারটা পর্যন্ত তারা হিমাগারে অবস্থান করে। এ সময় হিমাগারের পাওয়ার হাউস, প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্ষিত যন্ত্রাংশ ও ধাতবসামগ্রী লুট করে ডাকাতেরা। লুট করা হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ভাঙচুর করা হয় অফিস কক্ষ ও আলমারি।

দেশ কোল্ডস্টোরের ব্যবস্থাপক আকবর আলী বলেন, ভোরে এক শ্রমিক কৌশলে বাঁধন খুলে মিলের হুইসেল বাজিয়ে অন্যদের মুক্ত করেন। পরে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। তিনি আরও বলেন, অনেক যন্ত্রাংশ লুট করা হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই বিদেশি। মূল্য নির্ধারণ এখনো হয়নি। মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। তবে তার আগে হিমাগারটি সচল করাই জরুরি। কারণ, ভেতরে প্রচুর কাঁচামাল রয়েছে।

মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, একটি ঘরে শ্রমিকদের বেঁধে রেখে বৈদ্যুতিক তারসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ জানা যাবে।

শ্রমিকদের বরাত দিয়ে আকবর আলী জানান, রাতে মোট ২৫ জন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। ডাকাত দলের ভাষা স্থানীয় ছিল না। তাদের কাছে পিস্তল, রামদা, হাঁসুয়া ছিল। হিমাগারে ১ লাখ ৭৭ হাজার বস্তা আলু আছে। এগুলো রক্ষা করতে হিমাগার চালু করা দরকার। তাঁরা দ্রুত হিমাগার চালুর ব্যাপারে কাজ করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ