নাসা গ্রুপের নজরুলকে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ
Published: 5th, November 2025 GMT
জুলাই গণ-অভুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবু বকর রিফাত হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান আজ বুধবার শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন বলেন, যাত্রাবাড়ী থানার মামলাটিতে নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখাতে গত ২৬ অক্টোবর আবেদন করা হয়। যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল রানা আবেদনটি করেন। নজরুলের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। শুনানির জন্য আজ নজরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত।
দেখা যায়, নজরুলকে আজ সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। পরে তাঁকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরানো হয়। দুই হাত সামনে নিয়ে পরানো হয় হাতকড়া। এরপর তাঁকে আদালতের কক্ষে নেওয়া হয়। কাঠগড়ায় তোলার সময় তাঁর মাথা থেকে হেলমেট ও শরীর থেকে জ্যাকেট খোলা হয়। কাঠগড়ার মাঝামাঝি অংশে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর কোমরে বাঁ হাত দেন।
তখন নজরুলের আইনজীবী জানতে চান, তাঁর টুল লাগবে কি না। তিনি সম্মতি দিলে তাঁর আইনজীবী পুলিশের কাছে টুল চান।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বলেন, আদালতের কাছে চাইতে হবে। কিছুক্ষণ পর এজলাসে আসেন বিচারক। আসামিপক্ষের আইনজীবী টুল চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন জানান। বিচারক শুনানি শুরু করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন তুলে ধরেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নেই। তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ জমা দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হলে তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।
শুনানি নিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এ সময় নজরুলকে বিষণ্ন দেখা যায়। পরে তাঁকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন আবু বকর রিফাত। সেদিন দুপুরের দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এই ঘটনায় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির বাবা আওলাদ হোসেন।
গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাঁর রিমান্ড হয়েছে। তিনি কাশিমপুর কারাগারে আছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র আইনজ ব ব চ রক নজর ল
এছাড়াও পড়ুন:
তিন মামলায় সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিনের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি পেছাল
হত্যাসহ পৃথক তিন মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে। সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক নট টুডে (আজ নয়) রাখেন।
গত বছরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও মারাত্মক জখম করার অভিযোগসহ পৃথক পাঁচ মামলায় গতকাল রোববার হাইকোর্ট থেকে জামিন পান কারাগারে থাকা সেলিনা হায়াৎ আইভী। পাঁচ মামলার মধ্যে হত্যার অভিযোগে তিনটি ও মারাত্মক জখমের অভিযোগ করা দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে তিন মামলায় জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। আইভীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন ও আইনজীবী এস এম হৃদয় রহমান।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা (আইভীর আইনজীবী) সময় নিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানি হবে।
আইভীর অন্যতম আইনজীবী এস এম হৃদয় রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচটি মামলায় হাইকোর্ট আইভীকে জামিন দিয়েছেন। এর মধ্যে চার মামলায় জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক আবেদন হাতে পেয়েছেন। তিন মামলায় জামিনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি আবেদন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ছিল। আদালত নট টুডে (আজ সোমবার নয়) রেখেছেন।
গত ৯ মে ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগের নিজ বাসা থেকে আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় হওয়া তিনটি হত্যা, দুটি হত্যাচেষ্টা মামলাসহ পৃথক পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন আইভী। পরে নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তিনটি নির্বাচনে টানা জয়ী হন তিনি।