‘সময় হয়ে গেছে’, রিয়াল ছাড়ার ঘোষণায় মডরিচ
Published: 22nd, May 2025 GMT
রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন লুকা মডরিচ। শনিবার রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লস ব্লাঙ্কোসদের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলবেন তিনি। রিয়াল মাদ্রিদ তাকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বিদায়ী সংবর্ধনা দেবে। লুকা মডরিচ এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, তার বিদায় বলার সময় হয়ে গেছে।
লুকা মডরিচকে নিয়ে দুই রকমের গুঞ্জন ছিল। রিয়াল মাদ্রিদে তার আরও এক মৌসুম চুক্তি নবায়নের সম্ভাবনা ছিল। সেটা আর হচ্ছে না। জুনের ক্লাব বিশ্বকাপ খেলেই রিয়াল ছাড়বেন তিনি।
লুকা মডরিচ লিখেছেন, ‘সময় হয়ে গেছে। এই মুহূর্ত কখনো না আসুক এটাই সবসময় চেয়েছিলাম। এটাই ফুটবল এবং জীবনে সবকিছুর শুরুর মতো শেষও আছে। আগামী শনিবার আমি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আমার ক্যারিয়ারেরে শেষ ম্যাচ খেলবো।’
২০১২ সালে আমি বিশ্বের সেরা এই ক্লাবের জার্সি পরার স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম, বড় কিছু অর্জনের উচ্চাকাঙ্খা ছিল, আমার সামনে কী অপেক্ষা করছে তা চিন্তা করিনি। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলে শুধু ফুটবলার হিসেবে নয় ব্যক্তি হিসেবে আমার জীবন বদলে গেছে।
আমি ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাবের সবচেয়ে সফল যুগের অংশ হতে পেরে গর্বিত। আমি এই ক্লাবকে আমার হৃদয়ের গভীর থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই, বিশেষ করে ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ, আমার সতীর্থ, কোচদের, যারা এই সময়ে আমাকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন।
এতোগুলো বছর জুড়ে আমি অসাধারণ সব অর্জন করেছি, অসম্ভব সব কামব্যাকের অংশ হয়েছি, ফাইনাল, উদযাপন ও বার্নাব্যুর জাদুকরী রাতের সাক্ষী হয়েছি। আমরা সবকিছু জিতেছি এবং আমি খুশি, খুবই খুশি। তবে এতোসব জয়, শিরোপার বাইরে আমি হৃদয়ে মাদ্রিদ ভক্তদের ভালোবাসা ধারণ করে রাখছি।
আমি বোঝাতে পারব না তোমরা আমার কাছে কত বিশেষ কিছু ছিলে এবং তোমরা আমার কতটা জুড়ে ছিলে। প্রতি ম্যাচ শেষে তোমরা যে সংবর্ধনা, যে ভালোবাসা আমাকে দিয়েছ, আমি ভুলব না। আমি পরিপূর্ণ হৃদয়ে, গৌরবে পূর্ণ হয়ে, সম্মান ও অবিস্মরণীয় স্মৃতি নিয়ে বিদায় নিচ্ছি। ক্লাব বিশ্বকাপের পর আমি এই ক্লাবের জার্সি পরে খেলব না ঠিক, তবে আজীবন মাদ্রিদিস্তা থাকব।’
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ক মডর চ ফ টবল দলবদল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।