রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র তিন সংগঠনের তারুণ্যের সমাবেশ শুরু হয়েছে। লাখো লাখো নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পদচারণায়, স্লোগানে নয়াপল্টন এবং এর আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভাপতিত্ব করছেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।

এদিকে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ১০টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলর জড়ো হতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নেতাকর্মীদের স্লোগান ও পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে নয়াপল্টন। 

ঢাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা, সিলেট, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ থেকে আসা নেতাকর্মীদের নয়াপল্টনে আসতে দেখা গেছে। এছাড়া এই বিভাগগুলোর বাইরে বরিশাল, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগ থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসেছেন। ‘তারণ্যের অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ স্লোগানে এ কর্মসূচি করছে সংগঠন তিনটি৷ এজন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীত পাশের সড়কে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টনের আশেপাশে এলাকায় টানানো হয়েছে মাইক। সকাল থেকেই মাইকে ভেসে আসে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে গান। সমাবেশ শুরু’র আগে মঞ্চে দেশের শিল্পীরা তাদের জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন।

সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ব্যানার, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন, টি-শার্ট ও বিভিন্ন রঙের ক্যাপ পরে এবং মাথায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা বেঁধে সমাবেশে এসেছেন। তারা বিভিন্ন স্লোগানে সমাবেশ প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তুলেছেন। নেতাকর্মীদের জমায়েত ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড়, পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। নয়াপল্টন এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। 

এ দিকে নয়াপল্টন এবং এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

তরুণদের কাছে টানতে মে মাস জুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি’র এই তিন সংগঠন। চারটি বড় বিভাগ ও শহরে দুই দিন করে আট দিন সেমিনার ও সমাবেশ করছেন তারা। এর আগে চট্টগ্রাম, খুলনা আর বগুড়ায় সেমিনার ও সমাবেশ হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ সম ব শ ন ত কর ম ব এনপ র রহম ন স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে: সিপিবি

অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, বর্তমান সংকট সমাধানে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কারও দাবি করেন তিনি।

রুহিন হোসেন বলেন, সিপিবি, বাম জোটসহ ৫০টির বেশি দল চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচন চাইলেও প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন মাত্র একটি দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় রুহিন হোসেন এ কথাগুলো বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মুক্তিভবনে এই স্মরণসভার আয়োজন করে সিপিবি।

এখন গণতন্ত্র ও শোষণমুক্তির আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অনেকে অবস্থান নিচ্ছেন অভিযোগ করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর গত ১০ মাসে জনজীবনের সংকট দূর হয়নি। দারিদ্র্য, বেকারত্ব বাড়ছে। মানুষের নিরাপত্তাহীনতা কাটছে না। ‘মব’ সন্ত্রাস চলছে।

রুহিন হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে করিডর প্রদান, বন্দর লিজ, বিদেশিদের সমরাস্ত্র কারখানা অনুমোদন—এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে ভূরাজনীতিতে আধিপত্যবাদী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে।

স্বাধীন বিচার বিভাগ ও নিরপেক্ষ প্রশাসনের কথা বলা হলেও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীরা বেকসুর খালাস পাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, জেল পলাতক জঙ্গি গ্রেপ্তার ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।

স্মরণসভায় সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে নানা টানাপোড়েন দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র—এসব বলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের কবর দিয়েছিলেন মন্তব্য করে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এখন বলা হচ্ছে আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। উন্নয়নের সঙ্গে যেমন গণতন্ত্রের বিরোধ নেই, সংস্কারের সঙ্গেও তেমনি নির্বাচনের বিরোধ নেই।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও অনিরুদ্ধ দাশ, কোষাধ্যক্ষ ফজলুর রহমান।

স্মরণসভার শুরুতে প্রয়াত নেতা আবু জাফর আহমদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এ সময় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

আবু জাফর আহমদ ২০১৯ সালের ২৮ মে মারা যান। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তিনি সিলেটের বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ