পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাজ্যকে টিআইবিসহ তিন সংস্থার আহ্বান
Published: 10th, June 2025 GMT
যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া অর্থ জব্দ করে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী তিন সংস্থা—ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), স্পটলাইট অন করাপশন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে। সংস্থাগুলো ব্রিটিশ সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে আছেন। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে পাচার হওয়া অবৈধ অর্থ জব্দ করে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানায় সংস্থা তিনটি।
টিআইবি আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তিন সংস্থা যুক্তরাজ্য সরকারকে সে দেশে অবস্থানরত সন্দেহভাজন অর্থ পাচারকারী বাংলাদেশি অলিগার্ক, যাদের দুর্নীতি ও চৌর্যবৃত্তির সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে দেশটির আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টা জোরদার করতে বলেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও জবাবদিহিমূলক সুশাসনের পথে অগ্রযাত্রার অভূতপূর্ব সম্ভাবনার বর্তমান সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের চলমান উদ্যোগ, বিশেষ করে দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে পাচার হওয়া সম্পদ বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাজ্যকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এর মাধ্যমে এমন জোরালো বার্তা দিতে হবে যে চূড়ান্ত বিবেচনায় অর্থ পাচারকারীদের শুধু উৎস হিসেবে বাংলাদেশই নয়, গন্তব্য যুক্তরাজ্যেও কার্যকরভাবে জবাবদিহি করতে হয়।’
স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুসান হাওলি বলেন, ‘সময় নষ্ট না করে তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ জব্দে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও অর্থ পুনরুদ্ধারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, দ্য অবজারভার ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের তদন্তে যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের মালিকানাধীন কমপক্ষে ৪০ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) ইতিমধ্যে ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দুর্নীতি নির্মূল ও শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাচার হওয়া কোটি কোটি পাউন্ড পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার আনুমানিক পরিমাণ প্রতিবছর ১১ বিলিয়ন পাউন্ড (১৬ বিলিয়ন ডলার)। বাংলাদেশ সরকারের গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির অনুমান অনুসারে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বার্ষিক ১৬ বিলিয়ন ডলার হারে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার দেশ থেকে পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার শান্তি পুনরুদ্ধার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রসচিব ‘অর্থ পাচারের স্বর্ণযুগ শেষ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহ ব ন জ ন য় প চ র হওয় সরক র র প অর থ প প উন ড ট আইব
এছাড়াও পড়ুন:
বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় চাটমোহরে দু’জনকে জরিমানা
যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেয়ে চাটমোহরের দুটি বাস কাউন্টারে অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনীর একটি দল। বুধবার রাত ১০টায় পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দেওয়া হয়।
ঢাকাগামী যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে শাহজাদপুর ট্রাভেলস এবং ফাতেমা পরিবহনের কাউন্টারে ভাঙ্গুড়া ক্যাম্পের লেফটেনেন্ট ইমরানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় শাহজাদপুর ট্রাভেলসের কাউন্টার থেকে লিটন ও ফাতেমা পরিবহনের কাউন্টার থেকে শরিফুলকে আটক করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী এসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সত্যতা পান। এর পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাহজাদপুর ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার লিটনকে ১০ হাজার টাকা ও ফাতেমা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার শরিফুলকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক যাত্রীর কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ঢাকাগামী দুটি পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চালায়। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে দু’জনকে জরিমানা করা হয়।