বলিউড অভিনেত্রী জিনাত আমান। ১৯৭০ সালে বলিউডে তার অভিষেক ঘটে। ১৯৭৮ সালে তার অভিনীত ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। এতে রূপা চরিত্রে অভিনয় করেন জিনাত। সিনেমাটিতে শশী কাপুরের সঙ্গে তার চুম্বন দৃশ্য রয়েছে। পর্দায় জিনাতের এটিই প্রথম চুম্বন দৃশ্য ছিল। 

‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ সিনেমায় জিনাত-শশীর চুম্বন দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন এই অভিনেত্রী। ভিডিওর ক্যাপশনে ৪৮ বছর আগের ঘটনা নিয়ে স্মৃতিচারণও করেছেন জিনাত।

দীর্ঘ লেখার শুরুতে জিনাত আমান বলেন, “ঝলমলে চোখ আর সুদর্শন শশী কাপুর ছিলেন ভারতের স্কুলছাত্রীদের কল্পনার পুরুষ! আমি নিজেও ছিলাম। প্রথমবার যখন তাকে দেখি, তখন আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়ি। শেক্সপিয়রের নাটক পরিবেশনের জন্য শেক্সপিয়ারিয়ানা থিয়েটার কোম্পানির সদস্যদের (তার ভবিষ্যৎ স্ত্রী জেনিফারসহ) সঙ্গে পাঁচগনিতে এসেছিলেন তিনি। আর মেয়েদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন।”

আরো পড়ুন:

জনের সঙ্গে ‘দুর্ঘটনামূলক বিয়ে’ নিয়ে মুখ খুললেন জেনেলিয়া

যা খুশি তা পরে তুমি বাইরে যেতে পারো না, মেয়েকে কাজল

জিনাত আমানের স্কুল জীবনের ক্রাশ ছিলেন শশী কাপুর। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার ভাগ্য ভালো ছিল, শশী দক্ষিণ বম্বের বাসিন্দা ছিলেন। আমার বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে থাকতেন না তিনি। প্রতিবেশীরা বলাবলি করতেন, ‘দ্য’ শশী কাপুরের প্রতিদিনের অভ্যাস ছিল— সন্ধ্যা ৬টায় ঘুরে বেড়ানো। আমার বান্ধবীরা ও আমি তখন তরুণ। আমরা আমাদের বাবা-মাকে বুঝিয়েছিলাম, সুস্বাস্থ্যের জন্য সূর্যাস্তে হাঁটা জরুরি এবং নির্মল বাতাস প্রয়োজন। অথচ, আমাদের লক্ষ্যই ছিল শর্টস পরা চলচ্চিত্র তারকাকে একঝলক দেখা।”

স্বপ্নের মানুষ শশী কাপুরের সঙ্গে অভিনয়ের কথা জানিয়ে জিনাত আমান বলেন, “আমার ক্যারিয়ারের অনেকটা সময় পর সাহসী, বুদ্ধিমান এবং মনোমুগ্ধকর পুরুষটির (শশী কাপুর) সান্নিধ্যে পাই। দ্রুত হাসতেন এবং কৌতুক করতেন। ‘রোটি’, ‘কাপড়া আউর মাকান’, ‘চোরি মেরা কাম’, ‘ওয়াকিল বাবু’সহ বেশ কিছু স্মরণীয় সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছি।”

প্রায় ৫০ বছর পর চুম্বন দৃশ্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন জিনাত আমান। এ অভিনেত্রীর ভাষায়, “সত্যম শিবম সুন্দরম’ সিনেমার এই ভিডিও ক্লিপটি দুটি কারণে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। প্রথমত: এটি আমার ক্যারিয়ারের বড় একটি মুহূর্ত ছিল। এটি ছিল আমার প্রথম অন-স্ক্রিন চুম্বন। যদিও এটি সেই সময়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। আসলে এটি পবিত্র চুম্বন ছিল। শুটিং করার সময় আমার সত্যিই এক মুহূর্তও অস্বস্তি হয়নি। দ্বিতীয়ত: এই পোস্টের সাহসিকতা দেখে স্কুলছাত্রী জিনাত রোমাঞ্চিত হবে।”

‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ সিনেমার শুটিংয়ের আগে জিনাতের বেশ কিছু ছবির বিরুদ্ধে ‘অশ্লীলতার’ অভিযোগ উঠেছিল। শুধু অভিযোগ নয়, তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন সত্তর দশকের সাহসী এই অভিনেত্রী। যে ছবিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, সেই ‘অশ্লীল’ ছবি দুই বছর আগে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছিলেন জিনাত। ছবিটি শেয়ার করে বিতর্কিত ঘটনার পেছনের গল্প বলেছিলেন। পাশাপাশি নিজের মতামতও ব্যক্ত করেন।

লেখার শুরুতে জিনাত আমান বলেন— “সত্যম শিবম সুন্দরম’ সিনেমার লুক টেস্টের জন্য এই ছবি তুলেছিলেন জে.

পি. সিংহল। ১৯৭৭ সালের দিকে আর কে স্টুডিওতে এই ফটোশুট করা হয়েছিল। কস্টিউম ডিজাইন করেছিলেন অস্কার জয়ী ভানু আথাইয়া।”

এ ছবি প্রকাশ্যে আসার পর অশ্লীলতার অভিযোগে বিতর্কের মুখে পড়েন জিনাত আমান। তা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “যারা বলিউডের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞাত, তারা জানেন যে, ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ সিনেমায় আমার রূপা চরিত্র নিয়ে দারুণ বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ ছবির বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমি খুব আনন্দ পেয়েছিলাম। কারণ আমি মানুষের শরীরে কোনো অশ্লীলতা খুঁজে পাই না।”

জিনাত আমানের এই ছবি তখন দারুণভাবে নজর কেড়েছিল। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “পরিচালক রাজ কাপুর সিনেমাটির জন্য আমাকে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু আমার ওয়েস্টার্ন ইমেজ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তিনি নিশ্চিত ছিলেন না এই লুকে দর্শক আমাকে গ্রহণ করবেন কিনা। এ কারণে লুক টেস্টের জন্য এই ফটোশুট করান। এই লুক টেস্টের উপর নির্ভর করে আমরা লতা জির (লতা মঙ্গেশকর) বিখ্যাত গানের শুট করি। আর কে স্টুডিওতে রাজ কাপুর এর প্রদর্শনী করেন; যাতে পরিবেশকরা আমার লুক দেখে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। প্রথম প্রদর্শনীর পর খুব দ্রুত সিনেমাটির সমস্ত স্বত্ব বিক্রি হয়ে যায়।”

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র চ ম বন দ শ য জ ন ত আম ন র জন য কর ছ ল ব তর ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিটিভি-বেতারের স্বায়ত্তশাসনে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে কমিটি গঠন

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের নেতৃত্বে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

এ কমিটি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পথরেখা তৈরিতে কাজ করবে। পাশাপাশি টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমের গত ১৫ বছরের নীতিমালা পর্যালোচনা ও ভবিষ্যতের নীতি প্রণয়নে কাজ করবে।

শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

গত মার্চে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়। এ কমিশনের প্রধান ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।

প্রতিবেদনে বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠান করার সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। এ প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা বা জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এ প্রতিষ্ঠানের বার্তা বিভাগ হিসেবে বাসসকে একীভূত করতে বলেছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে এ প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে। এগুলো হলো টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ