চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় হত্যার চেষ্টা ও অঙ্গহানির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ১০ মাস পর গত মঙ্গলবার নগরের খুলশী থানায় মামলাটি করেন ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার আলিমের শিক্ষার্থী চট্টগ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ। বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়। মামলার আসামিদের মধ্যে চার সাংবাদিক ও চট্টগ্রামের কয়েকজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট নগরের ওয়াসা মোড়ে সরকারের দেওয়া কারফিউ ভঙ্গের জন্য জড়ো হলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হত্যার উদ্দেশ্যে আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি করতে থাকে। ওই সময় ছররা গুলি বাদীর মাথায়, পায়ে, মুখে ও চোখে লাগে। বাদীর ডান চোখে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় চিকিৎসা করালেও দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসেনি।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শারীরিক অসুস্থতা, দুর্বলতা ও আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের সময় লাগায় মামলা করতে দেরি হয় বাদীর। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অযথা হয়রানির জন্য কাউকে আসামি করেননি তিনি। তদন্তে দোষীদের নাম উঠে আসবে।

জানতে চাইলে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বাদী থানায় মামলা করেছেন। এখন পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করবে। কে দোষী, কে নির্দোষ তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তখন তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন করছেন বা হলফনামা দিয়ে বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

অনলাইন জুয়ায় জড়িতদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার চিন্তা

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।

সভায় ফয়েজ আহমদ বলেন, দেশকে অনলাইন জুয়া থেকে মুক্ত করতে হলে জুয়ার চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে লিংকের গতি ধীর করা এবং যে নম্বর বা এমএফএস (মোবাইলে আর্থিক সেবা) অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাচাইয়ের পর এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। তবে ন্যায্যতা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকেওয়াইসি (গ্রাহকের পরিচয় যাচাই) সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন

কমিশনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া বন্ধে বিটিআরসি থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মেইল দেওয়া শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো কীভাবে তাদের ওয়েব ব্রাউজার ও এডসেন্স সেটআপ করবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ভেটিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভেটিং শেষে তা সংশ্লিষ্ট সব গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত গাইডলাইনও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটা অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হবে।

সভায় তিনি আরও জানান, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস হিসাব ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।

সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছে, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।

সভায় অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়।

সভায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ