১০ মাস পর শেখ হাসিনাসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মামলা
Published: 19th, June 2025 GMT
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় হত্যার চেষ্টা ও অঙ্গহানির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ১০ মাস পর গত মঙ্গলবার নগরের খুলশী থানায় মামলাটি করেন ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার আলিমের শিক্ষার্থী চট্টগ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ। বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়। মামলার আসামিদের মধ্যে চার সাংবাদিক ও চট্টগ্রামের কয়েকজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট নগরের ওয়াসা মোড়ে সরকারের দেওয়া কারফিউ ভঙ্গের জন্য জড়ো হলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হত্যার উদ্দেশ্যে আন্দোলনকারীদের দিকে গুলি করতে থাকে। ওই সময় ছররা গুলি বাদীর মাথায়, পায়ে, মুখে ও চোখে লাগে। বাদীর ডান চোখে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় চিকিৎসা করালেও দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসেনি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শারীরিক অসুস্থতা, দুর্বলতা ও আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের সময় লাগায় মামলা করতে দেরি হয় বাদীর। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অযথা হয়রানির জন্য কাউকে আসামি করেননি তিনি। তদন্তে দোষীদের নাম উঠে আসবে।
জানতে চাইলে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বাদী থানায় মামলা করেছেন। এখন পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করবে। কে দোষী, কে নির্দোষ তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তখন তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন করছেন বা হলফনামা দিয়ে বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউক সার্ভারে ঢুকে নকশা অনুমোদন, গ্রেপ্তার ৩
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ইসিপিএস সার্ভার হ্যাক করে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে জালিয়াতি করে নকশা অনুমোদনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজউকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৯ মে নকশা অনুমোদন-সক্রান্ত ইসিপিএস সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাশের ঘটনাটি নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের।
জলাভূমি ও হাইট রেস্ট্রিকশন থাকা ভূমিতে ১৫ তলাবিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিটের এই সুউচ্চ ভবনটির নকশা সব বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাস করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা। পরে রাজউক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানতে পেরে প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরও তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়। তৎক্ষণাৎ সার্ভারটি বন্ধ করে মতিঝিল থানায় সেদিনই একটি জিডি করা হয়।
পাস করা নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামক এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যার স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলের নীলনকশা নামের একটি কম্পিউটারের দোকান ও সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত ২২ মে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় মতিঝিলের নীলনকশা নামক দোকানটিতে। দোকানটির সঙ্গে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে দোকানটির মালিক এনামুলের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউকের নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে ওই অবৈধ ভবনগুলোর নকশা পাওয়া যায়। এতে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা প্রতীয়মান হয়। মোবাইল কোর্ট চলাকালে তাদের কাউকেই না পাওয়া যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়।
রাজউকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, এমন সংবেদনশীল বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন এবং তাঁর নির্দেশনায় ৬ জুন রাজউক বাদী হয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ধারাসহ দণ্ডবিধির ধারায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন।
তিনি বলেন, মামলার এজাহারনামীয় ২১ নম্বর আসামি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘নীলাভ নকশাঘর’ এর মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ এজাহারনামীয় ২২ ও ২৩ নম্বর আসামি সজীব ও মুকুলকে পুলিশ মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।