বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কর অবকাশের শর্ত শিথিল
Published: 20th, June 2025 GMT
বিদেশি বিনিয়োগ টানতে সরকার কিছু ক্ষেত্রে করছাড়ের শর্ত শিথিল করেছে। এখন থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) ও হাই-টেক পার্কে বিদেশে ব্যবহার হয়েছে– এমন যন্ত্রপাতি এনে উৎপাদন কাজে ব্যবহার করলেও কর ছাড় বা অবকাশের সুবিধা পাবেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এতদিন এই সুবিধা ছিল না। প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে কোনো বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক বিষয় জড়িত। ফলে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে বিনিয়োগ বাড়বে না। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সবচেয়ে বেশি দরকার।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বেজা ও হাই-টেক পার্কের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো ১২টি শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে বিভিন্ন স্ল্যাবে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা পাচ্ছে। এ সুবিধার কারণে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আসছেন। সাধারণত যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন, তারা নিজ দেশের কারখানায় ব্যবহার হয়েছে অর্থাৎ পুরোনো যন্ত্রপাতি আনেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শর্তমতে, ইজেড ও হাই-টেক পার্কে কর অবকাশের সুবিধা পেতে হলে উৎপাদনের জন্য নতুন যন্ত্রপাতি আনতে হয়। ইতোপূর্বে ব্যবহৃত কোনো যন্ত্রপাতি এনে পণ্য উৎপাদন করলে কর অবকাশের সুবিধা পাবে না। এ শর্তের কারণে বিদেশিরা বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছিলেন। সেজন্য সরকার হাই-টেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর অবকাশের শর্ত শিথিলসহ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে নানা পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি এসব জায়গায় বিনিয়োগ করেছে, আরও বহু কোম্পানি বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের শর্ত শিথিল করার জন্য এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কারণ বিডার মূল দায়িত্ব হচ্ছে– নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অর্থবহ সংযোগ সৃষ্টি করে শক্তিশালী বিনিয়োগ পাইপলাইন গঠন করা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, বেজা ও হাই-টেক পার্কে কর অবকাশের সুবিধা পেতে যেসব শর্ত পরিপালন করতে হয় তার মধ্যে একটি শর্তে বলা আছে, কর অবকাশ সুবিধা পেতে হলে ‘ইতোপূর্বে পণ্য বা সেবা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়েছে এরূপ কোনো মেশিন ও যন্ত্রপাতি ইত্যাদি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কের কোনো শিল্প ইউনিট স্থাপনে ব্যবহার করা যাবে না।’ এই শর্তে আপত্তি ছিল বিদেশি ব্যবসায়ীদের। সেজন্য ২০২৪ সালের দুটি প্রজ্ঞাপনের এসআরওর একটি শর্তে সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধনীতে ‘ইত:পূর্বে’ শব্দের আগে ‘বাংলাদেশ’ শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। দুটি প্রজ্ঞাপনের একটি হলো হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে কর সুবিধা, অপরটি ইজেডে বিনিয়োগে কর সুবিধা। দুটি এসআরওতে দফা (ক) এর উপ-দফা (ই) সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধনের পর শর্ত দাঁড়ায়– ‘বাংলাদেশে ইতোপূর্বে পণ্য বা সেবা উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়েছে– এমন কোনো মেশিন, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ইজেড ও পার্কের কোনো শিল্প ইউনিট স্থাপনে ব্যবহার করা যাবে না।’ এর অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পুনরায় ব্যবহার করলে করছাড়ের সুবিধা পাবে না। কিন্তু বিদেশে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এনে উৎপাদন করলে কর ছাড়ের সুবিধা পাবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি হওয়ায় এবং কর অবকাশ দেওয়ায় জাপানি বিনিয়োগকারী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ করছেন। অনেক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সেজন্য জাপানি বিনিয়োগকারীরা কর অবকাশের ক্ষেত্রে এই শর্তটি বিশেষ করে পুরোনো মেশিনারিজ আমদানির ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলের জন্য বিডার কাছে বিভিন্ন সময় অনুরোধ করেছেন। পরে বিডার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এবার বাজেটে শর্তটি শিথিল করা হয়। অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের তাদের দেশে বড় বড় কারখানা রয়েছে। শর্তের কারণে সেই দেশ থেকে বাংলাদেশে পুরোনো মেশিনারিজ আনতে পারেন না। একটি ফ্যাক্টরি স্থাপন করে সব নতুন মেশিনারিজ বসাতে গেলে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা কোম্পানি তাদের নিজ দেশের নিজ কোম্পানির ব্যবহৃত মেশিনারিজ এনে বাংলাদেশে স্থাপন করা কারখানায় ব্যবহার করলে তাদের খরচ কমে যায়। সেজন্য তারা শর্ত শিথিলের অনুরোধ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, মূলত জাপানি ব্যবসায়ীরা এই ধরনের সুযোগ দেওয়ার জন্য বিডাকে অনুরোধ জানিয়েছিল। পরে বিডার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই শর্তটি শিথিল করার ফলে বহু বিদেশি প্রতিষ্ঠান সুযোগটি গ্রহণ করবে। তাতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।
অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ বছরের কর অবকাশ
অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইজেড) নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়। ইজেডে ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত আয়ের ওপর ব্যবসা শুরুর তারিখ থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছর শতভাগ করছাড় রয়েছে। চতুর্থ বছর আয়ের ওপর ৮০ শতাংশ, পঞ্চম বছর ৭০ শতাংশ, ষষ্ঠ বছর ৭০ শতাংশ, সপ্তম বছর ৫০ শতাংশ, অষ্টম বছর ৪০ শতাংশ, নবম বছর ৩০ শতাংশ ও ১০ম বছর ২০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। এই অবকাশ সুবিধা পেতে হলে ১২টি শর্ত মানতে হবে।
হাই-টেক পার্কে ১০ বছরের করছাড় সুবিধা
হাই-টেক পার্কে পরিচালিত ব্যবসায়ের মাধ্যমে অর্জিত আয়ের ওপর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর তারিখ থেকে প্রথম সাত বছর পর্যন্ত শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া অষ্টম থেকে ১০ম বছর পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তিন বছর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে তাদের আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। তবে এই কর অবকাশ সুবিধা পেতে হলে ১২টি শর্ত মানতে হবে।
বিদেশি বিনিয়োগ পরিস্থিতি
বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড। গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটির ‘ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট-২০২৫’-এ বাংলাদেশে এফডিআই কমার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালে এফডিআই তার আগের বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ কমেছে। গত বছর নিট বা প্রকৃত এফডিআই এসেছে ১২৭ কোটি ডলার। আর ২০২৩ সালে নিট এফডিআই ছিল ১৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত আট মাসে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মোট ৭৫ কোটি ৬ লাখ ডলার। এ ছাড়া বিডায় মোট ৭৩৯টি শিল্প প্রকল্প নিবন্ধিত হয়েছে। এর মধ্যে শতভাগ বিদেশি প্রকল্প রয়েছে ৬৬টি এবং যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে ৬১টি। বেজা ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি সম্পাদন করেছে, যার মধ্যে শতভাগ বিদেশি প্রকল্প রয়েছে ৬টি এবং যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে ৩টি। বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) মোট ৩১টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইজারা চুক্তি করেছে। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন সম্প্রতি তাঁর ফেসবুক পোস্টে বিডার অগ্রগতি বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। এতে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত যে পরিমাণ বিনিয়োগ এসেছে সেটি তার আগের বছরের একই সময়ের প্রায় সমান। এতে বিডার কোনো অর্জন বা ব্যর্থতা নেই। এত বড় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পরে এত তাড়াতাড়ি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ আগের জায়গায় ফিরে গেছে তা আশার কথা বলে মনে করেন তিনি। তবে এর পেছনে মূল শক্তি রিজার্ভ বৃদ্ধি, এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল থাকা ইত্যাদির অবদান রয়েছে বলে মনে করেন বিডার চেয়ারম্যান।
বিনিয়োগকারীরা কী বলছেন
অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কর অবকাশের শর্ত শিথিল প্রসঙ্গে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার সমকালকে বলেন, এই উদ্যোগটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে একটি সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা আছে। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দীর্ঘমেয়াদি নীতি প্রণয়ন করতে হবে। ঘন ঘন নীতি বদলালে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখে পড়েন, আস্থা হারান।
জাভেদ আখতার বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ব্যবসা করে নির্বিঘ্নে তাদের মুনাফা ফেরত নেওয়ার নিশ্চয়তা চান। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হলে যদি নীতি বদলায় তাহলে শুধু বিদেশি নয়, দেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও হুমকির মুখে পড়ে।
তাঁর মতে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি তথা ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। কারণ বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করতে চাইবেন না। সেজন্য বিডা ও এনবিআরকে যৌথভাবে বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবক শ র স ব ধ ব যবহ র কর ব ন য় গ কর ১০ বছর র শ থ ল কর পর স থ ত ব যবস য় ব যবহ ত হ র কর জন য ব স জন য র জন য করছ ড় ত বছর শতভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইন জুয়ায় জড়িতদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার চিন্তা
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সভায় ফয়েজ আহমদ বলেন, দেশকে অনলাইন জুয়া থেকে মুক্ত করতে হলে জুয়ার চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে লিংকের গতি ধীর করা এবং যে নম্বর বা এমএফএস (মোবাইলে আর্থিক সেবা) অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাচাইয়ের পর এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। তবে ন্যায্যতা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকেওয়াইসি (গ্রাহকের পরিচয় যাচাই) সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন
কমিশনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া বন্ধে বিটিআরসি থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মেইল দেওয়া শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো কীভাবে তাদের ওয়েব ব্রাউজার ও এডসেন্স সেটআপ করবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ভেটিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভেটিং শেষে তা সংশ্লিষ্ট সব গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত গাইডলাইনও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটা অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হবে।
সভায় তিনি আরও জানান, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস হিসাব ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।
সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছে, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।
সভায় অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়।
সভায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।