পাকিস্তানি অভিনেত্রী আয়েশা খানের পচা–গলা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার পাকিস্তানের করাচিতে নিজ বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুকালে অভিনেত্রীর বয়স হয়েছিল ৭৭। পুলিশের ধারণা, সপ্তাহখানেক আগেই তিনি মারা যান।
আয়েশার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পাকিস্তানি শিল্পী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিনেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আয়েশা খান কয়েক বছর ধরে একা থাকতেন। শুক্রবার তার বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কেউ দরজা খোলেনি। পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতরে গেলে অভিনেত্রীর মরদেহ দেখতে পায়। মরদেহ সোহরাব গোথে ইধি ফাউন্ডেশনের মর্গে পাঠানো হয়।
১৯৪৮ সালের ২২ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করা আয়েশা খান পাকিস্তানি বিনোদনজগতের একটি সুপরিচিত নাম ছিলেন। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী খালেদা রিয়াসাতের বড় বোন।
‘আখরি রক’, ‘টিপু সুলতান: দ্য টাইগার লর্ড’, ‘ডালিজ’, ‘ক্র্যাকস’, ‘বোল মেরি ফিশ’, ‘এক অউর আসমান’-এর মতো জনপ্রিয় টিভি শোতে কাজ করেছেন তিনি। এ ছাড়া ‘রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান’, ‘মুসকান’, ‘ফাতিমা’র মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সূত্র: আরব নিউজ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র ল শ উদ ধ র মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
থানায় প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার ঘটনায় শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় এইচএসসির প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খুলে প্রশ্ন বের করার ঘটনায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার (২১ জুন) বিকেলে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম মোফাখখারুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বোর্ডের কলেজ পরিদর্শককে আহ্বায়ক করে তিনি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন। কমিটিতে একজন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ধামইরহাট উপজেলার এমএম সরকারি ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষককে রাখা হয়েছে। আগামী রবিবারের (২২ জুন) মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও আলাদা দুইটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এর আগেই থানা হাজতে প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলার ঘটনায় একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে বান্ধবীকে হলে নিয়ে রাত্রিযাপন রাবি ছাত্রের
রাজশাহীর পদ্মা নদীর বাঁধ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
সম্প্রতি ১৭টি ট্রাংকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ধামইরহাট থানায় পাঠায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। মালখানা হিসেবে ব্যবহৃত ট্রাংক রাখা হয়েছিল নারী হাজতখানায়। ওই রাতে একটি হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য উদঘাটনের কৌশলগত কারণে তাদের আলাদা আলাদা স্থানে রাখা হয়। এক আসামিকে রাখা হয়েছিল নারী হাজতখানায়।
সেখানে প্রশ্নপত্রের ট্রাংকে দুইটিতে তালা থাকলেও চাবি ছিল তালার সঙ্গেই। তারপর সিলগালা করা ছিল। ওই আসামির হাতে হ্যান্ডকাপ থাকলেও এক হাত খোলা ছিল। তিনি সিলগালার সিল তুলে চাবি দিয়ে তালা খোলেন। এরপর একটি প্রশ্নের প্যাকেট বের করে কাটেন। প্রশ্নপত্র দেখার পর তিনি কয়েকটি প্রশ্ন ছিঁড়েও ফেলেন। পরে সকালে পুলিশ গিয়ে এগুলো দেখতে পায়। এ ঘটনায় সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে ওই আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ একটি মামলা করে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ওসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে আয়োজিত মানববন্ধনে উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখা, উপজেলা শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
এ দিন বিকেলে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বোর্ডের গঠন করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা থানা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, “১৭ জুন দিনগত রাত ৪টা ৪০ মিনিটে ওই আসামিকে থানা হাজতে ঢোকানো হয়। বের করা হয় ১৮ জুন দুপুর ১২টায়। এই সময়ের মধ্যেই সে এ কাণ্ড ঘটায়।”
তিনি বলেন, “আসলে অবকাঠামোগত দুর্বলতা আছে তো। সে জন্যই হাজতখানা ব্যবহার হয় মালখানা হিসেবে। এটা একটা দুর্ঘটনা। আবার এটা পরীক্ষা এবং সরকারকে বিতর্কের মুখে ফেলার ষড়যন্ত্রও হতে পারে। আসামির মনোজগতের কোনো ত্রুটিও থাকতে পারে। আসলেই কী ঘটনা সেটা তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদনেই আসবে। আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব।”
এ ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশ আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির শনিবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “ধামইরহাটের সরকারি এম এম ডিগ্রি কলেজের জন্য বরাদ্দকৃত এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের তিনটি ট্রাংক থানার লকার রুমে সংরক্ষণ করা হয়। প্রশ্ন সর্টিংয়ের সময় একটি ট্রাংক তালা খোলা অবস্থায় পাওয়া যায় এবং ইতিহাস দ্বিতীয়পত্রের এক প্যাকেট প্রশ্ন লকার রুমের এক কর্ণারে পাওয়া যায়। ওই প্যাকেটের কিছু প্রশ্নপত্র ছেঁড়া থাকলেও প্রশ্নপত্রের সংখ্যা সঠিক পাওয়া যায় বলেও নওগাঁর জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেছেন।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে ও দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ চিহ্নিতকরণের জন্য জেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ইতিহাস দ্বিতীয়পত্রের (বিষয় কোড-৩০৫) যে সেটের প্রশ্ন খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়, সব কেন্দ্রের সেই সেটের প্রশ্ন বাতিল করা হয়েছে। একই বিষয়ের প্রশ্নপত্রের ভিন্ন কয়েকটি সেট বোর্ডের কাছে সংরক্ষিত থাকায় পরীক্ষা গ্রহণে কোনো জটিলতা তৈরি হবে না।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ