গান, কথামালায় উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব সংগীত দিবস। আজ শনিবার ২১ জুন সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে জাতীয় নাট্যশালায় দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগ আয়োজন করে অনুষ্ঠান ‘সুরের সম্মিলন’। 

জাতীয় নাট্যশালার সম্মুখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। এছাড়াও বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অতিথিদের বক্তব্যের পর বেলুন উড়িয়ে বিশ্ব সংগীত  দিবসের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংগীতশিল্পীরা এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।  

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন বলেন, ‘আজ হচ্ছে উৎসবের দিন। যারা সংগীত চর্চায় মনোনিবেশ করেছেন, যাঁদের জীবন অতিবাহিত করেছেন বা করছেন আজ তাঁদের উৎসবের দিন। বিশ্ব সংগীত দিবসের একটি ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সূতিকাগার হচ্ছে ফ্রান্স। সেখানে এই দিবসের সূচনা হয়েছিল। আমাদের অস্থিরতা ও সুস্থতার জন্য সংগীত কতটুকু নিরাময় ভূমিকা পালন করে- এই বৈশ্বিক দিবস পালনের মাধ্যমে সেটি আমরা বুঝতে পারি। যারা সংগীত এবং ফুলকে ভালোবাসেন তারা কখনো অন্যায় করতে পারেন না। আমাদের ভেতরের যে তাড়না, ভেতরের যে কালো অধ্যায়, ভেতরের যে কুলষিত রূপ সেটি আমরা মুছে দিতে পারি শুধুমাত্র সংগীতের মাধ্যমে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজ দেখছি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রের ঝনঝনানি, ক্ষমতার দম্ভ, ক্ষমতার দাপট। মানবতাকে ভুলে, মানবতাকে ভুলন্ঠিত করে আজ শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে হত্যা করছেন। আমি মনে করি, যে দেশে যত বেশি সাংস্কৃতিক চর্চা হবে বিশেষ করে সংগীতের চর্চা হবে সে দেশে যুদ্ধ থাকতে পারে না। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শুধু সংগীত চর্চাকে নয় সাংস্কৃতিক সমস্ত মাধ্যমকে লালন করে, পালন করে এবং বিকশিত করার জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সংগীতের সাথে জড়িত সকল ধরণের শিল্পীদের আন্তরিক অভিবাদন ও কৃতজ্ঞা জানিয়ে সংগীত দিবসটি সকলের মাঝে ছড়িয়ে যাক, সকলের মাঝে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটাক সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’

জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মূল আয়োজনে শুরুতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যন্ত্রশিল্পীবৃন্দ ‘অর্কেস্ট্রা’ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কণ্ঠশিল্পীবৃন্দ ‘কোলাজ’ সংগীত পরিবেশন করেন। আদিবাসী গান পরিবেশন করেন ব্যান্ডদল ‘চিম্বুক’ ও ‘বম শিল্পীগোষ্ঠী’। এরপর জনপ্রিয় তারকা শিল্পীরা পরপর কয়েকটি সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন। সবশেষে জনপ্রিয় ব্যান্ড শিল্পীরা ‘কোলাজ’ সংগীত পরিবেশন করেন। 

এদিকে ,সুরের ছোঁয়ায় শান্তি ও সুস্থতা এই স্লোগানকে সামনে রেখে এবং সংগীতকে বিশ্বের সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয়ে এবং সারা বিশ্বব্যাপী সংগীতপ্রিয় মানুষের সাথে একাত্ম হতে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সৃষ্টি বিশ্বময়’ আজ উদযাপন করেছে বিশ্ব সংগীত দিবস। সংগীতের নানান ধারা উপস্থাপন মাধ্যমে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন একমাত্র সঙ্গীতই পারে যুদ্ধ বিধ্বস্ত হানাহানি মুক্ত সাম্য ও শান্তির পৃথিবী গড়তে। মানুষের স্নিগ্ধ শান্ত অনুভুতিগুলো প্রকাশ হোক এটাই তাঁর প্রত্যাশা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উদযাপন পর্ষদ এর আহবায়ক সাংবাদিক বাসুদেব ধর ও সদস্য সচিব অলক দাশগুপ্ত। বক্তব্যে তারা বলেন প্রতিবছরের ন্যায় আগামীতেও এই দিবসটি পর্যায় ক্রমে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে দেয়ার আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে চর্যাপদ থেকে পদ, আবৃত্তি এবং জনপ্রিয় ও আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সংমিশ্রণে একটি কম্পোজিশন সুরের ছোঁয়ায় শান্তি উপস্থাপনা করে শিল্পীরা। এতে অংশ নেন লাইসা বিনতে কামাল, রত্ন দত্ত, সন্দীপা বিশ্বাস, রাইসা, অনন্যা, বর্ষা, পূজা, নওশীন জাফরিন, নাজিয়া আলম মমতা, আফিয়া তাইয়েবা, সানজিদা রহমান মুন, সাদিকা রহমান মেধা। এরপর নৃত্য উপস্থাপন করে শিল্পী অংকিতা অথৈ। দলীয় সংগীত পরিবেশ করে সাংস্কৃতিক সংগঠন বহ্নিশিখা, ভিন্নধারা, সপ্তকলি, আনন্দন।
আবৃত্তি উপস্থাপন করেন ফয়সাল আহমেদ ও মাহফুজা আক্তার মীরা। একক সংগীত পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী বর্ষা রাহা, রজত শুভ্র বিশ্বাস, সন্দিপা বিশ্বাস, মনি গোমেজ, শান্তা সরকার, সানোয়ারা জাহান নিতু, মার্টিনা এম সংমা তৃষ্ণা, আবিদা রহমান সেতু ও জাকারিয়া সুমন প্রমুখ। ছিল ব্যান্ডদল ‘ ব্রেখলেস’ এর পরিবেশনা।অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন রূপমঞ্জরি আর্যা ও শান্তনু তালুকদার। সব শেষে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। 

প্রসঙ্গত, ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস। সংগীত দিবসের সূচনা হয়েছিল ফ্রান্সে। সেখানে এই উৎসবের নাম দেয়া হয় ‘ফেট ডে লা মিউজিক’। যার অর্থ ‘বিশ্ব জুড়ে সংগীতের দিন’। ১৯৮২ সালে বিশেষ এই সংগীত উৎসবের দিনটি ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সংগীতের সুরে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও ইতিবাচক চিন্তা ও দর্শনকে ছড়িয়ে দিয়ে সবার সাথে মেলবন্ধন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল পকল এক ড ম ব শ ব স গ ত দ বস ল দ শ শ ল পকল স গ ত পর ব শ এক ড ম র স অন ষ ঠ ন র উৎসব র দ বস র দ বসট রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে পোশাক কারখানা

আগামীকাল ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ থাকবে। 

পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক সমিতি-বিজিএমইএ তাদের সদস্যদের বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য এই দিনটি সাধারণ ছুটি হিসেবে পালন করার জন্য।

বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সচিব অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ছুটির ঘোষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১১৮ এবং শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধি ১১০ মোতাবেক প্রতি বছর বছরের শুরুতে ১১ দিন উৎসব ছুটি নির্ধারণ করা হয়। তবে সরকার বছরের মাঝামাঝি সময়ে ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় উক্ত ছুটি উৎসব ছুটির অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তাই শ্রম আইন অনুযায়ী কারখানাগুলোর জন্য উক্ত ছুটি বাধ্যতামূলক নয়। তবুও, বিজিএমইএ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে সকল পোশাক শিল্প কারখানাগুলোকে সাধারণ ছুটি হিসেবে বন্ধ রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে।

গত ২ জুলাই সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং এ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস-আদালতে ছুটি নির্ধারণ করে।

ঢাকা/নাজমুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ট্রেলিয়ায় ‘ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে’ বাংলাদেশ
  • প্রত্যাশা কি মেটাতে পারছেন রাজনীতিবিদেরা
  • আড়াইহাজারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও আলোচনা সভা
  • ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তারুণ্যের উৎসব পালনে নির্দেশনা
  • তারুণ্যের উৎসবে যোগ দিতে সব ব্যাংককে নির্দেশ
  • ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে পোশাক কারখানা