পৃথিবী আজ এক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিক বোতল, শপিং ব্যাগ, চিপসের প্যাকেটসহ নানা সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক দিন দিন ভয়াবহভাবে পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হয়ে উঠছে। যদিও প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ, কিন্তু এর ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনায় আমাদের অভ্যাসগত ভুলই এখন আমাদের গ্রহের জন্য চরম হুমকির কারণ।

প্লাস্টিক ও পলিথিনের নেতিবাচক পরিবেশগত প্রভাব আজ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। যে বস্তু শত শত বছরেও মাটিতে মিশে না, তা পোড়ালে তৈরি হয় ডাই-অক্সিন, কার্বন মনোক্সাইড ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস– যা জলবায়ু পরিবর্তন, বরফ গলা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। দীর্ঘ সময় পর এই প্লাস্টিক ভেঙে পরিণত হয় মাইক্রোপ্লাস্টিকে, যার আকার ৫ মিলিমিটারেরও কম। গবেষণায় দেখা গেছে, এই ক্ষুদ্র কণা খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে প্রবেশ করছে মানুষের শরীরে– ফুসফুস, অন্ত্র এমনকি মায়ের বুকের দুধেও মিলছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। একই সঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসেও ভূমিকা রাখছে।
এই সংকট থেকে উত্তরণের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো প্লাস্টিক ও পলিথিনের পুনর্ব্যবহার। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্যের বাজার রয়েছে। অথচ ব্যবহৃত প্লাস্টিকের মাত্র ৩৬ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয়, ৩৯ শতাংশ চলে যায় ময়লার ভাগাড়ে, আর ২৫ শতাংশ ছড়িয়ে থাকে পরিবেশজুড়ে। বিশাল একটি অংশ রয়ে যায় সংগ্রহের বাইরে।

বিশেষত চট্টগ্রাম শহর এই সংকটের একটি বড় উদাহরণ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে প্রতিদিন জনসংখ্যা ও আর্থিক কর্মতৎপরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বর্জ্যের পরিমাণ। ২০২০ সালের হিসাবে শহরের জনসংখ্যা ৭০ লাখের বেশি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) তথ্যমতে, প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার টন কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার ৮.

৮ শতাংশই প্লাস্টিক ও পলিথিন। যথাযথ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ না হওয়ার কারণে এই বর্জ্য নদীনালা, খালবিল ও মাটিতে জমে দূষণ বাড়াচ্ছে, সৃষ্টি করছে জলাবদ্ধতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি।

যদিও সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, ২০২০ সালে তা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ। গবেষণা বলছে, ৩০ শতাংশ মানুষ নিয়মিত প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করে, ৪৬ শতাংশ কখনও করে না, আর ১৩ শতাংশ একেবারেই সচেতন নয়।

এই অবস্থায় ‘প্লাস্টিক সার্কুলারিটি’ বা চক্রাকার অর্থনীতি হয়ে উঠেছে সম্ভাবনাময় পথ। এর মাধ্যমে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে আবার ব্যবহারে ফিরিয়ে আনা যায়। এই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও ইপসা যৌথভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব মডেল গড়ে তুলছে।

২০২২ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন তেমনভাবে সংগ্রহ করা হতো না। তবে ইউনিলিভারের উদ্যোগে সে চিত্রে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। পলিথিন সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়ার জন্য তখন গড়ে তোলা হয় একটি সংগঠিত সংগ্রহকারী নেটওয়ার্ক। এখন তিন হাজারের বেশি পলিথিন সংগ্রাহক সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, যাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ব্যাংক হিসাব খোলা, সঞ্চয় বৃদ্ধি ও বীমা সুবিধার মাধ্যমে। ইতোমধ্যে ২৪ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে রিসাইক্লিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রামে এখন উৎসবিন্দু থেকেই গৃহস্থালি ও প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সংগ্রাহকরা প্রতিদিন বাসাবাড়ি, খোলা জায়গা এবং বিভিন্ন উৎস থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করেন। এই বর্জ্য ভাঙাড়ির দোকানে বিক্রি হয়, সেখান থেকে যায় রিসাইক্লারের কাছে। রিসাইক্লাররা তা প্রক্রিয়াজাত করে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করেন। এভাবেই গড়ে উঠেছে একটি চক্রাকার অর্থনৈতিক কাঠামো। 

এই উদ্যোগের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো স্কুল অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম। চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে এই অভ্যাস গড়ে উঠলে ভবিষ্যতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।

এই সফলতা আরও বিস্তৃত করার জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা। ছোট ছোট অভ্যাসের পরিবর্তন যেমন– প্লাস্টিক কম ব্যবহার, আলাদা করে সংরক্ষণ, নিয়মিত সংগ্রাহকের কাছে হস্তান্তর; এই ছোট ছোট পদক্ষেপই হতে পারে একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা।

অভ্যাস বদলেই বাঁচবে পৃথিবী। আমাদের সচেতন সিদ্ধান্তই পারে আমাদের শহর, নদী, প্রকৃতি এবং আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে।

শিক্ষার্থী
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চতুর্থ বর্ষ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল স ট ক বর জ য প ল স ট ক বর জ য র ব যবহ র প রক র য় পর ব শ পল থ ন স গ রহ র জন য আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আল-কায়েদাপন্থী সংগঠন যেভাবে মালি দখলের দ্বারপ্রান্তে

জেএনআইএম যোদ্ধাদের সশস্ত্র দল জ্বালানি ট্যাংকার চলাচলের প্রধান রুটগুলো অবরোধ করে রেখেছে, যার ফলে রাজধানী বামাকোসহ মালির বিভিন্ন অঞ্চলে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।

আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জিহাদি সংগঠন জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) ধীরে ধীরে মালির রাজধানী বামাকোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে হামলা বেড়ে গেছে, যার মধ্যে সেনাবাহিনীর বহরেও আক্রমণ রয়েছে। যদি শহরটির পতন হয়, তাহলে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি কঠোর শরিয়াহ আইনের অধীনে একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবে।

এতে করে জিহাদিদের লক্ষ্য পূর্ণ হবে—যেমনটি তালেবান শাসিত আফগানিস্তান বা সিরিয়ায় হয়েছে, যেখানে সাবেক বিদ্রোহী আহমেদ আল-শারা (যিনি আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন) এখন রাষ্ট্রপ্রধান। জেএনআইএমের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইতিমধ্যে পোশাক নিয়ে বিধিনিষেধ এবং শাস্তি কার্যকর করা হচ্ছে এমন আদালতের মাধ্যমে, যা ২০২৪ সালে প্রকাশিত হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে ‘ন্যায়সংগত বিচার মানদণ্ড মানে না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন০২ নভেম্বর ২০২৫ষষ্ঠ অভ্যুত্থানের মুখে মালি

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মালিতে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদের উদ্দেশে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় সতর্কতা জারি করে জানায়, ‘ব্যবসায়িক ফ্লাইট ব্যবহার করে অবিলম্বে দেশ ত্যাগ করুন।’ কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, অবকাঠামোগত সমস্যা এবং বামাকোর নিরাপত্তা পরিস্থিতির ‘অনিশ্চয়তা’। বুধবার অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও ইতালিও তাদের নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব দেশ ছাড়তে বলেছে।

মালির ভেতরের ও বাইরের পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয় সফল অভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে। ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর এটি হবে ষষ্ঠ অভ্যুত্থান।

মালির সাবেক এক মন্ত্রী গার্ডিয়ানকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি নাটকীয় কথা শোনাতে চাই না, কিন্তু দেশটা আমাদের চোখের সামনে ধসে পড়ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ক্ষমতার আরেকটি রদবদল হলে আমি অবাক হব না।’ তিনি যোগ করেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সাহেল অঞ্চলে একটি অভ্যুত্থান ঘটবে; মালি প্রথমে পড়বে, তারপর ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মতো ডমিনোর মতো একের পর এক দেশ পড়ে যাবে।’

সাহেল অঞ্চলের জিহাদি গোষ্ঠীগুলো তাদের আধিপত্য বিস্তার করছে। বিভক্ত অঞ্চল কি প্রতিরোধ করতে পারবে?

মালি দুই সপ্তাহ ধরে জ্বালানিসংকটে ভুগছে। কারণ, জেএনআইএম আইভরি কোস্ট, মৌরিতানিয়া এবং সেনেগাল থেকে আসা ট্রাকগুলো অবরোধ করে রেখেছে। চালক এবং সৈন্যদের হয় অপহরণ করা হয়েছে, নয় হত্যা করা হয়েছে—কিছু ক্ষেত্রে দুটোই ঘটেছে।

আরও পড়ুনযে কারণে সুদানে আজ রক্তক্ষয়ী সংঘাত১৯ এপ্রিল ২০২৩

ভূমিবেষ্টিত দেশ মালি আমদানিনির্ভর অর্থনীতির ওপর টিকে আছে। জ্বালানি ট্রাক না থাকায় বামাকোর অধিকাংশ এলাকায় জীবনযাত্রা থমকে গেছে। ফিলিং স্টেশনে লম্বা লাইন এখন সাধারণ দৃশ্য। শহরের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। দোকানপাট ও সুপারমার্কেট বন্ধ, অনেক মানুষ ঘর থেকে বেরোতে পারছে না, খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে। স্কুলগুলো অন্তত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ।

জার্মান থিঙ্কট্যাংক কোনরাড আদেনায়ের ফাউন্ডেশনের সাহেল প্রোগ্রামের বামাকোভিত্তিক প্রধান উলফ লেসিং বলেন, পরের সপ্তাহটাই হতে পারে বর্তমান জান্তার জন্য নির্ধারক সময়। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, পরের সপ্তাহ খুব খারাপ হবে। কারণ, বর্তমান মজুত শেষ হয়ে যাবে। রাজধানীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুনরায় সরবরাহ করার উপায় দেখা যাচ্ছে না।’

গার্ডিয়ান যেসব বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে, অনেকে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ, সরকার সমালোচনা সহ্য করছে না।

ইমাম দিকোর চাওয়া শরিয়া শাসন

উলফ লেসিং বলেন, ‘এখনো কেউ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে না। কারণ, মানুষ জানে যদি এই সরকার পতন হয়, তাহলে এর পরের সরকার হবে ইসলামপন্থী এবং এই পরিস্থিতি বর্তমান সরকারের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করছে।’

জুন ২০২০ সালে নাগরিক সমাজ, ধর্মীয় সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো ‘জুন ৫ মুভমেন্ট–র‍্যালি অব প্যাট্রিয়াটিক ফোর্সেস’ (এম ৫–আরএফপি) নামে জোট গঠন করে দুর্নীতি ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে গণবিক্ষোভ শুরু করে। লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা সরকারের পতন।

এ জোটের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিদের একজন ছিলেন প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ইমাম মাহমুদ দিকো, যিনি ১৯৯১ সালে প্রেসিডেন্ট মুসা ত্রাওরেকে উৎখাতে ভূমিকা রাখেন। দিকোর সংগঠিত আন্দোলন কেইতা সরকারের পতনে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

ইকোভাসের (আফ্রিকার একটি আঞ্চলিক জোট) সঙ্গে এককেইতা বলেন, ‘ইমাম দিকো চান মালি ইসলামি শরিয়াহ আইনের দেশ হোক।’ কথা শুনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই মাসের মধ্যে তরুণ ক্যাপ্টেন আসিমি গোয়িতার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে সংসদের পরিবর্তে ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এনটিসি) গঠন করে। এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের ফলে গোয়িতা রাষ্ট্রপ্রধান হন। কিন্তু জান্তার প্রতিশ্রুতির বেশির ভাগই পূরণ হয়নি। জান্তার অন্যতম নেতা কর্নেল মালিক দিয়াও–এর নেতৃত্বাধীন এনটিসি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার কথা দিয়েও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে বিদ্রোহে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে; আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে মোট নিহত ১৭ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশ ২০২০ সালের পর। অপহরণের মুক্তিপণ থেকে অর্থ পাওয়ায় জেএনআইএম এখন বেনিন, নাইজেরিয়া পর্যন্ত বিস্তার করছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, ভাড়াটে বাহিনী ও সরকার–সমর্থক মিলিশিয়া গণগ্রেপ্তার ও নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত।

পথের শেষ কোথায়?

মালির জান্তা সরকার প্রায় নিঃসঙ্গ হয়ে গেছে। বুরকিনা ফাসো ও নাইজারের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার চুক্তি করেছে। কিন্তু তার ফল কী হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ইকোভাসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করায় তারা এ অঞ্চলের সামরিক সহায়তাও পাচ্ছে না।

বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের উপস্থিতি কমে আসছে; জান্তা তাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে অনেক কর্মীকে বহিষ্কার করেছে। সেনাবাহিনীর মধ্যেও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। প্রথম অভ্যুত্থানে জড়িত পাঁচ কর্নেলের মধ্যে দুজন—দিয়াও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাদিও কামারা—আসিমি গোয়িতার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় আছেন।

এদিকে দিকো যিনি সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ২০২৩ সালে কূটনৈতিক পাসপোর্ট হারিয়ে আলজেরিয়ায় নির্বাসনে আছেন, দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছু জেএনআইএম সদস্য চাইছে নির্বাসিত থাকা ইমাম দিকো দেশে ফিরুক, যাতে তারা মালির সরকারের বদলে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। এটাই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য—মালিকে একটি ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত করা এবং তাঁরা এখন খুব কাছাকাছি।

এরোমো এগবেজুলে গার্ডিয়ানের পশ্চিম আফ্রিকার সংবাদদাতা

দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ বাতিল: এটা ভুল সিদ্ধান্ত
  • আল-কায়েদাপন্থী সংগঠন যেভাবে মালি দখলের দ্বারপ্রান্তে