নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লট যেন রোববার রাতে সাক্ষী রইল এক সাহসী ও জমজমাট লড়াইয়ের।যেখানে ১০ জনের দল নিয়েও ফুটবল মাঠে রাজকীয় প্রতাপ দেখাল রিয়াল মাদ্রিদ। নতুন কোচ জাভি আলোনসোর অধীনে এই প্রথম জয় তুলে নিল ইউরোপিয়ান কিংবদন্তিরা। আর সেই সঙ্গে ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে যাওয়ার পথেও এগিয়ে থাকল তারা।
এদিন ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই ম্যাচের গতি বদলে যায়। রাউল আসেন্সিও লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। একজন কম নিয়ে খেলতে নামা রিয়াল তখন যেন হোঁচট খাওয়া এক রথ। যার হাল ধরেন বেলজিয়ান প্রাচীর থিবো কোর্তোয়া। একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে দলকে টিকিয়ে রাখেন তিনি। আর সেই প্রতিরোধই পরে হয়ে ওঠে বিজয়ের ভিত।
পাচুকার একের পর এক আক্রমণ সামলে উঠেই ৩৫ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে দলকে এগিয়ে দেন ইংলিশ সেনসেশন জুদ বেলিংহ্যাম। ডানদিক থেকে ভিনিসিউস জুনিয়রের পাস ধরে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে দুর্দান্ত বাঁ পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। এরপর আর থামেনি রিয়াল।
মাত্র সাত মিনিট পরেই তরুণ তুর্কি মিডফিল্ডার আর্দা গিলের করেন দ্বিতীয় গোল। ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডের পাস থেকে গার্সিয়ার সহায়তায় নিচু শটে গোলটি করেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও কোর্তোয়ার দুর্দান্ত সেভের প্রদর্শনী চলতেই থাকে। কেনেদির দুটি গোলমুখী প্রচেষ্টা বাঁচিয়ে দলকে সুরক্ষায় রাখেন এই গোলরক্ষক। এরপর আসে রিয়ালের তৃতীয় গোল। ৭০ মিনিটে ভালভের্দে দুর্দান্ত ভলিতে ম্যাচে নিজের নাম লেখান স্কোরবোর্ডে। ভিনিসিউস ও ব্রাহিম দিয়াসের সমন্বয় থেকে তৈরি হয় সেই গোল।
৮০ মিনিটে এলিয়াস মন্তিয়েলের একটি দূরপাল্লার শট রিয়ালের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ালে ব্যবধান কমে দাঁড়ায় ৩-১। তবে সেটি ম্যাচের ফলাফলে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি
এই জয়ে ২ ম্যাচে ১ জয় ও ১ ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষে এখন রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের পেছনে ৩ পয়েন্ট নিয়ে রেড বুল সালসবুর্গ ও ১ পয়েন্ট নিয়ে আল হিলাল। দুই ম্যাচ হেরে বিদায়ের সুর বাজতে শুরু করেছে পাচুকার জন্য।
জাভি আলোনসোর কোচিংয়ে প্রথম জয় নিশ্চয়ই রিয়াল সমর্থকদের জন্য স্বস্তির বার্তা। কিলিয়ান এমবাপ্পে না থাকলেও দল যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তাতে ভবিষ্যতের জন্য আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছে বার্নাব্যু শিবিরে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় বছর পর আবার সভাপতি হচ্ছেন সৌরভ
ভারতীয় ক্রিকেটের রাজপুত্র সৌরভ গাঙ্গুলী ফের নিজের ঘরেই ফিরছেন। ছয় বছর আগে যেখান থেকে ক্রিকেট প্রশাসনে পা রাখেন, সেই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) শীর্ষ পদে আবার দেখা যাবে তাকে। সাবেক এই অধিনায়ক চলতি বছরই সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। এমনটাই নিশ্চিত করেছেন তিনি নিজেই।
‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌরভ বলেন, ‘‘তিনি এবারের সিএবি নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেবেন। এমনকি সংগঠনের ভেতরে থেকে জানা গেছে, কোনো নির্বাচন ছাড়াই সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করার চিন্তা চলছে। বর্তমান সভাপতি, সৌরভের ভাই স্নেহাশীষ গাঙ্গুলীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পদটি শূন্য হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ ছয় বছর পর আবার বেঙ্গল ক্রিকেটের হাল ধরতে চলেছেন সৌরভ।
আগামী ১৪ আগস্ট সিএবির অ্যাপেক্স কাউন্সিলের চূড়ান্ত সভা এবং ২০ সেপ্টেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যেই সৌরভের নাম ঘিরে তৈরি হয়েছে আলোচনার ঝড়। প্রশাসনের অভিজ্ঞতা তো আছেই, সঙ্গে রয়েছে তার অতীত সফল নেতৃত্বের নজিরও।
আরো পড়ুন:
সৌরভের বায়োপিক: রাজকুমার বললেন, নার্ভাস লাগছে
দুর্ঘটনার কবলে সৌরভ গাঙ্গুলির গাড়ি বহর
২০১৫ সালে প্রথমে সিএবির সচিব, এরপর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৌরভ। তার হাত ধরেই বেঙ্গল ক্রিকেটে আসে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া। উন্নত কোচিং স্ট্রাকচার, ট্যালেন্ট হান্ট, রঞ্জি ট্রফিতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স; সব কিছুতেই ছিল তার প্রত্যক্ষ নজরদারি। এরপর ২০১৯ সালে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)-এর সভাপতি হন এবং দেশীয় ক্রিকেটকে পৌঁছে দেন নতুন উচ্চতায়।
বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে সৌরভের মেয়াদকালে ভারত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ একটি ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি (এনসিএ) পায়, যেখানে তরুণ ও চোটপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। তার নেতৃত্বেই আইপিএলের সম্প্রচার চুক্তি হয় ইতিহাস গড়া। যেখানে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদে বিসিসিআই রাজস্ব পেয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
আবার যখন তিনি সিএবিতে ফিরছেন, প্রশ্ন উঠছে—বেঙ্গল ক্রিকেট কী নতুন করে জাগরণ দেখবে? সম্ভাবনার দরজা যেমন উন্মুক্ত, তেমনি প্রত্যাশার চাপও কম নয়। তবে যাকে ঘিরে এত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, সেই সৌরভের ওপর আস্থা রাখতেই চাইছে ক্রিকেট মহল।
ঢাকা/আমিনুল