মহাকাশযান পরিচালনার মতো জটিল কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সক্ষমতা যাচাই করে আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছেন একদল গবেষক। চ্যাটজিপিটির মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের কার্যকারিতা যাচাই করতে সম্প্রতি গবেষকেরা একটি সিমুলেশন পরিচালনা করেন। সেই সিমুলেশনে সফলভাবে মহাকাশযান পরিচালনা করেছে চ্যাটজিপিটি। এর ফলে ভবিষ্যতে স্বয়ংক্রিয় মহাকাশ অভিযানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে।

গবেষণার শুরুতে চ্যাটজিপিটিকে একটি নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর মডেলটি একের পর এক পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকর সাড়া দিতে থাকে। পুরো সিমুলেশন পরীক্ষায় চ্যাটজিপিটির সক্ষমতা ছিল বেশ স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য। গবেষকদের ধারণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রাথমিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য এটি একটি কার্যকর পরীক্ষাগার হিসেবে কাজ করেছে।

গবেষকদের তথ্যমতে, প্রচলিত পদ্ধতিতে মহাকাশযান পরিচালনার জন্য যে ধরনের নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা তৈরি করতে হয়, তা সময়সাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজভিত্তিক মডেল ব্যবহার করে তুলনামূলকভাবে কম সময়ে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে শুধু দূর মহাকাশ অভিযানে সুবিধা মিলবে তা নয়, এটি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা অসংখ্য উপগ্রহ পরিচালনার ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে। একই সঙ্গে অজানা গ্রহে নমুনা সংগ্রহ, তথ্য বিশ্লেষণ ও বসবাসযোগ্যতা নিরূপণের মতো জটিল কাজগুলো আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা যাবে।

গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, এখনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন চ্যাটবট বাস্তব অভিযানে প্রয়োগের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। ভবিষ্যতে এর ব্যবহার যেন নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য হয়, সে জন্য এখনই নৈতিকতা, নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তাবিষয়ক দিকগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।

সূত্র: বিজিআর ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত ব যবহ র ক র যকর

এছাড়াও পড়ুন:

অনলাইন জুয়ায় জড়িতদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার চিন্তা

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।

সভায় ফয়েজ আহমদ বলেন, দেশকে অনলাইন জুয়া থেকে মুক্ত করতে হলে জুয়ার চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে লিংকের গতি ধীর করা এবং যে নম্বর বা এমএফএস (মোবাইলে আর্থিক সেবা) অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাচাইয়ের পর এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। তবে ন্যায্যতা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকেওয়াইসি (গ্রাহকের পরিচয় যাচাই) সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন

কমিশনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া বন্ধে বিটিআরসি থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মেইল দেওয়া শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো কীভাবে তাদের ওয়েব ব্রাউজার ও এডসেন্স সেটআপ করবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ভেটিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভেটিং শেষে তা সংশ্লিষ্ট সব গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত গাইডলাইনও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটা অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হবে।

সভায় তিনি আরও জানান, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস হিসাব ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।

সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছে, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।

সভায় অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়।

সভায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ