মহাকাশযান চালানোর পরীক্ষায় চমক দেখাল চ্যাটজিপিটি
Published: 8th, July 2025 GMT
মহাকাশযান পরিচালনার মতো জটিল কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সক্ষমতা যাচাই করে আশাব্যঞ্জক ফল পেয়েছেন একদল গবেষক। চ্যাটজিপিটির মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের কার্যকারিতা যাচাই করতে সম্প্রতি গবেষকেরা একটি সিমুলেশন পরিচালনা করেন। সেই সিমুলেশনে সফলভাবে মহাকাশযান পরিচালনা করেছে চ্যাটজিপিটি। এর ফলে ভবিষ্যতে স্বয়ংক্রিয় মহাকাশ অভিযানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে।
গবেষণার শুরুতে চ্যাটজিপিটিকে একটি নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর মডেলটি একের পর এক পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকর সাড়া দিতে থাকে। পুরো সিমুলেশন পরীক্ষায় চ্যাটজিপিটির সক্ষমতা ছিল বেশ স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য। গবেষকদের ধারণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রাথমিক সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য এটি একটি কার্যকর পরীক্ষাগার হিসেবে কাজ করেছে।
গবেষকদের তথ্যমতে, প্রচলিত পদ্ধতিতে মহাকাশযান পরিচালনার জন্য যে ধরনের নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা তৈরি করতে হয়, তা সময়সাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজভিত্তিক মডেল ব্যবহার করে তুলনামূলকভাবে কম সময়ে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে শুধু দূর মহাকাশ অভিযানে সুবিধা মিলবে তা নয়, এটি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা অসংখ্য উপগ্রহ পরিচালনার ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে। একই সঙ্গে অজানা গ্রহে নমুনা সংগ্রহ, তথ্য বিশ্লেষণ ও বসবাসযোগ্যতা নিরূপণের মতো জটিল কাজগুলো আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা যাবে।
গবেষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, এখনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন চ্যাটবট বাস্তব অভিযানে প্রয়োগের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। ভবিষ্যতে এর ব্যবহার যেন নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য হয়, সে জন্য এখনই নৈতিকতা, নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তাবিষয়ক দিকগুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।
সূত্র: বিজিআর ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত ব যবহ র ক র যকর
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচার’ বৃদ্ধি পাচ্ছে: রিজভী
প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচারের’ প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নানাবিধ সামাজিক অপরাধের বিভিন্ন মাত্রার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই মব কালচারের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে মব কালচারের নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে। আবার অন্যদিকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল বিএনপির নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, অপতৎপরতা, কৃত্রিমভাবে তৈরি সামাজিক অশান্তি গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা এবং নির্বাচন পেছানোর সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা বলে জনগণ মনে করে। শেখ হাসিনার আমলে অদ্ভুত উন্নয়নের বয়ানের মতো এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরণের বয়ান দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দলের ভেতরে থেকে অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে বহিষ্কার, অব্যাহতি প্রদান, পদ স্থগিত, কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, দলের পক্ষ থেকে এমন চলমান সাংগঠনিক ব্যবস্থার বিষয়ে গণমাধ্যমে খুব একটা উল্লেখ করা হয়নি। উপরন্তু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভূমিকা রহস্যজনক। দলের পক্ষ থেকে বারবার অপরাধী ও বিশৃঙ্খলাকারিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকছে। দুস্কৃতিকারিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দল থেকে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও প্রশাসন কোন সহযোগিতা করছে না।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলকাঠি নাড়ছেন বলে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সমাজ সংস্কৃতি, সভ্য আচরণ বিপন্ন হয়ে পড়বে। প্রশাসনিক এই নিষ্ক্রিয়তার কারণে জনগণের এখন জীবনমরণের প্রশ্ন।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের স্থায়ী পুনরুজ্জীবন ও ঐতিহাসিক সার্থকতা নির্ভর করছে রাষ্ট্র ও সমাজে শান্তি ও স্থিতির ওপর। আর এ ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশাসন খুবই জরুরি। কিন্তু আওয়ামী আমলের কালো টাকা ও তাদের দোসরদের ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ তৎপরতার কারণে দুস্কৃতিকারিরা আশকারা পাচ্ছে এবং সমাজে নৈরাজ্য তৈরীর সম্ভাবনা সৃষ্টির আলামত দেখা যাচ্ছে।’’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার মূলমন্ত্র বুকে ধারণ করে এই দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গণতন্ত্রের মূল নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেই শত প্রতিকুলতা ও ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। স্বজাতির সব ধর্ম ও বর্ণের সজ্জন মানুষ ও বিভিন্ন শ্রণি-পেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা এই দলের সদস্য হতে পারেন। সমাজবিরোধী কোন ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান এই দল বরদাস্ত করে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু দল যখনই এ ধরনের ঘটনা অবহিত হয় তখনই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধা করেনি। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই গণতান্ত্রিক সংবিধান ও সুশাসনের জন্য আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এরজন্য নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করে এসেছে। এই দল মনে করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে নেতৃস্থানীয় মানুষদের যোগ্যতা, দক্ষতা, ন্যায়পরায়ণতা, সৎ ও মানবিক গুণাবলী থাকা ব্যক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই উল্লিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির সমবেত ধ্বণীই হচ্ছে সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।’