রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় গণসংহতি আন্দোলন
Published: 10th, July 2025 GMT
রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগকে যুক্ত করার কারণে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে এখানে যুক্ত করার কারণে কেবল বিচার বিভাগ দলীয়করণ হয়নি, পুরো বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার মধ্যে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছিল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতিকে শেষ বিকল্প হিসেবে ত্রয়োদশ সংশোধনীতে রাখা হয়েছিল। এর ব্যবহারও তাঁরা দেখেছেন। সে ব্যবহারে রাষ্ট্রপ্রধানকেও একটা বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে আরেকটা গুরুতর সংকট তৈরি করা হয়। এ কারণে তাঁরা তাঁদের দিক থেকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগ—এই দুই প্রতিষ্ঠানকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জায়গায় যাওয়া দরকার।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার মূলত নির্বাচন পরিচালনা করবে বলে উল্লেখ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী। তিনি বলেন, ‘আর এই নির্বাচনব্যবস্থাটা রাজনৈতিক বিষয়। কাজেই এই রাজনৈতিক বিষয়ের ফয়সালা রাজনৈতিক প্রতিনিধি, অর্থাৎ জনপ্রতিনিধিদের হাতে থাকা দরকার। নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ গঠিত হলে সেখানকার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, সে বিষয়টি তারা নির্ধারণ করবে।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, এখন একটি সাধারণ ঐকমত্য তৈরি হয়েছে যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় সংস্কার প্রয়োজন। বেশির ভাগ দল একমত যে প্রধান বিচারপতিকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া উচিত। তবে মতানৈক্য রয়েছে এই নিয়ে যে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকেই সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে, নাকি আপিল বিভাগের দুজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতির মধ্যে একজনকে বাছাই করার সুযোগ থাকবে রাষ্ট্রপতির।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলন কী প্রস্তাব দিয়েছে, তা উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি যেন আপিল বিভাগের দুজন শীর্ষস্থানীয় বিচারপতির মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে নিয়োগের এখতিয়ার পান। এটি রাষ্ট্রের ক্ষমতার কাঠামোয় ভারসাম্য নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। গত ১৫ বছরে যেভাবে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে, সেই বাস্তবতায় প্রস্তাবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত প রস ত ব র জন ত ক ব চ রপত
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবিধানিক কাঠামো তৈরি করা কেন জরুরি
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সৎ, যোগ্য, সুনামসম্পন্ন ও দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সাংবিধানিক ও আইনের দ্বারা সৃষ্ট বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ লক্ষ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে ‘জাতীয় কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল’ (এনসিসি) নামের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত এনসিসির সদস্যরা হবেন: ১. রাষ্ট্রপতি, ২. প্রধানমন্ত্রী, ৩. বিরোধীদলীয় নেতা, ৪. নিম্নকক্ষের স্পিকার, ৫. উচ্চকক্ষের স্পিকার, ৬. প্রধান বিচারপতি, ৭. নিম্নকক্ষের ডেপুটি স্পিকার, ৮. উচ্চকক্ষের ডেপুটি স্পিকার এবং ৯. সংসদের দুই কক্ষের সরকারি ও বিরোধীদলীয় সদস্যদের বাইরে থেকে নির্বাচিত একজন সদস্য, যিনি উভয় কক্ষের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।
শুরুতে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, তথ্য কমিশন এবং প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি তিন বাহিনীর প্রধান ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে এনসিসির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের প্রস্তাব করা হলেও দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার পর প্রস্তাবিত কমিশনের নাম এনসিসির পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি’ করার সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয় তিন বাহিনীর প্রধান ও অ্যাটর্নি জেনারেলের নিয়োগ এই প্রস্তাবিত কমিটির আওতার বাইরে রাখার।
পরিবর্তিত প্রস্তাবের পক্ষে অধিকাংশ দলের সমর্থন থাকলেও কিছু দল এর সঙ্গে দ্বিমত করে। তাদের যুক্তি হলো, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য এ ধরনের একটি সাংবিধানিক কাঠামো সৃষ্টি করা হলে তা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করবে। এর পরিবর্তে তারা আইনের মাধ্যমে পৃথক অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রদানের প্রস্তাব করে। তাদের এ যুক্তি শুধু অসারই নয়, এটির ভয়াবহ পরিণতির আমরা সবাই ভুক্তভোগী।
নির্বাচন কমিশনের কথা ধরা যাক। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এটি নির্বাহী বিভাগের অংশ নয়। বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধানের চতুর্থ ভাগ ‘নির্বাহী বিভাগ’–সম্পর্কিত এবং রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা, স্থানীয় শাসন, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ ও অ্যাটর্নি জেনারেল এর অন্তর্ভুক্ত।
পক্ষান্তরে সপ্তম ভাগ ‘নির্বাচন’–সংক্রান্ত, যাতে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগবিষয়ক অনুচ্ছেদ ১১৮ অন্তর্ভুক্ত। নির্বাচন কমিশন যে নির্বাহী বিভাগের অংশ নয়, তা সুস্পষ্ট হয় সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ থেকে, যাতে ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে’ বলা হয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগসংক্রান্ত কোনো নতুন বিধান কোনোভাবেই নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করবে না। কারণ, নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের অংশই নয়।
নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের অধীন না হওয়া সত্ত্বেও ঐতিহাসিকভাবে নির্বাহী বিভাগ প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে আসছে, যাঁদের অনেকেই ছিলেন চরমভাবে বিতর্কিত। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৫ সালের ২৫ মে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এম এ আজিজকে ভোটার তালিকা–সম্পর্কিত বিতর্কের কারণে পদত্যাগ করতে হয়। পরবর্তী সময়ে উচ্চ আদালত বিচারপতি আজিজের নিয়োগই অসাংবিধানিক বলে রায় দেন।
নিয়োগ–সম্পর্কিত বিতর্কের প্রেক্ষাপটে একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবির মুখে ২০১১ সালের ডিসেম্বর ও ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন, যাতে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টিসহ ২৩টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে ২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চার সদস্যের একটি ‘অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন করা হয়, যার সদস্য ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিরীক্ষক আহমেদ আতাউল হাকিম ও সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এ টি এম আহমেদুল হক চৌধুরী।
দুর্ভাগ্যবশত বিতর্কিত ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগে এড়ানোর জন্য গঠিত অনুসন্ধান কমিটিতেই ছিলেন বিতর্কিত ও পক্ষপাতদুষ্ট সদস্য। পাঠকদের অনেকের জানার কথা, সাবেক বিচারপতি নূরুজ্জামান তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্যানেলে ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং জুন মাসে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির জন্য তাঁর ১০ বছর হাইকোর্টে ওকালতি করার অভিজ্ঞতা ছিল কি না, তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। এই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে ২০১২ সালে রকিব কমিশন নিয়োগ পায়, যাঁদের বদৌলতে আমরা ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন এবং ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘নির্বাচিত’ সংসদ সদস্য পেয়েছি।
অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে চরম পক্ষপাতদুষ্ট ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রদানের নগ্নতম দৃষ্টান্ত হলো নূরুল হুদা কমিশন। এবারও নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ৩১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন। ২০১৬ সালে ১৭ ডিসেম্বর প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংলাপের সূচনা হয়।
সংলাপের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত একটি অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে ‘জনতার মঞ্চে’ অংশ নেওয়া এবং বিএনপির আমলে যুগ্ম সচিব হিসেবে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো নূরুল হুদার নেতৃত্বে একটি পাতানো নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেওয়া হয়। এ কমিশনই আমাদের ২০১৮ সালের ‘নৈশ ভোট’ উপহার দেয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই কলঙ্কিত নির্বাচনে ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছিল, বিএনপি ১ হাজার ১৭৭টি কেন্দ্রে শূন্য ভোট পেয়েছিল, এমনকি আওয়ামী লীগও দুটি কেন্দ্রে শূন্য ভোট পেয়েছিল।
একইভাবে ২০২২ সালে একটি বিতর্কিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ প্রণয়ন করে এর অধীন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত একটি অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে চরমভাবে বিতর্কিত আউয়াল কমিশন গঠিত হয়, যার নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি একতরফা তথাকথিত ‘আমি আর ডামির’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবারও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইনের মতো পক্ষপাতদুষ্ট ব্যক্তি, যিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন, অনুসন্ধান কমিটির সদস্য ছিলেন।
এটি সুস্পষ্ট যে নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিকভাবে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান নির্বাহী বিভাগের অংশ নয়। তাই এতে এনসিসির মতো একটি সাংবিধানিক কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করলে কোনোভাবেই নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হবে না; বরং রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিলে আন্তদলীয় সম্প্রীতির একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। ফলে রাজপথের আন্দোলনের পরিবর্তে আলোচনার টেবিলে বসে সমস্যা সমাধানের একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিও আমাদের দেশে গড়ে উঠবে।
অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আরও সুস্পষ্ট যে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকারভাবে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার সর্বজনীন আকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্রপতির আহ্বানে একাধিকবারের সর্বদলীয় সংলাপ সফল হয়নি। এমনকি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে নিয়োগ প্রদান করেও নির্বাহী বিভাগের ন্যক্কারজনক আচরণ বন্ধ করা যায়নি। এ কারণেই ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের মতো সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি’র মতো একটি সাংবিধানিক কাঠামোর মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ধরনের নিয়োগ এসব প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। কারণ, এসব নিয়োগ হবে রাষ্ট্রের সব অঙ্গের পদস্থ ব্যক্তিদের সম্মতিতে ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এবং এ ধরনের সাংবিধানিক কাঠামো সাধারণ আইনের মতো সংসদের নিতান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েও বাতিল বা সংশোধন করা যাবে না।
● ড. বদিউল আলম মজুমদার সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)
* মতামত লেখকের নিজস্ব