চার লাখ শিক্ষককে এআই প্রশিক্ষণ দেবে ওপেনএআই
Published: 12th, July 2025 GMT
শিক্ষকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণ দেবে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর এআই ইনস্ট্রাকশন’ নামের এই কর্মসূচির আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চার লাখ শিক্ষককে এআইবিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষকদের হালনাগাদ প্রযুক্তির এআই প্রশিক্ষণ দিতে ওপেনএআইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমেরিকান ফেডারেশন অব টিচার্স (এএফটি), মাইক্রোসফট, অ্যানথ্রপিক এবং ইউনাইটেড ফেডারেশন অব টিচার্স।
ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষককে শিক্ষা কার্যক্রমে এআই ব্যবহারের কৌশল শেখানো হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নিউইয়র্কে চালু করা হবে মূল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেখান থেকে দেশব্যাপী আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
নতুন এ উদ্যোগের বিষয়ে ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান বলেন, ‘শিক্ষকেরাই পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। শ্রেণিকক্ষে এআই ব্যবহারের পথ শিক্ষকদের নেতৃত্বেই তৈরি করতে হবে। আমরা এই যাত্রায় তাঁদের পাশে থাকতে চাই।’ এএফটির প্রেসিডেন্ট র্যান্ডি ওয়েইনগার্টেন বলেন, ‘এআই প্রযুক্তির সম্ভাবনা যেমন ব্যাপক, তেমনি রয়েছে অনেক জটিলতা ও ঝুঁকিও। আমাদের দায়িত্ব হলো এই প্রযুক্তি যেন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।’
সম্প্রতি গ্যালাপ পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ১০ জন শিক্ষকের অন্তত ৬ জন এআই টুল ব্যবহার করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে জানান, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা প্রতি সপ্তাহে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত সময় সাশ্রয় করতে পারছেন।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
দুনিয়া কাঁপানো চ্যাটজিপিটির জন্মদিন আজ
প্রযুক্তি–দুনিয়াকে পুরোপুরি বদলে দেওয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’-এর জন্মদিন আজ। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর যাত্রা শুরু করা চ্যাটজিপিটি চালুর মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। বর্তমানে বয়স-পেশানির্বিশেষে অনেকেই চ্যাটজিপিটি নিয়মিত ব্যবহার করেন, ফলে মাত্র তিন বছরের মধ্যে ৮০ কোটির বেশি সক্রিয় সাপ্তাহিক ব্যবহারকারীর মাইলফলক অর্জন করেছে চ্যাটজিপিটি।
ওপেনএআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার পর থেকে প্রযুক্তি, সমাজ ও অর্থনীতিতে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে। এটি কেবল একটি চ্যাটবট নয়; বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এখন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে এনে দেওয়া এক যুগান্তকারী হাতিয়ার। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের তৈরি এআই চ্যাটবট বাজারে আনলেও চ্যাটজিপিটি নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে।
চ্যাটজিপিটির মূল ভিত্তি হলো বিশাল তথ্যভান্ডারযুক্ত জিপিটি কাঠামো, যা লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের (এলএলএম) মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। তাই চ্যাটজিপিটি মানুষের মতো স্বাভাবিক ভাষায় কথোপকথনের পাশাপাশি কোড লেখা, জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এবং সৃজনশীল লেখা তৈরি করতে পারে। দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের কারণে বর্তমানে চ্যাটজিপিটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশিবার ভিজিট করা ওয়েবসাইটের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে চ্যাটজিপিটি।
চ্যাটজিপিটি যেকোনো বার্তার উত্তর দ্রুত ও নির্ভুলভাবে দিতে পারে। নিজ থেকে বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখে থাকে। নির্ভুল শব্দচয়ন ও ভাষা ব্যবহার করায় চ্যাটজিপিটির লেখা মানুষের মতোই হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের জন্য ভার্চ্যুয়াল শিক্ষক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি সৃজনশীল বিষয়বস্তু তৈরিসহ দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণেও ভূমিকা রাখছে।
মানবজাতির কল্যাণে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ওপেনএআই’। সংস্থাটির উদ্যোক্তা সংখ্যা মোট ১১ জন, যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন গ্রেগ ব্রকম্যান (বর্তমান প্রেসিডেন্ট), স্যাম অল্টম্যান (বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) ও ইলন মাস্ক (পেপাল, টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা) অন্যতম। পরে কোম্পানি থেকে সরে দাঁড়ান ইলন মাস্ক, কিন্তু অল্টম্যান থেকে যান। তাঁর হাত ধরেই আসে চ্যাটজিপিটি।
সান ফ্রান্সসিসকোতে অবস্থিত ওপেনএআই শুরু থেকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করলেও গত অক্টোবর মাসে প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য ৫০০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। ওপেনএআইয়ের ২৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মাইক্রোসফটের দখলে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৩৫ বিলিয়ন ডলার।