মেহেরপুরে টানা বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের খেতে পানি জমে গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। উৎপাদন এলাকাতেই প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

আজ শনিবার সকালে মেহেরপুর শহরের কাঁচাবাজার, হোটেল বাজারের কাঁচা পট্টি, গাংনী পৌর শহরের তহবাজার ও মুজিবনগরের কেদারগঞ্জ বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

তিন দিন ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে বেশ কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে, তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা বিক্রেতারা জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। উৎপাদক কৃষকদের কাছ থেকেই বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে, ফলে খুচরা বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে কৃষকেরা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে মরিচগাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে, ফুল ঝরে পড়ছে। জমিতে পানি জমে থাকায় গাছ মারা যাচ্ছে। ফলে ফলন কমে গেছে, দাম বেশি হলেও তারা লোকসানে পড়েছেন।

গাংনী উপজেলার তহবাজারের ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, আজ সকালে কাচা মরিচ পাইকারি কিনতে হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে ৩০০ টাকা পড়বে। অতিমাত্রার বৃষ্টি হলে কাঁচা মরিচের গাছ মরে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে মরিচের খেত প্যাপলব্লাস রোগে আক্রান্ত হয়ে পাতা কুকড়িয়ে যায়। এতে সেসব জমিতে কাঁচা মরিচ ধরে না।

মেহেরপুর শহরের খুচরা ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচ ছিল ৫০ টাকা কেজি। এখন কিনতে হচ্ছে ৩০০ টাকায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে কেউ নেই, না হলে এতটা দাম বাড়ত না। পাইকারি ব্যবসায়ী লিয়াকত হোসেন বলেন, মাঠে মরিচের বেশির ভাগ গাছ শুকিয়ে গেছে। যে কয়েকটি জায়গায় মরিচখেত এখনো টিকে আছে, সেগুলোর মরিচই বাজারে আসছে, তাই দাম বেশি।

গাংনী উপজেলার মাইলমারি গ্রামের কৃষক সরাফত হোসেন, ফকির মিয়া ও সুরাত মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে বেশির ভাগ কৃষকেরা ৩ থেকে ৪ বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করেছেন। টানা বৃষ্টির কারণে অনেক মরিচগাছের পাতা কুঁকড়ে গেছে। এতে গাছের ফুল ঝরে যাচ্ছে। ফলে মরিচও কম ধরছে। এবার দাম কিছু বেশি হলেও ফলন কম হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুল আলম বলেন, কাঁচা মরিচ সাধারণত উঁচু জমিতে চাষ করতে হয়। তবে টানা বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকলে গাছ মরে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। মরিচখেতে দ্রুত ছত্রাকনাশক প্রয়োগের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৩০০ ট ক ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরে ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

মাদারীপুরে ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে আয়শা আক্তার (২২) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাদারীপুর পৌর ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আয়শা সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর-টেকেরহাট এলাকার জামাল শিকদারের মেয়ে। তিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ডিগ্রি পাস কোর্সের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও নিহত শিক্ষার্থীর স্বজনেরা জানান, বিকেলে মামাতো বোনকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে নিজ বাড়ি থেকে ইজিবাইকযোগে শহরের পুরান বাজার আসছিলেন আয়শা আক্তার। মাঝপথে সিহাব মাদবর ও মামুন খান নামের দুজন ইজিবাইকে ওঠেন। মাদারীপুর পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এলে ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে ঘটনাস্থলে আয়শার মৃত্যু হয়। তাঁর মরদেহ মাদারীপুর ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও তারপর হাসপাতালে যায় সদর মডেল থানার পুলিশ। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় সিহাব ও মামুনকে। পরে নিহত শিক্ষার্থীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

আটক সিহাব মাদবর আয়শার কলেজের বন্ধু।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই শিক্ষার্থীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এই ঘটনায় ইজিবাইকের দুই যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইজিবাইকচালককে শনাক্ত করা গেলে বিষয়টি আরও ভালোভাবে জানা যাবে। এ ছাড়া ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ