বিএনপির বিরুদ্ধে সকল মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে : সাখাওয়াত
Published: 12th, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, আমি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতি অন্তত সন্তুষ্ট। গত ফ্যাসিবাদ আন্দোলন সংগ্রামে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক নেতৃবৃন্দকে আমরা রাজপথে পেয়েছি।
তারা আমাদের বিএনপির সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম রাজপথে পালন করেছেন। আমি কেন্দ্রে বলেছি গত ফ্যাসিসবাদ আন্দোলনে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যেভাবে রাজপথে সক্রিয় ছিল ঠিক একইভাবে যদি অন্যান্য জেলা মনে করে নেতাকর্মীরা থাকতো তাহলে শেখ হাসিনার পতন আরো আগে হতো।
বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক দল নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্তর্ভুক্ত ৮টি ওয়ার্ড ও দুটি ইউনিয়নের কর্মীসভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল তিনটায় শহরের মিশন পাড়া হোসিয়ারি কমিউনিটি সেন্টারে এই কর্সমীসভার আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। আমরা বিগত পনেরোটি বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে জেল জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তার একটি কারণ সেটি হলো এই বাংলাদেশের জনগণের ভোটার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা।
সেই সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কিন্তু আজকে বাংলাদেশে ফ্যাসিস সরকারের বিদায় হয়েছে। আর বাংলাদেশের জনগণ এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতিষ্ঠা করেছে। অন্তবর্তী সরকারের এক বছর হল আজও পর্যন্ত কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। আমাদের দেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে যেহেতু বিএনপি প্রধান বিরোধী দল এমন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বাংলাদেশের মানুষের বেশিরভাগ ভোট পেয়ে বিএনপি নির্বাচিত হবে। সেই বিষয়টাকে একটি কুচক্রী মহল ঠিকভাবে নিচ্ছেনা তারা বিভিন্নভাবে দেশ ও দেশের জনগণের বিরুদ্ধে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করছে।
আজকে আপনারা দেখেছেন দু একটি রাজনৈতিক দল যারা কয়েকদিন আগে জন্মগ্রহণ করেছে তারা এখন বিএনপি'র বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলছেন। জামাত ইসলামও বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে। কিছু ইসলামী দলগুলো যারা আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল সেই ইসলামিক দলগুলো এখন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে কারণ একটাই কারণ তারা নির্বাচন গেলে হেরে যাবে। আর বিএনপিতে সর্বনিষ্ঠ আসন পেয়ে নির্বাচিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে বিএনপির ভিতরে এজেন্ট ঢুকে বিএনপিকে বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা বিভিন্ন অপকর্ম ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তারা দেশের গণতন্ত্রকে আবারো হরণ করতে চাচ্ছে। তারা বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপবাদ দিয়ে কাছে বিএনপির বদনাম করছে।
আপনারা কি সেটা চান যদি না চান তবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আপনাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিএনপির কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে নির্দেশনা এসেছে বিএনপির বদনাম হয় ও জনগণের দুর্বল এমন কোন কাজ করা যাবে না। যদি কেউ এ ধরনের কাজে সম্পৃক্ত থাকেন তাহলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
সে যেই হোক স্বেচ্ছাসেবক যুবদল ছাত্রদল বিএনপির। তাকে বহিষ্কারের পাশাপাশি আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে। দলের বদনাম হয় এমন কিছু করা যাবে না। আর বিএনপির বিরুদ্ধে সকল মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম হারুন ও সদস্য সচিব মাহবুব হাসান জুলহাসের যৌথ সঞ্চালনায় কর্মীসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় টিম প্রধান এম.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র ব র দ ধ দ শ র জনগণ র ব এনপ র জনগণ র ইসল ম র জপথ
এছাড়াও পড়ুন:
বিপ্লবী নয়, বর্তমান সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে গঠিত
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রেভল্যুশনারি গভর্নমেন্ট (বিপ্লবী সরকার) নয়, জাতীয় ঐকমত্যের ফল। বর্তমান সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে গঠিত সরকার। আর এই সরকারের বৈধতার ভিত্তি হলো প্রয়োজনীয়তা, জনগণের ইচ্ছা, জনগণের অভিপ্রায় ও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতপ্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানিতে জ্যেষ্ঠ তিন আইনজীবী এসব কথা বলেছেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ আজ মঙ্গলবার এ শুনানি গ্রহণ করেন। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল দিন রাখা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চান। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে ‘সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের’ বিষয়ে বলা আছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামতের প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ গত বছরের ডিসেম্বরে রিট করেন। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৩ জানুয়ারি রিটটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ।
লিভ টু আপিলের (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর গত ২ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়। এরপর ৬ নভেম্বর শুনানি নিয়ে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়। ১২ নভেম্বর বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে, সেদিন আদালত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়। এর আগে লিভ টু আপিলকারী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ নিজে শুনানি করেন।
এই মামলায় ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়েছেন লেখক ফিরোজ আহমেদ, যিনি সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন। আজ আদালতে তাঁর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কারিশমা জাহান ও বিদুয়ানুল করিম। এ মামলায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ইন্টারভেনার হন। জ্যেষ্ঠ এই দুই আইনজীবীও শুনানিতে অংশ নেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক উপস্থিত ছিলেন।
‘জনগণই এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে’বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ ছাড়া অন্য আরও অনেকভাবে ‘জাস্টিফায়েড’ বলে উল্লেখ করেছেন ফিরোজ আহমেদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সাংবিধানিকতা ১০৬ অনুচ্ছেদের যে মতামত তার ভিত্তিতে না। সাংবিধানিকতায় প্রয়োজনীয়তার একটা তত্ত্ব আছে, এটিও সাংবিধানিক আইনের অংশ। যদি গভীর সাংবিধানিক সংকট বা শূন্যতা তৈরি হয়, তখন তা পূরণ করতে হবে। গত বছরের ৫ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত সরকারবিহীন ছিল। কাজেই একটা দেশ সরকারবিহীন অবস্থায় চলতে পারে না। কাজেই একটা সরকার দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন ছিল। এই সরকারকে জনগণই দায়িত্ব দিয়েছে। কারণ জনগণ বলেছেন, তাঁরা চান। যাঁরা জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাঁরা সবাই এসে বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে একটা সরকার চাই। এর বৈধতার ভিত্তি হলো প্রয়োজনীয়তা, জনগণের চাহিদা ও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ। জনগণের আকাঙ্ক্ষাই এর ভিত্তি।
প্রবিশনাল সংবিধান প্রণয়নসহ আবেদনে (আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ) যে প্রার্থনা করা হয়েছে, সবই ক্রটিপূর্ণ বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। তিনি বলেন, আদালতের এ ধরনের এখতিয়ার নেই। আদালত সংসদকে সাধারণ আইন প্রণয়ণের নির্দেশও দিতে পারেন না। এখানে প্রবিশনাল সংবিধান প্রণয়ন চাওয়া হলো। এই বিষয়গুলো জনগণের বিষয়। জনগণ ঠিক করবে প্রবিশনাল সংবিধান চান, নাকি নতুন সংবিধান চান। নাকি বর্তমান সংবিধানের অধীনেই থাকতে চান। এগুলো জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। আবেদনে যে প্রার্থনা আদালতের কাছে করা হয়েছে, যেসব যুক্তি বা কারণের ভিত্তিতে প্রার্থনা করা হয়েছে সবই ক্রটিপূর্ণ। হাইকোর্ট রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন, যা সঠিক। লিভ টু আপিল গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই, কেননা এখানে আইনগত কোনো প্রশ্ন নেই, যেটি আপিল বিভাগের দেখার প্রয়োজন।
‘বিপ্লবী সরকার নয়, জাতীয় ঐক্যমত্যের ফল’বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রেভল্যুশনারি গভর্নমেন্ট (বিপ্লবী সরকার) নয়, জাতীয় ঐকমত্যের ফল বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সামনে সেসব দল ও অংশীজনের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়ে যে সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করেছে—সেটি রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের জাতীয় ঐকমত্যের ফল। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির জাতীয় ঐক্যের ফল হিসেবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টারা শপথও নিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে ৭ আগস্ট ইস্যু করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রসঙ্গ টেনে রুহুল কুদ্দুস বলেন, ৫ আগস্ট বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধান, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ক্রিয়াশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সেদিন সিদ্ধান্ত হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা এককাট্টা ছিল, তাদের সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একজন ব্যক্তি। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিকভাবে নিয়োজিত ছিলেন, তাঁর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেটি সংবিধানসম্মত। গত বছরের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ হয়। একই দিন অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ হয়, একই দিন প্রধান উপদেষ্টার শপথ হয়। সংবিধানের ধারাবাহিকতায় পরদিন ৯ আগস্ট প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন সংবিধান অনুযায়ী। অর্থাৎ ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–আন্দোলনের মাধ্যমে একটা ফ্যাসিবাদের পতন হলেও সংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও সংবিধানিক বিধান তখন থেকেই প্রযোজ্য ছিল। পরবর্তী যেসব কার্যক্রম হয়েছে, সবগুলোই এই সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও সংবিধানের নিয়মের মধ্যেই হয়েছে। হাইকোর্ট সঠিকভাবে রিটটি খারিজ করেছেন বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।
‘বর্তমান সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে গঠিত’শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে গঠিত সরকার।…জনগণের গাঠনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই সরকার গঠিত হয়েছে। অর্থাৎ গত বছরের ৫ আগস্ট যে অভ্যুত্থান হয়েছে, এরপর ৬ ও ৭ তারিখ কোনো সরকার ছিল না। গত বছরের ৮ আগস্ট যে সরকার গঠিত হয়েছে—এটি জনগণের ক্ষমতা চর্চা করে এই সরকার গঠন করা হয়েছে। এই সরকারের তিনটি ম্যান্ডেট। একটি বিচার, একটি সংস্কার ও আরেকটি হচ্ছে নির্বাচন এবং এরই আলোকে সরকার পরিচালিত হচ্ছে।
গণ–অভ্যুত্থানে গঠিত সরকার পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে উল্লেখ করে ফিলিপাইন, গ্রানাডা ও লেসোথো—এই তিনটি দেশের এ–সংক্রান্ত উদাহরণ তুলে ধরেন আইনজীবী শিশির মনির। তিনি বলেন, একই ধরনের প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছিল ফিলিপাইন, গ্রানাডা ও লেসোথোর সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট উল্লেখ করেছেন—এ ধরনের অভ্যুত্থানের ফলে যে সরকার গঠিত হয়, এটি মূলত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করে গঠিত সরকার হয়। সেই সরকারের বৈধতা আদালতের মতামতের ওপর নির্ভর করে না।
১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যে মতামত নেওয়া হয়েছে, এটির প্রয়োজন ছিল না বলে মনে করেন শিশির মনির। তিনি বলেন, ১০৬ অনুচ্ছেদের মতামতের ওপর এই সরকারের বৈধতা নির্ভরশীল নয়। এই সরকারের বৈধতা নির্ভরশীল হলো দেশের জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার অভিপ্রায়ের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। আর এটাই একটা সরকারের সবচেয়ে বড় লেজিটিমেসি (বৈধতা)। এই সরকার দাঁড়িয়ে আছে জনগণের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশের ওপরে। সারা দুনিয়ার কোথাও গণ–অভ্যুত্থান হওয়ার পরে সরকার গঠনের জন্য আদালতের কাছে আসা হয় না। জনগণ নিজেরাই সরকার গঠন করে। এখানে তাই হয়েছে। সবাই মিলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হয়েছে। এখানে আদালতের মতামতের পক্ষে–বিপক্ষে কোনো প্রশ্ন জড়িত নেই। কেননা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতি যে নিয়োগ হয়েছে, তাঁদের নিয়োগপত্রের কোথাও ১০৬ অনুচ্ছেদের রেফারেন্স দেখা যায়নি। বর্তমান সরকার বৈধ সরকার। বৈধতার ভিত্তি হলো জনগণের ইচ্ছা, জনগণের অভিপ্রায় ও জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।