‘ভাই’ বলায় সাংবাদিকের উপর ক্ষেপলেন এসিল্যান্ড
Published: 5th, August 2025 GMT
‘ভাই’ সম্মোধন করায় এক সংবাদকর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বাবুর বিরুদ্ধে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে মুঠোফোনে নিজের একটি জমির খারিজ সংশোধন সংক্রান্ত তথ্যর খোঁজ নিতে চাইলে সময় টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি বিপ্লব ইসলামের সঙ্গে এ অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী বিপ্লব ইসলাম বলেন, “আমার একটি জমির খারিজ সংক্রান্ত তথ্য জানতে এসিল্যান্ড জাহাঙ্গীর আলম বাবুর সরকারি নাম্বারে ফোন করি। এসময় তিনি ‘স্যার’ বলে সম্মোধন না করায় ক্ষিপ্ত হন এবং ফোনের সংযোগ কেটে দেন।”
পরবর্তীতে আবারও ফোন দিলে তিনি জানান, এসিল্যান্ডকে কী বলে সম্মোধন করতে হবে তা জেনে যেন ফোন দেওয়া হয়।
এসিল্যান্ডের এমন আচরণের বিষয়ে বিপ্লব ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিলে নেটিজেনদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই পোস্টে এসিল্যান্ডের যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন কাজে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানান অনেকেই।
গাইবান্ধা জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু জানান, এমন আচরণ একজন রাষ্টের কর্মচারী হয়ে জনগণের সাথে অপ্রত্যাশিত। এটি সরকারি চাকরি বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। আইনে কোথাও স্যার বলার বিধান নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.
ভাই বললে সমস্যা কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এতে আমি বিব্রতবোধ করি।”
ঢাকা/মাসুম/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এস ল য ন ড ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
উগান্ডার মধ্যাঞ্চলে প্রায় ২৭ বর্গমাইল (৭০ বর্গকিলোমিটার) এলাকায় বিস্তৃত জিওয়া র্যাঞ্চ নামে খামারে রয়েছে প্রচুর সবুজ ঘাস, জলাভূমি, বনাঞ্চল। সেই খামারে সাত হাজার গরু ঘুরে বেড়াত। এখন আর সেখানে গরু নেই। এর জায়গায় ঘাস খায় গন্ডার। উগান্ডায় এখন কেবল এখানেই রয়েছে গন্ডার। নিজেদের প্রাকৃতিক আবাসে বসবাস করছে এসব বন্য প্রাণী।
আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় ৪০ বছর আগে গন্ডার একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে একজন খামারির হাত ধরে আবার দেশটিতে ফিরে এসেছে বন্য এ প্রাণী। সেখানকার বেসরকারি খামার জিওয়া র্যাঞ্চে এখন গন্ডার আছে প্রায় অর্ধশত। কীভাবে গন্ডারদের সেই দেশে ফিরিয়ে আনা হলো, বলা যাক সেই গল্প।
একসময় ধূসর ও সাদা গন্ডারের আবাসস্থল ছিল উগান্ডা। ১৯৮০-এর দশকে শিকার, চোরাচালান ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশটি থেকে গন্ডার সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়। একসময় সেখানে প্রায় ৭০০টি গন্ডার থাকলেও সে সংখ্যা শূন্যে নেমে আসে।
এর এক দশক পর জিওয়া র্যাঞ্চের মালিক ক্যাপ্টেন জোসেফ চার্লস রয়ের কাছে গন্ডার ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দেয় ‘রাইনো ফান্ড উগান্ডা’। জোসেফ এ প্রস্তাবে সম্মত হন এবং ২০০৫-০৬ সালে কেনিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে ছয়টি গন্ডার নিয়ে আসেন। খামারটিতে বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে সেই গন্ডারের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ৪৮–এ।
৪৮টি গন্ডারের মধ্যে জিওয়া র্যাঞ্চে গত তিন মাসে জন্মেছে পাঁচটি শাবক। খামারের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা এই সাফল্যের মূল কারণ বলে ধরা হয়। সেখানে কর্তব্যরত রেঞ্জাররা প্রতিটি ‘গন্ডার পরিবারকে’ সার্বক্ষণিক নজরে রাখেন। গন্ডারগুলো যাতে চোরাচালানের শিকার না হয়, সে জন্য রয়েছে নিশ্ছিদ্র সীমানা পাহারার ব্যবস্থা।
জিওয়া র্যাঞ্চে যেসব ব্যক্তি রেঞ্জার হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের একজন শরিফ নসুবাগা। তিনি খামারটিতে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন।
শরিফ নসুবাগা বলেন, প্রতি ঘণ্টায় তাঁরা গন্ডারদের কার্যকলাপ এবং তাদের আচরণ, যেমন খাওয়া, মলমূত্র ত্যাগ, বিশ্রাম নেওয়া রেকর্ড করেন। তিনি বলেন, এই কাজ করতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে গন্ডারদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। কোন গন্ডারের আচরণ কেমন, কোনটি শান্ত আর কোনটি আক্রমণাত্মক, তা তাঁরা জেনে গেছেন।
জিওয়া র্যাঞ্চে গন্ডারের বাইরে চিতাবাঘ, জিরাফ, জেব্রাসহ ৩০০টির বেশি প্রজাতির পাখি দেখা যায়। পর্যটকেরা এখানে এসে বন্য প্রাণীগুলো দেখতে পারেন। পর্যটকদের থেকে পাওয়া অর্থ প্রাণীগুলোর সংরক্ষণে ব্যয় হয়।
জিওয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, র্যাঞ্চের মূল লক্ষ্য হলো পর্যাপ্ত গন্ডার প্রজনন করে তাদের উগান্ডার জাতীয় উদ্যানগুলোতে স্থানান্তর করা। এ খামারে ৮০টি পর্যন্ত গন্ডার রাখা যেতে পারে। গন্ডারের প্রজাতিতে বৈচিত্র্য আনতে আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে শিগগিরই আরও আটটি গন্ডার আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিওয়া কর্তৃপক্ষ।
সার্বিক বিষয়ে উগান্ডায় গরিলা সংরক্ষণে বিপ্লব ঘটানো প্রাণিচিকিৎসক গ্ল্যাডিস কালেমা-জিকুসোকা বলেন, জাতীয় উদ্যানগুলোতে গন্ডার স্থানান্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এ জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও পর্যাপ্ত রেঞ্জার অপরিহার্য।
জিকুসোকা বলেন, ইদি আমিনের শাসনামলে উগান্ডা থেকে গন্ডার সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। সেই গন্ডার ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে, উগান্ডা আবার স্থিতিশীল হয়েছে।