স্বৈরাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব এক জাগরণ
Published: 5th, August 2025 GMT
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শুধু একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ফল নয়; বরং এটি ছিল দীর্ঘকাল ধরে সমাজে জমে ওঠা বঞ্চনা, বৈষম্য ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে এক বিশাল গণবিস্ফোরণ।
এ সময় দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, নগর থেকে গ্রাম পর্যন্ত হাজার হাজার তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, শ্রমিক, পেশাজীবী এবং সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তাঁদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল প্রতিবাদের স্লোগান, চোখেমুখে ছিল নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রত্যয় আর হৃদয়ে বহমান ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজের স্বপ্ন;একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা।
২.এই আন্দোলনের মর্মমূলে নিহিত ছিল দুটি শব্দ: ‘বৈষম্যহীন’ ও ‘স্বৈরাচারমুক্ত’। শব্দ দুটি নিছক স্লোগানের শব্দ ছিল না; বরং তার পেছনে ছিল দশকের পর দশক ধরে জমা হওয়া এক নিঃশব্দ আর্তনাদ, যা এ প্রজন্মের মুখে এসে উচ্চারিত হলো বিদ্রোহের ভাষায়। এই দ্বৈত দাবির মধ্যে প্রতিধ্বনিত হয়েছে সেই জনমানস, যাদের প্রাত্যহিক জীবনের বাস্তবতা হয়ে উঠেছিল বৈষম্যমূলক অর্থনীতি, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং ন্যায়বিচারহীন রাষ্ট্রব্যবস্থার নির্মমতার শিকার হওয়া।
বিখ্যাত চিন্তাবিদ ফ্রানৎস ফানোঁ ভাষায়, যখন উপনিবেশ বা দমনমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা একটি জনগোষ্ঠীর আশা ও স্বপ্নকে দাবিয়ে রাখে, তখন সেই জনগোষ্ঠী বিদ্রোহকেই জীবনের স্বাভাবিক পথ হিসেবে বেছে নেয়। চব্বিশের বাংলাদেশ যেন ফানোঁর সেই কথারই প্রতিফলন।
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে গণ–আন্দোলনকে প্রায়ই রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের সূচক হিসেবে দেখা হয়। এই প্রেক্ষাপটে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান ছিল একপ্রকার নৈতিক প্রতিরোধ, যা শুধুই ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ছিল না, বরং তা ছিল একটি নতুন ধরনের সমাজ গঠনের স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা। এ গণ–অভ্যুত্থান প্রশ্ন তোলে পূর্ববর্তী শাসকদের বৈধতা নিয়ে, তেমনি নতুন ভবিষ্যতের প্রতি দায়বদ্ধতাও সৃষ্টি করে।
এই আন্দোলন তাই শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনাই ছিল না; এটি ছিল একটি সমাজ-সাংস্কৃতিক গতিধারার নতুন বাঁক; যেখানে একটি নতুন প্রজন্ম তার অতীতের সব ব্যর্থতার দায়ভার ঝেড়ে ফেলে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আত্মমর্যাদার দাবিতে আত্মপ্রকাশ করে। এটি ছিল ইতিহাসের সেই ক্ষণ, যখন বহু শোষিত, নিঃস্ব ও ‘অপমানিত’ মানুষ একযোগে বলেছিলেন, ‘আর নয়, যথেষ্ট হয়েছে’।
বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রথম দৃশ্যমান প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে; বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছিলেন এই আন্দোলনের সূচক ও চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখা যায়, সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রায়ই ছাত্রসমাজই প্রথম আওয়াজ তোলে; এমনটা আমরা দেখেছি ১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থান এবং ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে। চব্বিশেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
এবারের গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিভূমি ছিল পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় অনেক বেশি জটিল ও বহুমাত্রিক। এটা শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনের প্রশ্ন ছিল না; বরং এর গভীরে ছিল রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক আনুগত্যকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বৈষম্য, যা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর মানবিক মর্যাদাকে প্রতিনিয়ত আঘাত করছিল।
সরকারি চাকরিতে দলীয়করণ, উচ্চশিক্ষায় রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া, কোটা ব্যবস্থার নামে একপক্ষীয় সুবিধা বণ্টন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারকে অবহেলা করার মাধ্যমে তৈরি হচ্ছিল একটি পক্ষপাতদুষ্ট ও অনৈতিক রাষ্ট্রকাঠামো।
মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব থাকা স্বাভাবিক হলেও যখন সেই দায়িত্ব কৃতজ্ঞতার গণ্ডি পেরিয়ে একচোখা সুযোগসন্ধানী ব্যবস্থায় পরিণত হয়, তখন তা বৈষম্যের রূপ পরিগ্রহ করে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন—যদি রাষ্ট্রের প্রতে৵ক নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী হন, তবে কেন জন্মপরিচয়, রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী তাঁর শিক্ষার অধিকার বা চাকরির সুযোগ নির্ধারিত হবে?
জন রলসের ন্যায়বিচারের তত্ত্বের (থিওরি অব জাস্টিস) কথা স্মরণ করতে পারি; তিনি বলেন, একটি ন্যায্য সমাজ গঠনের জন্য সবচেয়ে দুর্বল এবং সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে; কিন্তু তা হতে হবে সর্বজনীন নীতির আলোকে, পক্ষপাতহীনভাবে। চব্বিশের ছাত্ররা যেন রলসের এই নৈতিক দর্শনকেই বাস্তবে প্রতিফলিত করতে চেয়েছিলেন। তাঁরা শুধু নিজেদের স্বার্থে নয়; বরং পুরো সমাজব্যবস্থার ভেতরকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকে উৎসারিত এই বিদ্রোহ তাই নিছক রাজনৈতিক নয়; এটি ছিল একধরনের নৈতিক অভ্যুত্থান। এখানে আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থের চেয়ে বৃহত্তর সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন প্রাধান্য পেয়েছে। তরুণদের চোখে ধরা পড়েছে যে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ছাড়া উন্নয়ন কেবল একটি পরিসংখ্যানগত ছলনা। সেই উপলব্ধি থেকেই তাঁরা নিজেদের ক্লাসরুমের সীমানা ছাড়িয়ে রাজপথে এসে দাঁড়িয়েছিলেন; মানবিক মর্যাদা, সমতা ও সুবিচারের দাবিতে দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘এই বৈষম্য করা চলবে না।’
৩.ছাত্রদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে সরকার যখন কঠোর ও দমনমূলক অবস্থান নেয়, তখন আন্দোলন একটি নতুন মোড় নেয়। এটি হয়ে ওঠে কেবল একটি দাবিদাওয়া–নির্ভর প্রতিবাদ নয়; বরং এক স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণের সুতীব্র প্রতিরোধ। এ আন্দোলনের গন্তব্য ছিল না কেবল আর্থিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যের অবসান; বরং এর লক্ষ্য ছিল সেই রাষ্ট্রীয় মানসিকতা ও কাঠামোর বিরুদ্ধাচরণ, যেখানে জনতার চেয়ে ক্ষমতাই মুখ্য, যেখানে নাগরিক অধিকার নয়; বরং আনুগত্যই একমাত্র গ্রহণযোগ্যতা।
স্বৈরাচার এখানে কোনো ব্যক্তিনির্ভর ‘অভিশাপ’ নয়; বরং একটি প্রতিষ্ঠানিক রূপান্তর, একপ্রকার শাসনতান্ত্রিক অন্ধকার, যার মূল চিহ্ন হলো ক্ষমতার এককেন্দ্রিকতা, ভিন্নমতের দমন এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর স্থলে কর্তৃত্ববাদী নিয়ন্ত্রণ। প্লেটোর ‘দ্য রিপাবলিক’-এ স্বৈরতন্ত্রের উৎপত্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে, যখন জনগণের নিরাপত্তার নামে একটি শাসক ক্রমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে, তখন ধীরে ধীরে গণতন্ত্র সরে গিয়ে জন্ম নেয় স্বৈরাচার। চব্বিশের আন্দোলন যেন এই রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে বুঝে নিয়ে তার বিরুদ্ধে সময়োচিত ও নৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছিল।
আলবেয়ার কামু বলেছিলেন, ‘একটি শৃঙ্খলিত বিশ্বের সঙ্গে মোকাবিলা করার একমাত্র উপায় হলো এতটাই সম্পূর্ণ মুক্ত হওয়া যে তোমার অস্তিত্বই বিদ্রোহের ঘটনার মতো হয়ে উঠবে।’ চব্বিশের চেতনা আমাদের সেই স্বাধীন সত্তা হয়ে ওঠারই ডাক দেয়। এটি এক প্রজন্মের বিবেক, এক জাতির আত্মমর্যাদা এবং ভবিষ্যতের প্রতি এক প্রতিশ্রুতি, যেখানে কেউই যেন নীরব দর্শক না থাকেন; বরং সবাই হয়ে উঠুক অন্যায়ের বিরুদ্ধে একেকটি জীবন্ত প্রতিবাদ।তরুণদের প্রতিরোধে ফুটে উঠেছিল প্রতীকী ও সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের এক নতুন ভাষা। কখনো তা ছিল দেয়ালে আঁকা কবিতায়, কখনো তা ছিল হাতে লেখা পোস্টারে, কখনো প্ল্যাকার্ডে লেখা একটিমাত্র বাক্যে ধরা পড়ত গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রের গণবিচ্ছিন্নতার ছবি।
এসব অভিব্যক্তি ছিল সরাসরি রাষ্ট্রের ছায়াতলে শাসক শ্রেণির দমননীতি ও গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে এক সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অস্ত্র। তরুণদের একেকটি প্রশ্ন যেন রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্তর্নিহিত সংকটকে উন্মোচন করছিল; কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়ে ওঠে? কেন সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করতে হয়? কেন মুক্তবুদ্ধির চর্চা রাষ্ট্রের কাছে হুমকি হয়ে দাঁড়ায়? এ প্রশ্নগুলো শুধু প্রশাসনকে নয়; বরং গোটা সমাজকেই আত্মসমালোচনার মুখে দাঁড় করিয়েছিল।
সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে নবপ্রজন্ম যে আত্মদায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছে, তা নিছক নৈতিক অবস্থান নয়; বরং ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে এসে রক্তাক্ত প্রতিরোধের মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতের পথচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। চব্বিশের আন্দোলন তাই কেবল একটি রাজনৈতিক মোড় নয়, এটি ছিল
এক গণজাগরণ, যা তরুণদের বিবেক ও চেতনার গভীরতম স্তর থেকে উৎসারিত। ‘স্বৈরাচার পতনের এক দফা’—এই উচ্চারণ ছাত্র-জনতার মুখে প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছিল এক সম্মিলিত সংগ্রামের শপথে। এ ছিল রাষ্ট্রযন্ত্রের আড়ালে বাসা বাঁধা স্বৈরশাসক ও জনগণের মধ্যকার বৈরী সম্পর্কের বিরুদ্ধে একটি মৌলিক প্রতিবাদ, যেখানে তরুণেরা হয়ে উঠেছিলেন পরিবর্তনের কারিগর।
অভূতপূর্ব গণজাগরণে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিজয় উদ্যাপন। ৫ আগস্ট ২০২৪, সংসদ ভবন এলাকায়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ র ক অবস থ ন র ষ ট রব র জন ত ক ছ ল একট প রজন ম জনগ ষ ঠ ছ ল এক জ গরণ ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
দ্য হান্ড্রেডে দল পেলেন পাকিস্তানের ইমাদ ও আমির
দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন উঠছিল, তখন সেই সংশয় কাটিয়ে নতুন মৌসুমে নর্দার্ন সুপারচার্জার্স দলে যুক্ত হলেন মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম।
দুই তারকাই দলে এসেছেন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। আন্তর্জাতিক দায়িত্বের কারণে পুরো টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার বেন ডোয়ারশুইস ও নিউ জিল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার (তিনি খেলতে পারতেন মাত্র দুইটি ম্যাচ)। সেই জায়গায় দলে অন্তর্ভুক্ত হলেন পাকিস্তানের এই দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
এর ফলে পরিষ্কার হলো, হান্ড্রেডে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে ভারতের মালিকানাধীন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কোনো প্রভাব পড়ছে না। এ বছরের শুরুতে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) স্পষ্ট জানায়, ভারতের বিনিয়োগকারীরা মালিক হলেও, এতে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে কোনো বাধা থাকবে না। তখন ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গোল্ড বলেছিলেন, “আমরা জানি, অন্য কিছু লিগে এ ধরনের সমস্যা আছে, কিন্তু হান্ড্রেডে সেটা হবে না।”
আরো পড়ুন:
শাস্তি পেলেন টিম ডেভিড
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজে সেঞ্চুরির বৃষ্টিতে ভাঙল ৭০ বছরের রেকর্ড
তবে অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন, যখন ২০২৫ মৌসুমের মার্চ মাসে হওয়া ড্রাফটে একজনও পাকিস্তানি ক্রিকেটার দল পাননি। এর পেছনে অবশ্য ব্যাখ্যাও ছিল। সেই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজের কারণে পাকিস্তানের সাদা বলের স্কোয়াড ছিল ব্যস্ত। সেই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাদের সাম্প্রতিক বাজে পারফরম্যান্স এবং গতবার শহীন আফ্রিদি ও নাসিম শাহের শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করাও ছিল বড় কারণ।
নর্দার্ন সুপারচার্জার্সের নতুন মালিক হচ্ছে ভারতের বিখ্যাত মিডিয়া গ্রুপ ‘সান গ্রুপ’। যারা ১ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
দলে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হলো— বেন স্টোকস। যদিও তিনি খেলার মাঠে থাকবেন না, তবে থাকবেন পরামর্শক ও দলকে উজ্জীবিত করার ভূমিকায়। কাঁধের চোটের কারণে ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজের শেষ টেস্টে না খেলা এই অলরাউন্ডার জানালেন, “আমি দ্য হান্ড্রেডে খেলছি না ঠিকই, তবে দলকে সময় দেব। ডায়েরি-কলম নিয়ে কোচিং করব না, তবে পুনর্বাসনের (রিহ্যাব) সময়টায় পাশে থাকব।”
এই মৌসুমে ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ টেস্ট ব্যাটারই থাকবেন টুর্নামেন্টে। যদিও পেসারদের অনেকেই বিশ্রামে থাকবেন। লন্ডন স্পিরিট দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে খেলবেন উইকেটকিপার জন সিম্পসন। বিশ্রামে থাকায় খেলবেন না অলিভ পোপ ও জেমি স্মিথ। গ্ল্যামরগানের অলরাউন্ডার ড্যান ডাউথওয়েটও স্বল্পমেয়াদে দলে জায়গা পেয়েছেন।
এছাড়া ম্যানচেস্টার অরিজিনালসে রাচিন রবীন্দ্রর পরিবর্তে মার্ক চ্যাপম্যান এবং ইনজুরিতে পড়া মার্চান্ট ডি ল্যাঞ্জের জায়গায় দলে এলেন ফারহান আহমেদ। আর ট্রেন্ট রকেটসে দক্ষিণ আফ্রিকার জর্জ লিন্ডের জায়গায় দু’টি ম্যাচের জন্য খেলবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন।
দ্য হান্ড্রেড ২০২৫: বদলি খেলোয়াড় তালিকা
লন্ডন স্পিরিট:
- জন সিম্পসন ও ড্যান ডাউথওয়েট (৫ আগস্টের জন্য)
ম্যানচেস্টার অরিজিনালস:
- মার্ক চ্যাপম্যান (৬–১৩ আগস্ট) – রাচিন রবীন্দ্রের পরিবর্তে।
- ফারহান আহমেদ – মার্চান্ট ডি ল্যাঞ্জের পরিবর্তে।
- আমুরুতা সুরেনকুমার – এলা ম্যাককাহানের পরিবর্তে।
নর্দার্ন সুপারচার্জার্স:
- ইমাদ ওয়াসিম (৭–১০ আগস্ট) – মিচেল স্যান্টনারের পরিবর্তে।
- মোহাম্মদ আমির – বেন ডোয়ারশুইসের পরিবর্তে।
ট্রেন্ট রকেটস:
- আকিল হোসেন (১০–১৪ আগস্ট) – জর্জ লিন্ডের পরিবর্তে।
ঢাকা/আমিনুল