জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন ও শাখা ছাত্রশিবির পৃথক বিজয় র‌্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করে। তবে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ ক্যাম্পাসের অন্যান্য বাম ছাত্রসংগঠনগুলো।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিজয় র‌্যালিতেও তাদের উপস্থিতি মেলেনি। তবে সকাল থেকে নানা কার্যক্রমে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় ছিল শাখা ছাত্রশিবির। এদিন বিকেল ৪টায় ‘জুলাই জাগরণ’ র‌্যালিও করে তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশসহ একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। এছাড়া সংখ্যা কম হওয়ায় অনেক সংগঠন প্রশাসনের আয়োজিত র‌্যালিতে সংহতি জানিয়ে আলাদা করে কোনো কর্মসূচি পালন করেনি।

আরো পড়ুন:

আওয়ামী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ছবিসহ তালিকা প্রদর্শন করবে রাবি ছাত্রদল

ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যার বিচার দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “আজ আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আমরা সংখ্যায়ও কম এবং সবাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, সে কারণেও সম্ভব হয়নি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা পরিকল্পনার মধ্যে আছি। তাই সামনেও এ নিয়ে কর্মসূচির পরিকল্পনা নেই।”

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, “আজ আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা কোনো কর্মসূচি করিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের র‌্যালিতে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেছি। এর আগে, আমরা মাসব্যাপী প্রোগ্রাম করেছি। গত ২ তারিখেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম।”

কর্মসূচির বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশের প্রথম বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের বিজয় র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করে ছাত্রশিবির। তাছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফতহে গণভবনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিকেল ৪টায় বিনোদপুর থেকে তালাইমারি ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ র‍্যালিও আয়োজন করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল শেখ হাসিনার ফাঁসি ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিচার। এখনো অনেক কিছু অর্জিত হয়নি। তবে যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা রাজপথে থাকব।”

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুল বলেন, “গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আজ আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবে সোমবার (৪ আগস্ট) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের পক্ষ থেকে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের ছবি প্রকাশসহ আমরা ভিন্ন কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড.

আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, “এটি মূলত সব দল-মত নির্বিশেষে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ছিল। এখানে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই কাম্য। প্রশাসনও ঠিক সেভাবেই আয়োজন করেছে, কিন্তু প্রভাবশালী অনেক সংগঠনই আসেনি। তবে রাকসুকেন্দ্রিক দলগুলোর গুছানোর একটা ব্যাপার আছে, এদিকেও ব্যস্ততা থাকতে পারে।”

তিনি বলেন, “আসলে বর্তমানে আত্মদ্বন্দ্বে নিজেদের মধ্যে জটিল সমীকরণ কাজ করছে। দেশব্যাপী আজ অনেকেই দ্বিধাবিভক্ত। আমাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব লেগে আছে, সেটিও বড় কারণ হতে পারে।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল উপলক ষ আম দ র আওয় ম আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে জুলাই যোদ্ধাদের ফুল দেওয়া হলো পিওনকে দিয়ে!

শরীয়তপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আহত জুলাই যোদ্ধাদের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী (পিওন) দিয়ে ফুল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন আহত জুলাই যোদ্ধারা।

জেলা প্রশাসকের দাবি, নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) নেতৃত্বে ফুল দেওয়া হয়েছে এবং অভিযোগ সঠিক নয়।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলোরা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম ও সিভিল সার্জন ডা. মো. রেহান উদ্দিন। 

অনুষ্ঠানে জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১৪ জনের পরিবার ও ৮৩ জন আহতদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। 

জুলাই যোদ্ধাদের অভিযোগ, ১৪ জন শহীদের পরিবারের হাতে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার নিজে উপহার তুলে দিলেও ভিন্নতা দেখা যায় আহতদের উপহার ও ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়ার ক্ষেত্রে। তাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পিওন দিয়ে ফুল দেওয়া হয়। 

ফাতেমা ইয়াসমিন নামে নারী জুলাই যোদ্ধা বলেন, “ডিসি বা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আমাদের ফুল দেওয়ার কথা ছিল। তারা আমাদের ডিসি অফিসের পিয়ন দিয়ে ফুল ও উপহার দিয়েছেন। এর আগেও জেলা প্রশাসন আমাদের জুলাই কন্যাদের উপহার দিয়েছেন পিয়ন দিয়ে, তারা ফুল অনেকের হাতের উপর ফেলে দিয়েছে। আমরা কখনোই তাদের থেকে সম্মান পাইনি। তাদের মনোভাব স্বৈরাচারী।” 

নারী জুলাই যোদ্ধা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “এখানে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে। যারা শহীদ হয়েছেন তারা আমাদেরই সহযোদ্ধা। তাদের পরিবারের হাতে ডিসি নিজে সম্মাননা তুলে দিয়েছেন এটি বেশ ভালো, তবে আমাদের বেলায় কেন আলাদাভাবে দিচ্ছে। এখানে প্রশ্ন থেকেই যায়।”

জুলাই যোদ্ধা আব্দুর রহমান ডালিম বলেন, “আমরা জানতাম আমাদের জেলা প্রশাসক ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহারসামগ্রী তুলে দেবেন।   জেলা প্রশাসক সেই জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন। এটি আসলেই দুঃখজনক। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এটাই আমরা চাই।” 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “এনডিসির নেতৃত্বে ফুল দেয়া হয়েছে এবং তিনি নিজেই ছিলেন। যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের অভিযোগ সঠিক নয়।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘২৪ এর রঙে গ্রাফিতি’ প্রতিযোগিতায় দেশ সেরা বড়লেখা সরকারি কলেজ
  • অর্থনীতিকে চাঁঙ্গা করতে দ্রুত নির্বাচন দরকার: আযম খান
  • শরীয়তপুরে জুলাই যোদ্ধাদের ফুল দেওয়া হলো পিওনকে দিয়ে!
  • জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন
  • ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানা আয়োজন
  • রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ডাক টিকিট উদ্বোধন
  • ৫ আগস্ট সংবাদপত্রে ছুটি
  • ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে সব ব্যাংক