দেহব্যবসায় নামানোর চেষ্টার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে সানাইয়ের মামলা
Published: 6th, August 2025 GMT
আলোচিত মডেল-অভিনেত্রী সুপ্রভা মাহবুব বিনতে সানাই মাহবুব তার স্বামী আবু সালেহ মুসার বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবি, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন এবং জোর করে দেহব্যবসায় নামানোর চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন। বুধবার (৬ আগস্ট) ঢাকার মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
সানাই মাহবুবের আইনজীবী মিঠুন সাহা বলেন, “২২ লাখ টাকা যৌতুকের অভিযোগ এনে স্বামীর বিরুদ্ধে সুপ্রভা মাহবুব বিনতে সানাই মাহবুব আদালতে মামলা করেছেন। টাকার জন্য তার স্বামী তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন।”
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৭ মে আবু সালেহ মুসাকে বিয়ে করেন সানাই। বিয়ের সময় সানাই মাহবুবের পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ১৫ ভরি স্বর্ণ দেয়া হয়; যা আসামির বাসায় রয়েছে। চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করবে জানিয়ে সানাই মাহবুবকে তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা এনে দিতে বলেন আবু সালেহ মুসা। সানাই মাহবুব নিজের জমানো ১২ লাখ এবং বাবার কাছ থেকে ৭ লাখ সর্বমোট ১৯ লাখ টাকা এনে দেন। কিন্তু আবু সালেহ মুসা ওই টাকা নষ্ট করে ফেলেন।
আরো পড়ুন:
ডিপজলের জমি দখলের অভিযোগ
বাংলাদেশি অভিনেত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মুখ খুললেন শ্রাবন্তীর প্রাক্তন স্বামী
ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের জন্য স্ত্রীকে দেহব্যবসায় নামানোর জোর চেষ্টা করেন আবু সালেহ মুসা। পুনরায় আবু সালেহ মুসা সানাই মাহবুবের কাছে ২২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসামি।
অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামি বাদীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বাসা থেকে বের হয়ে যান। দাবি করা ২২ লাখ টাকা না দিলে সংসার করবে না মর্মে জানান। মোটা অংকের টাকা নিয়ে অন্যত্র বিয়ে করার হুমকিও দেন আসামি।
সানাই মাহবুবের পরিবার তাকে বুঝানোর চেষ্টা করেন এবং সশরীরে এসে কথা বলার জন্য বলেন। গত ১২ মে আবু সালেহ মুসা সানাই মাহবুবের আফতাবনগরের বাসায় যান। কথাবার্তার একপর্যায়ে পুনরায় ২২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। তবে সানাইয়ের পরিবার যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কথা শুনে আবু সালেহ মুসা ক্ষিপ্ত হয়ে সংসার করবে না জানিয়ে দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান। অন্যত্র বিয়ে করারও হুমকি দেন।
সানাই মাহবুব যৌতুকবিহীন সংসার করার জন্য একাধিকবার পারিবারিক ও সামাজিকভাবে চেষ্টা করেছেন মর্মে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন। সংসার করার জন্য সানাই মাহবুব গত ৭ ও ২২ জুলাই আবু সালেহ মুসাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। আবু সালেহ মুসা ৭ জুলাইয়ের লিগ্যাল নোটিশ গ্রহণ করে ১৭ জুলাই অসন্তোষ, মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর জবাব দেন।
৩১ জুলাই আবু সালেহ মুসা সানাই মাহবুবের আফতাবনগরের বাসায় গিয়ে বলে, “তুই শতবার সংসার করার জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেও আমি লিগ্যাল নোটিশ আর গ্রহণ করব না এবং যৌতুকবাবদ আমার দাবিকৃত ২২ লাখ টাকা না দিলে সংসার করব না।”
মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন সানাই মাহবুব। বেশ কয়েকটি গানের মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন তিনি। ‘ময়নার ইতিকথা’, দেওয়ান নাজমুলের ‘শালবনের মহুয়া’ চলচ্চিত্রের শুটিং শেষ করেছেন। কিন্তু তার কোনো সিনেমা এখনো মুক্তি পায়নি।
বেশ আগে শোবিজের রঙিন দুনিয়াকে বিদায় জানান আলোচিত মডেল-অভিনেত্রী সানাই মাহবুব। তারপর ধর্মে মনোযোগী হন। ২০২২ সালের ২৭ মে আবু সালেহ মুসার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সানাই মাহবুব। কিন্তু বিয়ের এক বছর পূর্ণ না হওয়ার আগেই দাম্পত্য কলহ শুরু হয়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র স ন ই ম হব ব র ২২ ল খ ট ক স স র কর র পর ব র র জন য কর ছ ন ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক