লেবুর শরবত বিক্রেতা থেকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট
Published: 7th, August 2025 GMT
প্রায় তিন দশক আগে একটি শহরের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার উত্থান পর্ব শুরু হয়। এরপরে তিনি তিন বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে প্রেসিডেন্ট। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপের কথা বলছি।
এক সময় তিনি রাস্তায় লেবুর শরবত আর রুটি বিক্রি করতেন। তিনিই হয়ে উঠেছেন আধুনিক তুরস্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৯৪ সালে তিনি ইস্তাবম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন। তখন থেকেই তার জনপ্রিয়তা শুরু।
সারোয়ার আলম, সাংবাদিক, আঙ্কারা বলেন, ‘‘ইস্তাম্বুলের আবর্জনার সমস্যা, ইলেক্ট্রিসিটি সমস্যা, পানি সমস্যাসহ আরও যত সমস্যা ছিলো সেই সমস্যাগুলোকে সমাধানের জন্য তিনি যথেষ্ট আন্তরিকভাবে কাজ করছেন বলে তখন মনে করা হতো। সেই কাজের মাধ্যমে তিনি ইস্তাম্বুলের মানুষের মন জয় করতে পেরেছিলেন। সেই সময়ের রাজনীতির যে অবস্থা সেই অবস্থা থেকেও বলা যায় যে, ফায়দা নিয়েছিলেন। অর্থাৎ তখন যে কোয়ালিশন সরকার ছিলো, সেই কোয়ালিশন সরকার আসলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ার পরে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে তিনি একটা জিনিস দেখান—যদি এককভাবে নির্বাচিত হওয়া যায়, তাহলে কোয়ালিশন সরকারের যে সমস্যা সেই সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাবো এবং রাষ্ট্রকে আরও স্থিতিশীলভাবে পরিচালনা করতে পারবো। ’’
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী
নেতানিয়াহুই আঞ্চলিক শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা: এরদোয়ান
২০০৩ সালে এরদোয়ান প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিন বার প্রধানন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দ্বিতীয় দফায় তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে তুরস্কের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বদলে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। আধুনিক তুরস্কের জনক কামাল আতাতুর্কের পর তিনিই দেশটাকে সবচেয়ে বেশি বদলে দিয়েছেন।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, তিনি ক্রমে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরে গেছেন। মুসলিম মূল্যবোধের পক্ষে সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার ফলেও তিনি তুরস্কের জনগণের কাছে জনপ্রিয়।
ক্ষমতায় এসে প্রথম সাত বছরে তিনি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে যথেষ্ট নজর দেন। কাজের ওপর ভিত্তি করেই তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বিতীয় সাত বছরে তিনি কিছু স্ট্রাকচারাল পরিবর্তন আনেন। যেমন –সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা করেন।
সামরিক অভ্যুত্থান, অর্থনৈতিক সমস্যা, লিরার মান পতনের মতো সমস্যাগুলো তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে।
তুর্কীর সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে চেয়েছিলো কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপরেই বিরোধীদের ওপর শুরু করেন ব্যাপক অভিযান। ৫০ হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। চাকরিচ্যুত হন প্রায় দেড় লাখ সৈনিক, সরকারি চাকরিজীবী, শিক্ষক ও বিচারক।
সূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত রস ক ত রস ক র সমস য সরক র ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে ৭ জনকে জিম্মি করে সোনার দোকানে ডাকাতি
যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে মশিয়াহাটী বাজারের সৌখিন জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে।
দোকানটির মালিক গৌতম কর্মকার (৫০)। তিনি মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
গৌতম কর্মকার জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যান। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর সোনার দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে তিনি রাতে বাড়ি থেকে বের হননি। আজ সকালে দোকানটিতে গিয়ে তিনি ডাকাতির আলামত দেখতে পান।
গৌতম কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকানের লকারে প্রায় ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ২৪ ভরি ওজনের রুপার গয়না ছিল। এগুলোর বাজারমূল্য চার লাখ টাকার বেশি। ডাকাত দলটি এগুলোর সব লুট করেছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত ২টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল মশিয়াহাটী বাজারে আসে। তাদের সবার মুখ কাপড়ে দিয়ে বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে একজন নারীসহ বাজারের অন্তত সাতজনকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে এবং মুখে টেপ লাগিয়ে ফেলে রাখে। এরপর সৌখিন জুয়েলার্সের কলাপসিবল গেটের একটি পাশ এবং শাটারের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে লকারের তালা ভেঙে সোনা ও রুপার গয়না নিয়ে যায় তারা। ভোর চারটা পর্যন্ত সেখানে ডাকাতি হয়। এ সময় শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ বিশ্বাস (৬০) ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা বিশ্বাস (৫৫)। ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে প্রতিমা বিশ্বাসের গলার একটি সোনার হার নিয়ে যায়।
মশিয়াহাটী বাজারের পাশে সুজাতপুর গ্রাম। ওই গ্রামের কৌশিক দাস (১৬) জানায়, গতকাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে হেঁটে বাজারের দিকে যাচ্ছিল। বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতেরা তাকে ধরে ফেলে। এরপর তার দুই হাত দড়ি দিয়ে পেছনে বেঁধে মুখে চওড়া স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়।
কৌশিক দাস বলে, ‘ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর ভোর চারটার দিকে আমি কৌশলে হাতের বাঁধন খুলে ফেলি। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যদের হাত ও মুখের স্কচটেপ খুলে দিয়েছি।’
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম রবিউল ইসলাম, বিষয়টি চুরি না ডাকাতি, তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।