ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সর্বশেষ সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন অন্তত ছয়জন শিক্ষার্থী।

এদের মধ্যে রয়েছেন, বিজয় একাত্তর হল সংসদের সংস্কৃতি সম্পাদক, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) নেতা এবং স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠন বাঁধনের নেতাও।

আরো পড়ুন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: পোষ্য কোটা নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক হাতাহাতি

কুড়িগ্রামে সাপের কামড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু 

সম্প্রতি রাইজিংবিডির অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে আসে। তবে নকল ধরার ১ মাস পেরিয়ে গেলেও দোষীদের বিরুদ্ধে আজো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট ৩০৮ নম্বর ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ ২’ কোর্সের পরীক্ষা চলাকালীন মো.

হাসিকুল ইসলামকে নকল করা অবস্থায় মোবাইলসহ ধরেন কর্তব্যরত পরীক্ষক ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ জহিরুল ইসলাম।

হাসিকুল ২০২১-২২ সেশনের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী‌। তিনি জিয়াউর রহমান হল বাঁধনের সভাপতি এবং জিয়া হলের পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ক্লাবের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) আর্মি উইংয়ের ক্যাডেট কর্পোরাল। 

অভিযুক্ত জিয়া হল বাঁধনের সভাপতি হাসিকুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আমি ভুল করে পকেটে করে মোবাইল ফোন পরীক্ষার হলে নিয়ে চলে গেছিলাম। পরীক্ষার হলে স্যার যখন সার্চ করতে আসেন, তখন আমি নিজেই মোবাইল ফোন বের করে দিয়ে দিয়েছি।”

একই দিন একই পরীক্ষার হলে মোবাইলসহ ২০২১-২২ সেশনের আরো দুই শিক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম সিদ্দিকুর রহমান নিজামী। ওই দুই শিক্ষার্থী হচ্ছে সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মো. মিফতাহুর রহমান ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী শরিফ আহমেদ। সম্প্রতি শেষ হওয়া বিজয় ৭১ হল সংসদ নির্বাচনে শরিফ সংস্কৃতি সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

২৬ জুলাই চতুর্থ সেমিস্টারের ২০৬ নম্বর কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষায় নকল করার সময় পরিদর্শকের নিকট হাতেনাতে ধরা পড়েন ২০২২-২৩ সেশনের জসিম উদ্দিন হলের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান রিদম। রিদম বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও ক্রীড়া সেলের সহ-সম্পাদক।

সহপাঠীদের অভিযোগ, রিদম মোবাইল ফোন ব্যবহার করে উত্তর লিখছিলেন। এ সময় পরিদর্শক তার কাছ থেকে মোবাইল ও উত্তরপত্র জব্দ করেন। এ ঘটনায় গত ১০ আগস্ট ‘মোবাইল দেখে পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা ঢাবি বাগছাস নেতা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি ডটকম। 

২০ জুলাই সেমিস্টারের প্রথম পরীক্ষার দিন পরীক্ষার হলে মোবাইলসহ নকল করার সময় পরিদর্শকের নিকট ধরা পড়েন ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী ও সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী মো. রমজান আলী। 

পরীক্ষার হলে বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জুবায়ের মোহাম্মদ ইহসানুল হকের নিকট শিটসহ ধরা পড়েন ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম তাহসিন।

জব্দ করা মোবাইলগুলো বিভাগের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে প্রক্টর অফিসে জমা দেওয়া হয় এবং অভিযুক্তরা এখনো তাদের মোবাইল ফেরত পাননি বলে জানা গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বাগছাস নেতা রিদম বলেন, “খাতা বাজেয়াপ্ত হয়েছিল, তবে ফোন ব্যবহার করে নকল করার ঘটনা ঘটেনি। স্যার সন্দেহ করেছিলেন যে আমি নকল করেছি। পরে তিনি আমার খাতা নিয়ে কিছুক্ষণ আটকে রাখেন, এরপর আবার ফিরিয়ে দেন।”

রিদমের ঘটনাটি সত্য হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাগছাসের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের।

অভিযুক্ত জিয়া হল বাঁধনের সভাপতি মো. হাসিকুল ইসলামের বিষয়ে বাঁধনের সাংগঠনিক অবস্থান কী হবে এ বিষয়ে বাঁধন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জোনের সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নুল আবেদিন বলেন, “আমরা পুরোটাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নকলের বিষয়ে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুবায়ের মোহাম্মদ ইহসানুল হক বলেন, “এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “তারা যে পরীক্ষার হলে মোবাইলসহ ধরা পড়েছে তার একমাত্র প্রমাণ হচ্ছে ওই জব্দকৃত মোবাইলগুলো। এ বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত আমরা মোবাইল গুলো ফেরত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হল র শ ক ষ র থ পর ক ষ র হল ক ল ইসল ম ব যবস থ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষা, ফরম পূরণের সময় বাড়ল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের প্রক্রিয়ার সময় ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ফরম পূরণের বর্ধিত সময়—

১. আবেদন ফরম পূরণের বর্ধিত তারিখ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫।

২. ডাটা এন্ট্রি নিশ্চয়নের শেষ তারিখ: ২৮ সেপ্টেম্বর ১১:৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

৩. সোনালী সেবার মাধ্যমে টাকা জমার শেষ তারিখ: ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে—

২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত, ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের অনিয়মিত ও গ্রেড উন্নয়ন এবং ২০১৭-২০১৮ ও ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শুধুমাত্র Promoted শিক্ষার্থীরা ‘F’ গ্রেড পাওয়া কোর্সে ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য—

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে রেজিস্ট্রেশন করা অনার্স কোর্সের সকল ছাত্রছাত্রী ২০২৩ সালের অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে Promoted হয়ে ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের কোর্স সম্পন্ন করেছে তারা নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে অনার্স কোর্সের সিলেবাস ও সংশোধিত রেগুলেশন অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ড সরকারের বৃত্তি: মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ৮ ঘণ্টা আগেঅনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য—

২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের যেসব শিক্ষার্থী অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে Not Promoted হয়েছে অথবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি ওই সব শিক্ষার্থী অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। Not Promoted শিক্ষার্থীকে আগের বছরের পাস করা কোর্সের পরীক্ষা দিতে হবে না। তবে যারা ২০২৩ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ‘C’ বা ‘D’ গ্রেড পেয়েছে শুধুমাত্র তারাই ২০২৪ সালের পরীক্ষায় উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করার জন্য পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে সর্বোচ্চ দুটি কোর্সে এবং ‘F’ গ্রেড প্রাপ্ত সব কোর্সে পরীক্ষা দিতে হবে।

# বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষা, ফরম পূরণের সময় বাড়ল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
  • রাকসু নির্বাচনে এক বিভাগ থেকেই ভিপিসহ ২২ প্রার্থী
  • বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন: রাশিয়া কেন নিষিদ্ধ, ইসরায়েল কেন নয়
  • চাহিদা থাকলেও ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ
  • ‘জুড়ীর জাম্বুরা’, নামেই যার পরিচয়