রাজশাহীর খাদ্যগুদামে চাল নিয়ে ‘চালবাজি’, কোটি টাকার কারসাজি
Published: 21st, September 2025 GMT
রাজশাহীর খাদ্যগুদামে নিম্নমানের ও খাওয়ার অনুপযোগী চাল ঢুকিয়ে পরে তা পাল্টে দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এ কাজে জড়িত আছেন গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাই। তাঁদের যোগসাজশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে চাল সরবরাহ ও পাল্টানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল শনিবার সকালে জেলার বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে চাল পাল্টানোর ঘটনা।
নিয়ম অনুযায়ী কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে তা চুক্তিবদ্ধ মিলারদের মাধ্যমে চাল বানিয়ে সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু অভিযোগ আছে, কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ধান না কিনেই সরাসরি নিম্নমানের চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে ধান ছাঁটাই, পরিবহন ব্যয়সহ ভালো চালের খরচ দেখিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগসাজশ করে অসাধু কর্মকর্তারা এই অনিয়ম করেছেন।
আরও পড়ুনগুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫৪ সেপ্টেম্বর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম খাদ্যগুদামে অভিযান চালান। তিনি সেখানে বিপুল পরিমাণ খাওয়ার অনুপযোগী চাল পান এবং তিনটি গুদাম সিলগালা করে দেন। পরে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ২৬ আগস্ট জেলার দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিনও স্থানীয় খাদ্যগুদামে অভিযান চালিয়ে অনুপযোগী চাল উদ্ধার করেছিলেন। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই গুদাম থেকে ৮০ মেট্রিক টন চাল সরানো হয়।
দুর্গাপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাগমারার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে ২০০ মেট্রিক টন চাল দুর্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল। সেই চাল খারাপ হওয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
সূত্রমতে, এবার বোরো মৌসুমে ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামে ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ২ হাজার ৭২৩ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়। ধান থেকে চাল করার জন্য জেলার বিভিন্ন চালকলের সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তির তালিকায় আছে—বাগমারার কনক চালকল, আরাফাত চালকল ও ভাই ভাই চালকল, তানোরের আবদুস সাত্তার চালকল, হড়গ্রামের বাদশা রাইস মিল, মোহনপুরের নুরজাহান চালকল, মাহফুজ চালকল ও মোল্লা চালকল। এ আটটি চালকল থেকে ১ হাজার ২১১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী নিম্নমানের চাল সরবরাহের জন্য অভিযুক্ত চালকল কালোতালিকাভুক্ত হতে পারে, তাদের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। নিজ দায়িত্বে নিম্নমানের চাল পাল্টে দেবে তারা।
কোন চালকল থেকে নিম্নমানের চাল সরবরাহ করা হয়েছে—তা নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে আরও অনিয়মের তথ্য। মোহনপুর উপজেলার লালইস গ্রামের মেসার্স মাহফুজুর রহমান চালকলের নামে দেখা যায়, তারা ৪৮০ মেট্রিক টন ধান ভাঙিয়ে ৩১২ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করেছে। কিন্তু মাহফুজুর রহমান বলেন, তিনি ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে কোনো ধান নেননি। চালও দেননি। তাঁর বাবা মিল চালাতেন। সম্প্রতি বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি দিশাহারা হয়ে গেছেন।
ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামে নিয়মবহির্ভূতভাবে জেলার বাইরে থেকে চাল এনে ঢোকানো হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালে বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ট র ক টন চ ল চ ল সরবর হ কর মকর ত ন চ লকল ব গম র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
যেসব এলাকায় শুক্রবার রাতে ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি মেরামত কাজের জন্য শুক্রবার রাতে ঢাকার আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় তিতাস গ্যাস এ তথ্য জানিয়েছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, ডেমরা-সিদ্ধিরগঞ্জ-গোদনাইল ভালভ স্টেশনগামী ১০ইঞ্চি/১২ইঞ্চি/১৪ইঞ্চি মুখ্য বিতরণ পাইপলাইনের অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন করার কাজে জরুরি মেরামত করা হবে। এজন্য আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাত ১০টা থেকে ২০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ভোর ৬টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা নারায়ণগঞ্জ শহর, সিদ্ধিরগঞ্জ, মৌচাক, দেলপাড়া, পাগলা, ফতুল্লা, পঞ্চবটি, মোক্তারপুর ও মুন্সিগঞ্জ এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
এছাড়া এসব এলাকার আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে তিতাস। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস