ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত ‘অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মতো’ বিড়ম্বনার মুখে পড়েছেন।

তিনি প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে রীতিমতো চুক্তি করে আফগানিস্তানের ‘অধিকার ছাড়িয়া’ দেওয়ার পর মার্কিন সেনারা ঘটিবাটি রেখে যে বাগরাম ঘাঁটি ফেলে চলে এসেছিলেন; আজ পাঁচ বছর পর তিনি সেই ঘাঁটির ‘অধিকার’ দাবি করে বসেছেন।

সেই ‘অধিকার’ বুঝে না পেলে তিনি ‘খুব খারাপ কিছু’ ঘটিয়ে ফেলবেন বলে হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার লন্ডন সফর করার সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প ঘর ভরা সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন, ‘আমরা বাগরাম ঘাঁটি ফেরত চাই।’

ঘাঁটিটির ওপর আদৌ আন্তর্জাতিক আইনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অধিকার আছে কিনা, ঘাঁটির মালিক দেশটি সেটিকে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করতে দেবে কিনা, যদি না দেয় তো আইন অনুযায়ী তা পাওয়ার সুযোগ আছে কিনা—এসবের ধার তিনি ধারেননি।

ট্রাম্প পরে তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ সরাসরি মাস্তানি ভাষায় বলেছেন, ‘বাগরাম ঘাঁটি না দিলে আফগানিস্তানের কপালে খারাবি আছে’।

আরও পড়ুনতালেবানের কাছে হারের দায় যেভাবে ট্রাম্প-বাইডেন দুজনেরই১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এই ঘটনা গরিব উপেনের কাছ থেকে ‘দুই বিঘা জমি’ হাতিয়ে নেওয়া সেই ‘বাবু’র কথা মনে করিয়ে দেয়। উপেনের শেষ সম্বল দুই বিঘে জমি দেখিয়ে ‘বাবু বলিলেন, “বুঝেছ উপেন, ও জমি লইব কিনে”’।

জমির ওপর নিজের অধিকারের ন্যায্যতা দাঁড় করাতে বাবু যুক্তি দিয়ে উপেনকে বোঝালেন, ‘বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখানা, পেলে দুই বিঘে প্রস্থ ও দিঘে সমান হইবে টানা—ওটা দিতে হবে।’

আন্তর্জাতিক ‘বাবু’ ডোনাল্ড ট্রাম্পও একই কায়দায় বলেছেন, চীন যেখানে পরমাণু অস্ত্র বানায়, সেখান থেকে বাগরাম মাত্র ঘণ্টাখানিকের পথ। তা ছাড়া রাশিয়াও কাছাকাছি। সব দিক থেকে সুবিধা। এই কারণে ঘাঁটিটা দরকার; ‘ওটা দিতে হবে।’

বছর দশেক আগে হলে, আফগানিস্তান হয়তো খুব একটা গাঁইগুঁই করতে পারত না। কিন্তু এখন আমেরিকার পক্ষে যে আগের মতো কথায় কথায় হামলা চালানো সহজ না, তা চীন জানে, রাশিয়া জানে, ভারত জানে, এমনকি আফগানিস্তানও জানে।

সম্ভবত সে কারণে আফগানিস্তান কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। আফগানিস্তানের সরকার প্রধান বা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছু বলেননি।

এখন যে বাগরাম বিমান ঘাঁটি নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটির বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, এই ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের বানানো। এখানে কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে তারা।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন য ক তর বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঝিনাইদহে ঠিকাদারি কাজের বিল নিতে এসে মারধরের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা

ঝিনাইদহে এলজিইডি কার্যালয়ের ঠিকাদারি কাজের বিল নিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন শামিম হোসেন মোল্লা নামের আওয়ামী লীগের এক নেতা। বুধবার বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই ব্যক্তির প্রাইভেট কার ভাঙচুর করা হয়।
শামিম হোসেন শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। এলজিইডি কার্যালয়ে আটকে রাখার খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি সদর থানার হেফাজতে আছেন।

শামিম হোসেন মোল্লার বাড়ি শৈলকুপা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামে। তিনি শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর বাবা সাব্দার হোসেন মোল্লা উমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

জেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শামিম হোসেন মোল্লা এলজিইডির ঠিকাদার। তাঁর কয়েক বছর আগে শেষ করা কাজের বিল পাওনা রয়েছে। সেই বিল নিতে তিনি বুধবার দুপুরে এলজিইডি কার্যালয়ে এসেছিলেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা সেখানে আসেন। পরে ১০-১৫ জন জড়ো হয়ে শামিম হোসেনকে মারধর ও তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে শামিম হোসেনকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তিনি সদর থানার পুলিশের হেফাজতে আছেন। ওসি জানান, তাঁর নামে সদর থানায় কোনো মামলা নেই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলার সাবেক আহ্বায়ক আবু হুরায়রা সাংবাদিকদের বলেন, শামিম মোল্লা শৈলকুপায় ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে অনেক মিছিল–মিটিং করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সময় প্রভাব খাটিয়ে নিজে নিয়ে কাজ করতেন। তিনি অন্য কাউকে কাজ করতে দিতেন না। আজ দুপুরে এলজিইডি কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে দেখা যায়। এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে জনতা তাঁকে মারধর করে। শৈলকুপার কিছু লোক আগের ক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ