‘আমার মেয়র-তোমার মেয়র, মামদানি-মামদানি’—বাংলাদেশিদের স্লোগানে মুখর কুইন্স
Published: 5th, November 2025 GMT
ইতিহাস গড়া এক ভোটে জিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম নগরী নিউইয়র্কের মেয়র হতে যাচ্ছেন জোহরান মামদানি। তাঁর এই বিজয়ে উচ্ছ্বাসে মেতেছে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে মামদানির জয়ের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে নিউইয়র্কের কুইন্স, উচ্ছ্বাসের মাত্রা এতই বেশি ছিল যে সেই খবর সিএনএনও দিয়েছে।
কুইন্সের জ্যামাইকায় অনেক বাংলাদেশিদের বাস, সেখানে রাতেই স্লোগান উঠতে থাকে—‘আমার মেয়র-তোমার মেয়র, মামদানি-মামদানি’, ‘নিউইয়র্কের মেয়র, মামদানি-মামদানি’, ‘শ্রমিক শ্রেণির মেয়র, মামদানি-মামদানি’।
সিএনএন লিখেছে, রাস্তায় নেমে স্লোগানমুখর এই বাংলাদেশিদের হাতে ব্যানারে লেখা ছিল, ‘জ্যামাইকার বাংলাদেশি আমেরিকানরা মামদানির জন্য।’ ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং উগান্ডার শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানির ছেলে জোহরান তাঁর ভোটের প্রচার শুরুর পর থেকে বাংলাদেশিদের সমর্থন পেয়ে আসছিলেন। তাঁর পক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রচারে নামা বেশ সাড়া ফেলেছিল। মামদানি নিজেও বাংলায় কথা বলে তাঁদের মন জয় করে নেন।
ডেমোক্রেট প্রার্থী মামদানি গতকালের নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি হারিয়েছেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকে, যাকে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থন দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র কে এই জোহরান মামদানি১ ঘণ্টা আগেএই জয়ের মধ্য দিয়ে মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হতে যাচ্ছেন। এই নগরীর প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম মেয়রও হবেন তিনি। গত এক শতাব্দীর মধ্যে তিনি হবেন সবচেয়ে কনিষ্ঠ মেয়র।
আরও পড়ুননিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন জোহরান মামদানি৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক র প রথম ম ম মদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানির সাফল্যে ডেমোক্র্যাটদের উচ্ছ্বাস; কিন্তু ক্ষমতায় ফেরা কি সহজ হবে
যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা ও নেতৃত্ব—দুটিই হারানোর এক বছর পর ডেমোক্রেটিক পার্টি এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।
মাসের পর মাস আত্মসমালোচনার পর এ সপ্তাহে তিনটি বড় নির্বাচনী লড়াই ডেমোক্র্যাটদের নতুন করে অতিপ্রয়োজনীয় গতি ও আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে।
৩৪ বছর বয়সী এক ডেমোক্র্যাট সমাজতান্ত্রিক প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে ভার্জিনিয়ায় সাবেক একজন সিআইএ কর্মকর্তা এ অঙ্গরাজ্যের প্রথম নারী গভর্নর হয়েছেন।
আবার, নিউ জার্সিতে গভর্নর পদে নৌবাহিনীর সাবেক এক হেলিকপ্টার পাইলট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প–সমর্থিত রিপাবলিকান প্রার্থীকে পরাজিত করে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের বিরোধিতাকে মুখ্য ইস্যু করেছিলেন তিনি।
জয়ী এই তিন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হলেন যথাক্রমে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য পরিষদ সদস্য জোহরান মামদানি, অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার ও নিউ জার্সি থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য মিকি শেরিল। তিনজনই ভিন্ন ভিন্ন ধরনের প্রচার চালিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ২০২৮ সালের ভোটের আগে কোনো নির্দিষ্ট নেতৃত্ব না থাকায় ডেমোক্র্যাটরা এখন ভাবছেন কীভাবে তাঁরা একটি স্পষ্ট বার্তা দেবেন, নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করবেন ও ভোটারদের ফিরিয়ে আনার নতুন কৌশল তৈরি করবেন।তিন প্রার্থীর এ জয় ডেমোক্র্যাটদের ভবিষ্যৎ পথনির্দেশ নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে—২০২৬ সালের গুরুত্বপূর্ণ মধ্যবর্তী নির্বাচনে ও নির্বাচনের পরে দলের নেতৃত্ব কারা নেবেন—মধ্যপন্থী নাকি বামপন্থীরা?
তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ২০২৮ সালের ভোটের আগে কোনো নির্দিষ্ট নেতৃত্ব না থাকায় ডেমোক্র্যাটরা এখন ভাবছেন কীভাবে তাঁরা একটি স্পষ্ট বার্তা দেবেন, নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করবেন ও ভোটারদের ফিরিয়ে আনার নতুন কৌশল তৈরি করবেন।
কেউ কেউ মনে করেন, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়সংকট মোকাবিলায় মনোযোগ বাড়িয়ে ডেমোক্র্যাটরা এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। অন্যরা বলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও জোরালো রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া হবে জরুরি।
ভার্জিনিয়ার গভর্নর পদে বিজয়ী অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার (ডানে)