জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।

আরো পড়ুন:

জোবায়েদ হত্যা: দায় স্বীকার করে ৩ আসামির জবানবন্দি

জোবায়েদ হত্যার বিচার দাবিতে আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ

বুধবার (২২ অক্টোবর) তার বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে ভাস্কর্য চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এদিকে, বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হলে জবির অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে এতে যোগ দেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তোর রক্ষা নাই’, ‘বর্ষা তোর রক্ষা নাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”

রিনা আক্তার নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হোক। যেন আর কোনো জোবায়েদকে এভাবে প্রাণ দিতে না হয়।”

সমাবেশে উপস্থিত পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

রিপন রউফ রিপন বলেন, “পুলিশ যে ঘটনার বিবরণ দিয়েছে তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। তারা এখনো সঠিকভাবে তদন্ত করতে পারেনি। আমি দাবি জানাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা দোষীদের ফাঁসি চাই।”

গত ১ বছর ধরে জোবায়েদ পুরান ঢাকার আরমানিটোলার নুরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’ নামে একটি বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ওই বাসার তিনতলায় ওঠার সিঁড়িতে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। সিঁড়ির নিচ থেকে তিন তলা পর্যন্ত রক্তের দাগ পাওয়া যায়।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য বর ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

নারী গণমাধ্যমকর্মীর আত্মহত্যা: সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি

রাজধানীতে নারী গণমাধ্যমকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৪৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিবৃতিদাতারা বলেছেন, এমন ঘটনা বাংলাদেশের নারী কর্মীদের কর্মপরিবেশের ভয়াবহ বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা এবং কবি ও সাংবাদিক গিরীশ গৈরিক গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন। এতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না, অর্থনীতিবিদ আব্দুল বায়েস, কবি নির্মলেন্দু গুণ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, সামিনা লুৎফা, কামরুল হাসান মামুন, আইনুন নাহার, কবি গুলতেকিন খান, কাসফিয়া নাহরিন, মাহমুদুল সুমন প্রমুখ।

রাজধানীর সোবহানবাগের বাসা থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ওই নারী গণমাধ্যমকর্মীর লাশ উদ্ধার হয়। অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা স্ট্রিমে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে তিনি কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন ওই সংবাদমাধ্যমের বেশ কয়েকজন কর্মী। তাঁদের মধ্যে ওই নারী কর্মীও ছিলেন।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২৬ গণমাধ্যমকর্মীর লিখিত ও প্রমাণসাপেক্ষ অভিযোগের পরও ঢাকা স্ট্রিমের প্রধান সম্পাদক গোলাম ইফতেখার মাহমুদ অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেননি। নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা। প্রতিষ্ঠানটি তা না করে তাঁকে দায়িত্বে বহাল রাখা হয়। আমরা মনে করি, এ ঘটনায় সংবাদমাধ্যমটির সম্পাদক-প্রকাশক এবং মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান তাঁদের নৈতিক ও প্রশাসনিক দায় এড়াতে পারেন না।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘তাঁরা আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ৮টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করেন, যা স্পষ্টতই গুরুতর অন্যায় এবং নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর আচরণ। অভিযোগকারীদের মধ্যে ৯ জন নারী সাংবাদিক ছিলেন, যাঁরা প্রত্যেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তির আচরণের কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন।’

তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত আলতাফ শাহনেওয়াজসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, ঢাকা স্ট্রিম কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ও অবহেলা তদন্তের আওতায় আনতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা, সম্মান ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারী গণমাধ্যমকর্মীর আত্মহত্যা: সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি