নিউইয়র্ক শহরের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন জোহরান মামদানি। তিনি শহরের প্রথম মুসলিম, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং প্রথম আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া ব্যক্তি হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

তবে তার এই জয় সহজে আসেনি। নির্বাচনী প্রচারের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি তিনি নিজ দলের রিপাবলিকান প্রার্থীকে বাদ দিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে সমর্থন জানিয়েছেন। নিউইয়র্কবাসী জোহরান নয়, কুয়োমোকে ভোট দিতে বলেছেন।

আরো পড়ুন:

 কে এই জোহরান মামদানি?  

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হয়ে ইতিহাস গড়লেন জোহরান মামদানি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে আপনি পছন্দ করুন আর নাই করুন, আপনার হাতে বিকল্প নেই। আপনাকে ভোট দিতেই হবে তাকে। আমি আশা করব সে দারুণ কাজ করবে। সে কাজের মানুষ, মামদানি নয়।”

তবে শেষ মুহূর্তে রিপাবলিকান ট্রাম্পের এমন মন্তব্য ডেমোক্র্যাট মামদানির জয়ের পথে বাধা হতে পারেনি শেষমেশ। তিনি ৫০.

৪ শতাংশ ভোট নিয়ে জয়লাভ করেছেন নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ভোটে জিতে নিজের বিজয় ভাষণেই ট্রাম্পকে একহাত নিয়েছেন জোহরান মামদানি। তিনি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমি যত দূর জানি, আপনি দেখছেন। আমি আপনাকে চারটি শব্দ বলব: টার্ন দ্য ভলিউম আপ (আওয়াজ বাড়ান)।”

ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে মামদানি আরো বলেন, “আমাদের মধ্যে কারো কাছে আপনি পৌঁছাতে চাইলে আপনাকে আমাদের সবার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।”

সমর্থকদের উদ্দেশে মামদানি বলেন, “যদি কেউ এই জাতিকে দেখাতে পারে কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানো যায়, তবে সেটি সেই শহরই, যেখানে ট্রাম্পের উত্থান ঘটেছিল। রাজনীতির এই অন্ধকার সময়ে নিউইয়র্ক হবে আলোর প্রতীক।”

ব্রুকলিনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সমাবেশে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শ্রমজীবী মানুষকে ধনী ও ক্ষমতাবানরা বোঝাতে চেয়েছে যে ক্ষমতা তাদের হাতে নয়। কিন্তু গত এক বছরে আপনারা প্রমাণ করেছেন, আপনাদের হাতেই সেই ক্ষমতা। আজকের এই জয় অসম্ভবকে সম্ভব করেছে।”

মার্কিন রাজনীতিতে বামঘেঁষা ডেমোক্র্যাট বলে পরিচিত মামদানি। আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডায় জন্ম হলেও তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি ভারতীয় চিত্রপরিচালক মীরা নায়ারের পুত্র। তার পিতা উগান্ডার বিখ্যাত লেখক মাহমুদ মামদানি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট নেতা মামদানি নিউ ইয়র্কের প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তাকে নানাভাবে নিশানা করে আসছিলেন ট্রাম্প। তাকে ‘১০০ শতাংশ উন্মাদ কমিউনিস্ট’ বলেও কটাক্ষ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

‘কমিউনিস্ট’ প্রার্থী মামদানি ভোটে জিতলে নিউ ইয়র্ক সিটির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, “যদি নিউ ইয়র্ক একটি কমিউনিস্ট মেয়র বেছে নেয়, তা হলে আমি ওই শহরের জন্য ফেডারেল অর্থবরাদ্দ বন্ধ করে দেব, যতক্ষণ না আইন আমাকে তা দিতে বাধ্য করছে।” 

তবে ট্রাম্পের এই ধারাবাহিক আক্রমণের পরেও নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের জন্য নির্বাচিত হলেন মামদানি। প্রায় এক বছর আগে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করা মামদানির জন্য এটি এক অবিস্মরণীয় উত্থান। একজন তুলনামূলক অখ্যাত স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের নেতৃত্বে পৌঁছে গেলেন তিনি।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র জন য প রথম শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হয়ে ইতিহাস গড়লেন জোহরান মামদানি

নিউইয়র্ক সিটি ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন। তিনি কেবল মুসলিম নয়, বরং শহরের সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র এবং আফ্রিকান বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোর ৫টা) আনুমানিক ১৭ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে শহরের নির্বাচন বোর্ড। গত ৩০ বছরের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

নিউ ইয়র্কে মেয়র নির্বাচন আজ, কুওমোকে সমর্থন ট্রাম্পের

৬০ হাজার ৮০২ টন গম নিয়ে দেশে এল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় জাহাজ 

নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র হিসেবে জোহরান মামদানির জয় পেয়েছেন এমন খবর পাওয়ার পর থেকে উল্লাস করেন তার সমর্থকরা। তারা “জোহারান, জোহারান, জোহারান বলে স্লোগা দিতে থাকেন।” 

স্থানীয় ভোটাররা জানান, নির্বাচনের ফলাফলের আগে তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন, কিন্তু ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর পরিবেশ সম্পূর্ণ বদলে গেছে।

এক ভোটার বলেন, “আমি শক্তি অনুভব করতে পারছি, এটি স্পষ্ট—সবার মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে।” 

অন্য একজন বলেন, মামদানি আশার প্রতীক। 

রিপাবলিকান হাউস স্পিকার মাইক জনসন মামদানির জয়কে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, নিউইয়র্ক সিটি এক ‘সত্যিকারের চরমপন্থী ও মার্কসবাদী’ প্রার্থী নির্বাচিত করায় এর প্রভাব পুরো দেশে পড়বে। 

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিজয়ীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

ঢাকা/ইভা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মামদানি-মামদানি—বাংলাদেশিদের স্লোগানে মুখর কুইন্স
  • মামদানির বিজয় ভাষণ শেষে মঞ্চে বাজল ‘ধুম মাচালে’
  • ‘আমার মেয়র-তোমার মেয়র, মামদানি-মামদানি’—বাংলাদেশিদের স্লোগানে মুখর কুইন্স
  • জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়ের রহস্য কী
  • বিজয় ভাষণে ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে জোহরান, ‘আওয়াজ বাড়ান..’
  • জোহরান মামদানি: নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র
  • মিরা নায়ারের সেই ছেলেটি কোন কোন ক্ষেত্রে প্রথম হিসেবে নিউইয়র্কের মেয়র হলেন
  • তোমাদের সন্তান হতে পেরে আমি গর্বিত: মা–বাবার উদ্দেশে জোহরান মামদানি
  • নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হয়ে ইতিহাস গড়লেন জোহরান মামদানি