নেত্রকোণায় কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
Published: 6th, October 2025 GMT
নেত্রকোণার মদনে কথা কাটাকাটির জেরে হারুন চৌধুরী (৬০) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত হারুন একই উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের শিবপাশা গ্রামের বাসিনন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবপাশা ও রুদ্রশ্রী গ্রামের অবস্থান পাশাপাশি। গতকাল সন্ধ্যায় কৃষি জমিতে কাজের জন্য শ্রমিক খুঁজতে রুদ্রশ্রী গ্রামে যান হারুন। সেখানে একটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় শাহাবুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে মারধর ও মোটরসাইকেল পোড়ানোর অভিযোগ
আড়াইহাজারে গণপিটুনিতে ইউপি সদস্য নিহত
একপর্যায়ে শাহাবুদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে হারুনকে মারধর করেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে স্থানীয়রা মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসক হারুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাতিজা পলক চৌধুরী বলেন, “আমার চাচা শ্রমিকের খোঁজে পাশের গ্রামে যান। সেখানে শাহাবুদ্দিন ও তার সহযোগীরা তাকে পিটিয়ে আহত করে। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই চাচা মারা যান।”
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.
মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ বলেন, “ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ন হত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘খবরদার, আমি শাহজাহান চৌধুরী, আমাকে যারা চিনে না, তারা এখনো মাটির নিচে বসবাস করে’
চট্টগ্রামের আলোচিত জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর আরও একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম–১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) আসনে জামায়াতের মনোনীত এই প্রার্থীর বক্তব্য আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন তিনি। এ সময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘খবরদার, খবরদার; আমি শাহজাহান চৌধুরী। আমাকে যারা চিনে না, তারা এখনো মাটির নিচে বসবাস করে...। আমার জন্য আল্লাহ আছে। আল্লাহর মেহেরবানি, সূর্য আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে। আল্লাহ তাআলা আমাকে এ রকম মর্যাদা দিয়েছেন। আপনারা দোয়া করবেন।’
স্থানীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকায় জনসংযোগের সময় শাহজাহান চৌধুরী এই বক্তব্য দিয়েছিলেন। তবে বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা শুরু হয়। শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় হুমকির সুরেও কথা বলেন। তবে কার উদ্দেশে এসব বলেছেন, তা স্পষ্ট হয়নি। তিনি বলেন, ‘চুদুরবুদুর (উল্টাপাল্টা) করিও না। লুলা (পঙ্গু) হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন‘প্রশাসন আমাদের কথায় উঠবে’: জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ২৫ নভেম্বর ২০২৫ভিডিওতে শাহজাহান চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমার চোখের পানি বৃথা যায়নি। এই এলাকা আমার শায়খ, আমার ওস্তাদ মাওলানা মমিনুল হক চৌধুরীর জন্মস্থান। এই এলাকা মাওলানা চৌধুরীর এলাকা। আমি এলাকাকে সম্মান করি, এই এলাকার মাটিকে সম্মান করি। এখানে কোনো রাজনীতি নেই। এখানো আর কোনো মার্কা নেই, সাতকানিয়া–লোহাগাড়ার মার্কা একটা, সেটা হলো দাঁড়িপাল্লা মার্কা।’
বক্তব্যের এক পর্যায়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমি যদি চোখের পানি ফেলি, লুলা (পঙ্গু) হয়ে যাবে। আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি। ১৮ বছরের মধ্যে ৯ বছর জেল খেটেছি। আমি টাকাপয়সা, ধনদৌলত, কাপড়চোপড়, পরিবার দেখিনি। আমি আপনাদের দুয়ারে আজকে এসেছি। আমরা স্বার্থপর নই। আমি দুইবারের এমপি। কোনো দিন এক কড়া জমিও নিইনি।’
এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলন’–এ প্রশাসনকে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন শাহজাহান চৌধুরী। এতে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়...যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে। পুলিশকে আপনার পিছনে পিছনে হাঁটতে হবে।’
এ বক্তব্যের পর গত মঙ্গলবার শাহজাহান চৌধুরীকে শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) করেছে জামায়াতে ইসলামী। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তাঁকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পেলে তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত নোটিশে এ কথা বলা হয়।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মো. আরমান উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে শাহজাহান চৌধুরী বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। চিঠির বিষয়ে তিনি বলতে পারবেন।