মিস ইউনিভার্সের মালিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও মাদক পাচারের অভিযোগ
Published: 27th, November 2025 GMT
মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং মাদক ও অস্ত্র পাচার নিয়ে বির্তকের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে থাইল্যান্ডে প্রতারণার অভিযোগে মালিকদের একজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মেক্সিকোয় মাদক ও অস্ত্র পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।
মিস ইউনিভার্স প্রতিষ্ঠানটির একসময় মালিক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২২ সাল থেকে থাই ধনকুবের অ্যান জেকাফং জেকরাটাটিপ এবং তাঁর কোম্পানি জে কে এন গ্লোবাল প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা কিনে নিয়েছে।
থাইল্যান্ডে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাথাইল্যান্ডে জেকরাটাটিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জে কে এন গ্লোবালের একজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার নিয়ে আইনি বিরোধে জড়িয়েছেন। চলতি সপ্তাহে তিনি ব্যাংককের আদালতে হাজিরা দিতে ব্যর্থ হন। থাই গণমাধ্যম অনুসারে, ব্যাংকক সাউথ ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট গতকাল বুধবার জানিয়েছে, তাঁরা জেকরাটাটিপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, তা জানা যায়নি।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, জেকরাটাটিপ ও জে কে এন গ্লোবাল ২০২৩ সাল থেকে বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। ওই সময় থেকে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছিল। এপির প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানিটি ২০২৪ সালে থাইল্যান্ডের দেউলিয়া আদালতে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার ঋণ রয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে থাইল্যান্ডের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) জেকরাটাটিপ ও জে কে এন গ্লোবালের বিরুদ্ধে আর্থিক বিবৃতিতে ‘মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য’ প্রকাশ করার অভিযোগ আনে। এ জন্য তাদের প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার ডলার জরিমানা করে।
প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম মালিক থাই ধনকুবের অ্যান জেকাফং জেকরাটাটিপ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এন গ ল ব ল জ কর ট ট প
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার দুটি লকারে ৮৩২ ভরি সোনার গয়না
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি লকার থেকে ৮৩২ ভরি সোনার গয়না পাওয়া গেছে। অগ্রণী ব্যাংকে থাকা ওই লকার দুটি জব্দ করা হয়েছিল। আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লকার দুটি খোলা হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দায়িত্বশীল একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, লকার খোলার সময় এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর দিলকুশায় অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় (সাবেক স্থানীয় কার্যালয় শাখা) শেখ হাসিনার দুটি লকার ছিল। সম্পদের তথ্য গোপন করে কর ফাঁকির অভিযোগে গত সেপ্টেম্বরে এনবিআরের সিআইসি তা জব্দ করে।
সিআইসির শীর্ষপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি মেনে লকার দুটি খুলেছি। সেখানে ৮৩২ ভরি সোনার গয়না পাওয়া গেছে। এখন ওনার (শেখ হাসিনা) আয়কর রিটার্নে দেওয়া সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।’
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা–আসাদুজ্জামান–মামুন কে কোন অপরাধে সাজা পেলেন ১৮ নভেম্বর ২০২৫
অগ্রণী ব্যাংকের এই লকার দুটি জব্দ করার এক সপ্তাহ আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংকে থাকা শেখ হাসিনার আরেকটি লকার জব্দ করে এনবিআরের সিআইসি। সেটি রাজধানীর সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখার ১২৮ নম্বর লকার।
পূবালী ব্যাংকের একই শাখায় শেখ হাসিনার দুটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। এর মধ্যে একটি হিসাবে ১২ লাখ টাকার এফডিআর এবং আরেকটি হিসাবে ৪৪ লাখ টাকা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ, কত সম্পদ আছে তাঁদের১৮ নভেম্বর ২০২৫এনবিআর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ তদন্ত করছে। অন্যদিকে দুদক শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। ইতিমধ্যে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানাসহ তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে ১৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই আদালত তাঁর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দিয়েছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিনই পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কর ফাঁকি ও দুর্নীতির তদন্তে নামে।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড, চৌধুরী আবদুল্লাহর ৫ বছরের কারাদণ্ড১৭ নভেম্বর ২০২৫