বাসের ধাক্কায় জাবি শিক্ষার্থী আহত, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
Published: 7th, October 2025 GMT
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় এ দুর্ঘটনায় জড়িত ‘সি লাইন’ পরিবহনের ঢাকা মেট্রো ব:১৪-৭৭৭৪ নম্বর বাসটিকে আটক করে মালিক পক্ষের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠিতে বাসচাপায় প্রাণ গেল স্কুলশিক্ষকের
বাসচাপায় পথচারী নিহত, প্রতিবাদে চালক-হেলপারকে গণপিটুনি
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা আরিচা মহাসড়কের রেডিও কলোনিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত সোহেল রানা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
আটক বাসের চালক বকুল খন্দকার (৬০) বলেন, “আমি রেডিও কলোনির জ্যামে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ডানে অল্প ফাকা জায়গা ছিল, সেখানেই ওই শিক্ষার্থীর বাইকটা দাঁড়িয়ে ছিল। আমি সেটা খেয়াল করিনি। জ্যাম ছাড়ালে না দেখেই টান দেই, এতে মোটরসাইকেলে বসা শিক্ষার্থী ঝুঁকি বুঝে ডিভাইডার টপকে লাফ দেয়, সেখান থেকেই তার পায়ে আঘাত লাগে। মোটরসাইকেলটি গাড়িতে লেগে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সবকিছু বাবদ আপোষের মাধ্যমে আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি।”
সাভার হাইওয়ে থানার কর্তব্যরত এসআই আনজিল আহমেদ বলেন, “আমরা দূর্ঘটনার পর সেখানে পৌঁছে গাড়ি জব্দ করেছি। উভয় পক্ষের মীমাংসার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। জরিমানা ভিক্টিমকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও চালককে সড়ক ও পরিবহন আইনের ৮৭ নং ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আরো কিছু আইনগত প্রক্রিয়া শেষে গাড়ি হস্তান্তর করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো.
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন ৫০ হ জ র ট ক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলভীবাজারে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় নিশ্চিত করল ডিনেট
মৌলভীবাজারের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সুশাসন ও সরকারি সেবার মান নিশ্চিতে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) একটি পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিনেটের (Dnet) উদ্যোগে এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে স্থানীয় হোটেল রেস্ট ইনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ সভার লক্ষ্য হলো—প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন, চাহিদা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন এবং সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য মূল সরকারি বিভাগ ও স্থানীয় অংশীদারদের সহযোগিতামূলক সমর্থন নিশ্চিত করা।
সভায় বিশেষ অতিথি এবং প্যানেল আলোচনা অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মামুনুর রশীদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা)। তিনি বলেছেন, “মৌলভীবাজারে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই। প্রথমত, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন, যা নিশ্চিত করবে যেন জনগণের বিকল্প কোনো পথের প্রয়োজন না হয়। দ্বিতীয়ত, চা শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া।”
২৭ মাসব্যাপী ‘নাগরিক সমন্বয়’ প্রকল্পটি সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার (জিএসি) আর্থিক সহায়তায় সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের (নাগরিকতা) অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। ডিনেট চারটি স্থানীয় সহযোগী সংস্থার সঙ্গে অংশীদারত্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সংস্থাগুলো হলো—কমলগঞ্জে জনকল্যাণ কেন্দ্র (জে কে কে), শ্রীমঙ্গলে প্রগতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (পিএসইউএস), কুলাউড়ায় নিঃস্ব সহায়ক সংস্থা (এনএসএস) এবং বড়লেখায় প্রচেষ্টা।
প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো—মৌলভীবাজারের চার উপজেলা—বড়লেখা, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, যুব ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য ক্লাইমেট জাস্টিস এবং সরকারি সেবার সমতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
সভার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল—প্রকল্পের চাহিদা মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করা। এই গবেষণামূলক তথ্য স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি সেবার ঘাটতি এবং নাগরিক অংশগ্রহণের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্ণিত করেছে, যা সবার মধ্যে একটি অভিন্ন বোঝাপড়া তৈরি করবে এবং প্রকল্পের অ্যাডভোকেসি কৌশল নির্ধারণে মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
সভায় উপস্থাপিত মূল গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজার জেলায় অর্থনৈতিক বৈষম্য বেশ প্রকট। চা শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ৩৬ শতাংশ এখনো মারাত্মকভাবে অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পেতেও নাগরিকদের জটিলতা পোহাতে হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৫৩ শতাংশ নারী জানিয়েছেন যে, ভাতা পেতে তাদের ঘুষ (১০০ থেকে ৩০০ টাকা) দিতে হয়েছে। জলবায়ুগত ঝুঁকির ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের মতো উপজেলাগুলোতে ৬৪ শতাংশ নারী বন্যা ও ভূমিধসের মতো জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে তাদের আয়ের প্রধান উৎস হারিয়েছেন।
ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদ হাসান বলেছেন, “আগামী দুই বছরে আমাদের লক্ষ্য—মৌলভীবাজারে এমন কিছু সাফল্যের গল্প তৈরি করা, যা এই প্রকল্পের পরবর্তী ধাপের যাত্রাকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে।”
নাগরিকতা ফান্ডের প্রতিনিধি ও জিএফএ কনসাল্টিং গ্রুপের লিড এক্সপার্ট– সিএসও সক্ষমতা উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক কর্মকর্তা জনাব নুরুল ইসলাম বলেছেন, “নাগরিকতা কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য— ২০২৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৬ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছানো। তাই, আমরা চেষ্টা করছি এই কর্মসূচি ভৌগোলিক ও জনমিতিকভাবে সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে।”
নাগরিক সমন্বয়ের প্রকল্প পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময় সভা পরিচালনা করেন।
ঢাকা/আজিজ/রফিক