গ্রাহকের জন্য ‘ওয়ার্ল্ড এলিট’ ক্রেডিট কার্ড এনেছে সিটি ব্যাংক ও মাস্টারকার্ড
Published: 23rd, November 2025 GMT
দেশে এই প্রথম মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্কভিত্তিক ‘ওয়ার্ল্ড এলিট’ ক্রেডিট কার্ড সেবা চালু করেছে সিটি ব্যাংক। এই ওয়ার্ল্ড এলিট ক্রেডিট কার্ডধারীদের জন্য শুরুতে ১০ হাজার টাকার উপহার ভাউচার রয়েছে। এ ছাড়া সিটি ক্যাপিটাল থেকে বিনিয়োগ পরামর্শ সেবা পাওয়া যাবে। এই কার্ডধারীরা শেরাটন ঢাকা, দ্য ওয়েস্টিন, লো মেরিডিয়েনসহ দেশের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে একটি বুফে কিনলে বিনা মূল্যে আরেকটি বুফে পাবেন।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানের সিটি ব্যাংক সেন্টারের কারনেশন মিলনায়তনে এই নতুন ক্রেডিট কার্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো.
মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্কভিত্তিক সিটি ব্যাংকের এই ‘ওয়ার্ল্ড এলিট’ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা বিদেশভ্রমণের সময় লাউঞ্জকি ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাউঞ্জে বিনা মূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। সিটি ব্যাংকের সব লাউঞ্জেও সীমাহীন প্রবেশের সুযোগ থাকবে। এ ছাড়া সিটি ব্যাংকের অন্যান্য ক্রেডিট ও ডেভিড কার্ডে যত ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়, এর সবই এই কার্ডে পাওয়া যাবে।
এই ক্রেডিট কার্ডধারীরা মাস্টারকার্ডের সব ধরনের আন্তর্জাতিক সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। এর মধ্যে আছে গলফ গ্রিন-ফি, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এক রাতের জন্য বিনা মূল্যের আবাসন ও বিশেষ খাবারের অভিজ্ঞতা। এ ছাড়া মেরিনা বে স্যান্ডসের সদস্যরা এই কার্ড ব্যবহার করে তিন মাস মেয়াদি স্যান্ডস লাইফস্টাইল এলিট সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারবেন। ফ্লেক্সিরোমের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেটা রোমিং বা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন তাঁরা। এই কার্ডে আছে ব্রিলিয়ান্ট বাই ল্যাঙ্গহাম রুবি সদস্যপদ ও টিপিসি গলফ গেইন সুবিধা।
অতিরিক্ত সুবিধার মধ্যে আরও আছে সার্বক্ষণিক মাস্টারকার্ড পরিচারক সহায়তা। ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় করা যাবে। সড়কপথে পরিবহনে ৫০০ ডলার পর্যন্ত ক্রেডিট সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া দেশের পাঁচ হাজারেরও বেশি অংশীদার বিক্রয়কেন্দ্রে কোনো ধরনের সুদ ছাড়া কিস্তি সুবিধা পাওয়া যাবে। নির্বাচিত বিভিন্ন রেস্তোরাঁ, পোশাকের দোকান ও জীবনযাপন–সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্র্যান্ডে বিশেষ ছাড়ও পাওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা যা বলেনসকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, এই কার্ডের নাম ‘ওয়ার্ল্ড এলিট’। কিন্তু তিনি মনে করেন, এই কার্ড দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। এই ক্রেডিট কার্ডধারীরা শুধু বিদেশে নয়, দেশের ভেতরেও খরচ করবেন। ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিও চাঙা হবে।
মাস্টারকার্ডের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সভাপতি গৌতম আগরওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন এক শ্রেণির মানুষ তৈরি হচ্ছে, যারা ব্যাংকিং খাতে বিশ্বমানের সেবা প্রত্যাশা করেন। এটি এই দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও মানুষের প্রত্যাশার পরিবর্তনের প্রতিফলন। মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে আমরা লেনদেনের বাইরে গিয়েও একজন গ্রাহককে উন্নত অভিজ্ঞতা ও নানা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। সে কারণে দেশের বাজারে এই ক্রেডিট কার্ড নিয়ে এসেছি।’
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘গত ১২ মাসে আমরা ৩০টির মতো নতুন সেবা চালু করেছি। গ্রাহকদের নানা সমস্যা ও অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এসব পণ্য চালু করেছে মাস্টারকার্ড। সিটি ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি এই কার্ডে এত বেশি সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে, যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গ্রাহকদের জন্যও প্রযোজ্য। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষ যেসব দেশে ভ্রমণ করেন, তা বিবেচনায় রেখে ক্রেডিট কার্ডের সেবাগুলো যুক্ত করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ট রক র ড র এই ক র ড অন ষ ঠ ন ব যবহ র র জন য প রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে আইন করা হবে না, থাকলে বাতিল করা হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কানুন (আইন) করা হবে না। যদি আগে করা হয়ে থাকে, সেটি বাতিল করা হবে।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ যুক্ত করেছিলেন। তবে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী সেটি সংবিধান থেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছিল। এটি আবার পুনর্বহাল করা হবে।
সম্মেলনে ইমাম ও খতিবদের পক্ষ থেকে সাতটি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে একটি হলো উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না।
বিষয়টির উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, উপযুক্ত তথ্য–প্রমাণ ছাড়া, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো নাগরিককে গ্রেপ্তার করা যায় না। কিন্তু বিগত সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকার দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে ছিল, আলেমবিদ্বেষী ছিল, তারা যে কাউকে ধরে নিয়ে এসে জঙ্গি বানানোর নাটক করত। সেই বাংলাদেশ এখন নেই। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নবযাত্রা শুরু হয়েছে। এই দেশে আইনকানুনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো বেআইনি কাজ কাউকে করতে দেওয়া হবে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি মদিনার ইসলামে বিশ্বাস করে এবং বাংলাদেশে যত ফিরকা-ফেতনা আছে, এগুলোর অবসান চায়। অবশ্যই সম্মিলিতভাবে ইমাম-খতিবরা সেভাবে কাজ করবেন। মসজিদে যেন দুনিয়ার কোনো কার্যক্রমকে প্রশ্রয় দেওয়া না হয়। সেটি তাদের খেয়াল রাখতে হবে। মসজিদ, ইমাম, খতিবদের যাতে বিতর্কের উর্ধ্বে রাখা হয়। রাজনৈতিক চর্চার জন্য বহু কেন্দ্র আছে, যাতে কোনো বিতর্ক না হয়, সেটা ইমাম-খতিবদের খেয়াল রাখতে হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি, হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।
সম্মেলনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন মাওলানা আজহারুল ইসলাম। এগুলো হলো সব ধর্মের প্রতি সহিষ্ণু হয়ে ইসলামি শরিয়াহকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে; রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ইমাম-খতিবদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা, বিভাগীয় এবং থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে ইমাম-খতিবদের সম্পৃক্ত করতে হবে; মসজিদ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মওকুফ করতে হবে; দেশের সব মসজিদের ইমামদের জন্য সার্ভিস রোল-নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে এবং মসজিদ কমিটিতে সম্মানজনক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; উপযুক্ত প্রমাণ ও তদন্ত ছাড়া কোনো ইমাম-খতিব ও আলেমকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না; সরকার স্বীকৃত দাওরায়ে হাদিসের সনদপ্রাপ্ত আলেমদের সরকারি মসজিদে ইমাম-খতিব নিয়োগ ও স্কুল-কলেজে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং কাজি নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং ইমাম-খতিবগণ কর্তৃক সমাজ সংস্কারমূলক কার্যক্রম, যেমন: মাদক ও যৌতুক নিরোধ, সুদ, ঘুষ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনে নিরুৎসাহিত করা এবং পারিবারিক ঐতিহ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষামূলক প্রভৃতি কার্যক্রমের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে এবং এ জন্য সম্মানজনক ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।