চ্যালেঞ্জ নিয়েই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি: খাদ্য উপদেষ্টা
Published: 23rd, November 2025 GMT
খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিনিয়ত কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন উল্লেখ করে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, “দেশের মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে হলে মাঠেই লড়াই করতে হয়। কাজটি নিষ্ঠার সঙ্গে করে যাচ্ছে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।”
রবিবার খাদ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ‘আমন ২০২৪-২৫ ও বোরো ২০২৫ সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ অবদান’ রাখায় ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গত আমন ও বোরো মৌসুমে সংগ্রহের পরিমাণ, চুক্তির বাস্তবায়ন, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, সততা ও সমন্বয়সহ বিভিন্ন সূচকে মূল্যায়ন করে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক পর্যায়ে একজন, জেলা পর্যায়ে পাঁচজন, উপজেলা পর্যায়ে দশজন এবং ব্যবস্থাপক/চলাচল ও সংরক্ষণ/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পর্যায়ের ১৫ জনসহ মোট ৩১ জনকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু খাদ্য অধিদপ্তর ছিল ব্যতিক্রম। এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংকট বা চাপে ভেঙে না পড়ে বরং চ্যালেঞ্জ নিয়ে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।’’
আমন সংগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “লক্ষ্যমাত্রা ন্যূনতম জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অর্জন করতে হবে সর্বোচ্চ। ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে; এতে কারো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বাড়বে। তাই মধ্য ফেব্রুয়ারির আগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।’’
তিনি এ সময় পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘‘দেশের জন্য কাজ করাই গৌরব। কোনো কৃষক ধান নিয়ে এলে তাকে ফেরত দেওয়া যাবে না। শুধু আদ্রতার বিষয়টি দেখা হবে। কোনো গুদামে বস্তাবন্দি পচা চাল পাওয়া গেলে তা সহ্য করা হবে না।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি খাদ্য সচিব মো.
চলমান আমন মৌসুমেও একইভাবে সাফল্য অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে চলমান সংগ্রহ অভিযান সফল করতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
ঢাকা/এএএম//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর মকর ত পর য য় র স গ রহ
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে আলোচিত এক নাম অনিক কুমার দাস। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ মাস জীবন-মৃত্যুর লড়াই পেরিয়ে ওঠা এই শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল থেকে।
অনিক ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সম্মুখসারির কর্মী। ১৬ জুলাই ঢাকার সিএমএম কোর্টের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার খাদ্যনালী ভেদ করে শরীরের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেলে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়।
আরো পড়ুন:
তারেক রহমানের জন্মদিনে ছাত্রদলের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ
কিন্তু ৩১ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেওয়া হলে অবস্থার আরো অবনতি হয়। ১১ আগস্ট ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের ভূমিকা সম্পর্কে অনিক বলেন, “আন্দোলনের প্রথমদিন থেকেই উন্মুক্ত লাইব্রেরি থেকে আমরা কার্যক্রম শুরু করি। পরে ১১ জুলাই সিনিয়রদের সরে যাওয়ার ঘোষণার পর আমরা কয়েকজন নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট ভেঙে শাহবাগে পৌঁছাই। ১৪ ও ১৫ জুলাই পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে টিএসসিতে অবস্থান নিই, সেদিন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলারও শিকার হই।”
তিনি বলেন, “১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এগোতেই সিএমএম আদালতের সামনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুক দিয়ে হামলা করে। পাল্টা ধাওয়া দিতে গেলে একটি গুলি এসে আমার পেটে লাগে। এরপর টানা ৩ মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছি।”
ছাত্রদলের প্যানেলে যুক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা, জবিকে নিয়ে তাদের ইতিবাচক চিন্তা এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার তাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে অনিক বলেন, “এটা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্বাসের বিষয়। আমি সবসময় তাদের ন্যায্য দাবির পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি, বাকিটা তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বিজয়ী হলে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাই হবে প্রথম দায়িত্ব। ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ২০২৪-এর ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানাবো, যেন ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচারী শক্তি শিক্ষাজীবন বিপন্ন করতে না পারে।”
গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
১৯–২০ নভেম্বর ছিল বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৪–২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে।
৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর চলবে প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ২২–২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে ফলাফল।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী