ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী নির্বাচনে আলেম-ওলামাদের দোয়া ও সমর্থন চাইলেন তারেক রহমান
Published: 23rd, November 2025 GMT
ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী নির্বাচনে আলেম-ওলামাদের দোয়া ও সমর্থন চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনায় বিএনপির মূলমন্ত্র হবে ন্যায়পরায়ণতা। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ন্যায়পরায়ণতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে একটি ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে বিএনপি দেশের সব ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, আলেম-ওলামা মাশায়েখের দোয়া ও সমর্থন চায়।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মিলিত ইমাম খতিব পরিষদ আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ দেড় দশকের তাঁবেদারি শাসন-শোষণের মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে, ইমান, ইসলাম এবং দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। তাই দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা সুসংহত করার জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি এমন একটি কল্যাণমূলক সমাজব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে মুসলমানরা নিঃসংকোচে কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে পারবে। নির্ভয়ে, নিরাপদে ইবাদত করতে পারবে। একইভাবে অন্য ধর্মের মানুষেরা নিরাপদে, নিশ্চিন্তে যার যার ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করতে সক্ষম হবে।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি মনে করে, সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা পালনকারী ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনদের মধ্যে যাঁরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এমন বাস্তবতায় তাঁদের মধ্যে যাঁরা আর্থিক টানাপোড়েনে আছেন, তাঁদের প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।বিএনপি ইসলামের মূলনীতি কিংবা মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে কখনো আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না বলেও উল্লেখ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, লাখ লাখ মসজিদ, মাদ্রাসা, ইমাম, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসাশিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রীয় অগ্রগতিমূলক কার্যক্রমের বাইরে রেখে দেশে কখনোই টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। এই বাস্তবতা থেকে বিএনপি আগামী দিনের কর্মসূচিতে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ইমাম-খতিব পরিষদের দাবির বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বেশ কয়েকটি দাবি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করার সব রকম সুযোগ রয়েছে। ইমাম-খতিব–মুয়াজ্জিনদের জন্য সার্ভিস রুল (চাকরিবিধি) প্রণয়নের দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। অনেক মসজিদে মসজিদ কমিটির ইচ্ছা–অনিচ্ছার ওপরে ইমাম-মুয়াজ্জিনের চাকরি নির্ভর করে, এটি হতে পারে না। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে সার্ভিস রুল প্রণয়নের ব্যাপারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্যোগ নেবে। অন্য দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগও গ্রহণ করবে। তবে প্রতিটি দাবি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ যাতে বিএনপিকে দেওয়া হয়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনবাংলাদেশে কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে আইন করা হবে না, থাকলে বাতিল করা হবে৩৯ মিনিট আগেতারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপি মনে করে, সমাজ সংস্কারকের ভূমিকা পালনকারী ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনদের মধ্যে যাঁরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এমন বাস্তবতায় তাঁদের মধ্যে যাঁরা আর্থিক টানাপোড়েনে আছেন, তাঁদের প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। ক্ষমতায় যেতে পারলে ইমাম, মুয়াজ্জিনদের সম্মানী দেওয়ার পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে ইমাম–মুয়াজ্জিনদের আর্থিকভাবে আরও স্বাবলম্বী করার জন্য ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টকে শক্তিশালী করে বহুমুখী প্রকল্প গ্রহণ করার চিন্তা রয়েছে বিএনপির।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি, হেফাজত নেতা জুনায়েদ আল হাবিব প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ত র ক রহম ন জ জ নদ র ব এনপ র আর থ ক র জন য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যালেঞ্জ নিয়েই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি: খাদ্য উপদেষ্টা
খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিনিয়ত কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন উল্লেখ করে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, “দেশের মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে হলে মাঠেই লড়াই করতে হয়। কাজটি নিষ্ঠার সঙ্গে করে যাচ্ছে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।”
রবিবার খাদ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ‘আমন ২০২৪-২৫ ও বোরো ২০২৫ সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ অবদান’ রাখায় ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গত আমন ও বোরো মৌসুমে সংগ্রহের পরিমাণ, চুক্তির বাস্তবায়ন, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, সততা ও সমন্বয়সহ বিভিন্ন সূচকে মূল্যায়ন করে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক পর্যায়ে একজন, জেলা পর্যায়ে পাঁচজন, উপজেলা পর্যায়ে দশজন এবং ব্যবস্থাপক/চলাচল ও সংরক্ষণ/ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পর্যায়ের ১৫ জনসহ মোট ৩১ জনকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু খাদ্য অধিদপ্তর ছিল ব্যতিক্রম। এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংকট বা চাপে ভেঙে না পড়ে বরং চ্যালেঞ্জ নিয়ে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।’’
আমন সংগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “লক্ষ্যমাত্রা ন্যূনতম জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অর্জন করতে হবে সর্বোচ্চ। ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে; এতে কারো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বাড়বে। তাই মধ্য ফেব্রুয়ারির আগেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।’’
তিনি এ সময় পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘‘দেশের জন্য কাজ করাই গৌরব। কোনো কৃষক ধান নিয়ে এলে তাকে ফেরত দেওয়া যাবে না। শুধু আদ্রতার বিষয়টি দেখা হবে। কোনো গুদামে বস্তাবন্দি পচা চাল পাওয়া গেলে তা সহ্য করা হবে না।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, ‘‘বিগত বোরো মৌসুমে দেশের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায়।’’
চলমান আমন মৌসুমেও একইভাবে সাফল্য অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে চলমান সংগ্রহ অভিযান সফল করতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
ঢাকা/এএএম//