বিএনপি থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিকে সময় বেঁধে দিলেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জানে আলম। আগামী ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে তৃণমূল বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি পথ বেছে নেবেন বলে ঘোষণা দেন।

আজ রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শেরপুর পৌর শহরের সকাল বাজার এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। শহীদ গাজীউর রহমান কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের দুই উপজেলার বিএনপির কর্মী–সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় জানে আলম বলেন, ২০২১ সালে বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি শেরপুর পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এই নির্বাচন করায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ জন্য তিনি দলের হাইকমান্ডের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। স্থানীয়ভাবে প্রকাশ্যেও দলীয় নেতা–কর্মীদের কাছে সমাবেশের মাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাঁরা বিগত সময়ে নির্বাচন করেছেন, তাঁদের অনেকেরই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়েছে। তাঁর বহিষ্কারাদেশ এখনো প্রত্যাহার করা হয়নি।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন শেরপুর উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ আলম। সভায় উপস্থিত ছিলেন শেরপুর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, শেরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুর রহমান, বগুড়া জেলা বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

অভাবের কথা বলে পরিচিত হন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে হাতিয়ে নেন টাকা

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্দেহভাজন দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম শাখার একটি আভিযানিক দল তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. হাসানুজ্জামান (৩৫) ও মো. আলমগীর শিকারী (৪৬)।

সিআইডি জানায়, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সিআইডি বা পুলিশের পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে অপহরণ, মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদা আদায় এবং বিব্রতকর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করে আসছিল। তাঁরা মূলত তাবলিগ জামাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সূত্র ধরে মানুষের সঙ্গে পরিচয় তৈরি করে বিশ্বাস অর্জন করত। এরপর অভাবের কথা বলে টাকা নেওয়ার মাধ্যমে ফাঁদ পাতত।

সিআইডি সূত্র আরও জানায়, কাকরাইল মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত শামসুল হক খানের (৫৬) সঙ্গে জামাল (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যবসায়ীর এভাবেই পরিচয় হয়। চক্রের সদস্য শামসুল প্রায়ই অসুস্থতা ও অভাবের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিতেন।

সূত্রটি জানায়, গত ১৪ অক্টোবর রাতে ব্যবসায়িক কাজ সেরে খুলনা থেকে ঢাকায় এলে জামালের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাঁচাবাজার গোলচত্বরে দেখা করেন সামসুল। নাশতা শেষে তাঁকে দুই হাজার টাকা দিয়ে রেস্তোরাঁ থেকে বের হতেই সামসুসহ আরও সাতজন নিজেদের সিআইডি পরিচয় দিয়ে জাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে জামালকে জোর করে গাড়িতে তোলেন। এ সময় জামালের এক ব্যবসায়িক অংশীদারও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

ভুক্তভোগীদের ঢাকার হাসনাবাদ এলাকায় বসুন্ধরা সিটির বি-ব্লক, রোড-৮–এর একটি ছয়তলা বাড়ির ছয়তলায় নিয়ে যাওয়া হয় উল্লেখ করে সিআইডি জানায়, সেখানে প্রথমে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জামালকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে ভয় দেখিয়ে তাঁর নগদ টাকা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১ কোটি ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। জামালের ব্যবসায়িক অংশীদারের কাছ থেকেও ২৭ হাজার টাকা নেওয়া হয়।

সিআইডি আরও জানায়, জামালকে বিবস্ত্র করে এক নারীর সঙ্গে বসিয়ে ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হয় এবং ১৮টি নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। দুজনকে টানা প্রায় ১৭ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে ঘটনাটি পুলিশে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

সিআইডি জানায়, এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর চক্রটি ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করে। ঘটনার পর জামাল যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা (নং-১৬, তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৫) দায়ের করেন। এরপর মামলার তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করে এবং চক্রের সদস্য হাসানুজ্জামান ও আলমগীর শিকারীকে গ্রেপ্তার করে।

সিআইডি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। চক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশের এই সংস্থা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ