প্রথম নারী জেলা প্রশাসক পেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া
Published: 10th, November 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমকে বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁদের বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলটি আগে কুমিল্লা জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে জেলা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার চার দশকে প্রথম নারী জেলা প্রশাসক পেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুল ইসলামের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে শারমিন আক্তারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক পদে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। তিনি বিসিএস (প্রশাসন) ২৫ ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তিনি নড়াইলের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন।
অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেতী প্রুর সই করা আরেকটি প্রজ্ঞাপনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক দিদারুল আলমকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তিনি বিসিএস (প্রশাসন) ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা। তিনি ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন।
এ বিষয়ে জেলার সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি আব্দুন নূর বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই প্রথম কোনো নারীকে জেলা প্রশাসক পদে পদায়ন করা হয়েছে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়
এছাড়াও পড়ুন:
সালমান এফ রহমানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন সিআইডির
বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১২ শ কোটি টাকা) পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ১৭টি মানি লন্ডারিং (অর্থ পাচার) মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ রোববার সিআইডি সদর দপ্তরে বেলা সাড়ে তিনটায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (পুলিশ মহাপরিদর্শক) মো. ছিবগাত উল্লাহ।
সিআইডি জানায়, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দুই ভাই—বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার করা হয়।
এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে অ্যাপোলো অ্যাপারেলস, অটাম লুপ অ্যাপারেলস, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস, কসমোপলিটন অ্যাপারেলস, কোরি অ্যাপারেলস, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস, পিয়ারলেস গার্মেন্টস, পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস, আরবান ফ্যাশনস এবং উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড।
সিআইডির তদন্তে দেখা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল শাখা থেকে এলসি খুলে রপ্তানির নামে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হিসাব দেখালেও অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত আনা হয়নি। রপ্তানির অর্থ চলে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর আর গ্লোবাল ট্রেডিংয়ে। এ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এ এস এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নাম রয়েছে।
সিআইডির তদন্তে দেখা যায়, এসব প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল শাখা থেকে এলসি খুলে রপ্তানির নামে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হিসাব দেখালেও অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত আনা হয়নি। রপ্তানির অর্থ চলে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর আর গ্লোবাল ট্রেডিংয়ে। এ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এ এস এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নাম রয়েছে।সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দেশে না এনে বিদেশে পাচার করা হয়। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মতিঝিল থানায় সিআইডি বাদী হয়ে মোট ১৭টি মানি লন্ডারিং মামলা করে। তদন্ত শেষে এসব মামলায় ২৮ ব্যক্তি ও ১৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে আদালতের আদেশে আসামিদের প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে সিআইডি। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার দোহার উপজেলায় প্রায় দুই হাজার শতক জমি ও স্থাপনা, গুলশানের ‘দ্য এনভয় বিল্ডিং’-এর একটি ফ্ল্যাট এবং গুলশান-২–এর ৬৮/৪ নম্বর রাস্তায় ৩১ নম্বর প্লটের একটি ট্রিপ্লেক্স ফ্ল্যাট।
এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং আসামিদের বিদেশগমনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কারাগারে থাকা সালমান এফ রহমানকে মামলাগুলোতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। একই মামলায় সহযোগী প্রতিষ্ঠান লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শেয়ার হোল্ডার ওয়াসিউর রহমানকে গত জুলাইয়ে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
সিআইডি বলেছে, ট্রেড–বেজড মানি লন্ডারিংয়ের মতো জটিল ও সময়সাপেক্ষ তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে রাষ্ট্রের অর্থ পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান ও তদন্ত অব্যাহত থাকবে।