আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার তিনটি স্তর রয়েছে: তাকওয়া, বির্‌র ও ইহসান। কোরআন ও সুন্নাহ আমাদের এই তিনটির সঠিক অর্থ, সম্পর্ক এবং ফলাফল শেখায়। যে এগুলো বুঝে জীবনে প্রয়োগ করে, তার জীবন হয়ে ওঠে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ।

তাকওয়া কী?

তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয়ে চলা। ফরজ পালন করা, হারাম ছেড়ে দেওয়া। এটি শাস্তি থেকে রক্ষা করে। শর্ত হলো, খাঁটি নিয়ত এবং রাসুলুল্লাহ (সা.

)-এর অনুসরণ। কোরআনে তাকওয়ার ফলের কথা বলা হয়েছে যে তাকওয়া থাকলে কাজ সহজ হয়, রিজিক আসে, গুনাহ মাফ হয়, ফিতনা থেকে বাঁচা, সত্য-মিথ্যা চেনা যায়।

আল্লাহ বলেন, “হে ইমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো, তিনি তোমাদের ফুরকান দেবেন, গুনাহ মাফ করবেন, ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।” (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৯)

আরও বলেন, “যে তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ করে দেন, অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে রিজিক দেন। যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনি তার জন্য যথেষ্ট।” (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩)

আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫বির্‌র কী?

বিরর তাকওয়ার চেয়ে উঁচু স্তর। তাকওয়া ফরজ-ওয়াজিব, বিরর নফলের স্তর। আল্লাহ বলেন, “তোমরা যা ভালোবাসো তা ব্যয় না করলে বিরর পাবে না।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯২)

ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, এর অর্থ হলো, প্রিয় জিনিস দান না করলে জান্নাত পাবে না। (জামিউল বায়ান ফি তাওয়িলিল কোরআন, ৬/১৬৫, দারু ইহইয়া আত-তুরাস, বৈরুত, ২০০১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “সম্পদে জাকাত ছাড়াও হক আছে।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৮৩৮)।

তাবারি (রহ.) বর্ণনা করেন, এক বেদুঈন এসে জিজ্ঞাসা করল, জাকাতের পর উটে আর হক আছে কি? নবীজি বললেন, “হ্যাঁ, লাগাম ধার দেওয়া, দুধ দেওয়া।” (জামিউল বায়ান ৬/১৬৭, দারু ইহইয়া আত-তুরাস, বৈরুত, ২০০১)

সহজ কথা হলো, জাকাত দিলে তাকওয়া, প্রিয় জিনিস দিলে বির্‌র। জাকাতকারীকে বলা হয়েছে প্রিয় সম্পদ নেবেন না। কিন্তু বির্‌র চাইলে প্রিয়টি দিতে হবে।

তাকওয়া ও বিররের সম্পর্ক

কোরআনে দেখুন, “বির্‌র এটা নয় যে পূর্ব-পশ্চিমে মুখ করো। বরং বির্‌র যে আল্লাহ, আখেরাত, ফেরেশতা, কিতাব, নবীতে ইমান আনে; প্রিয় সম্পদ আত্মীয়, এতিম, মিসকিন, মুসাফির, প্রার্থী, দাসমুক্তিতে দেয়; নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয়; ওয়াদা পালন করে; দারিদ্র্য, কষ্ট, যুদ্ধে ধৈর্য ধরে। এরাই সত্যবাদী, এরাই মুত্তাকি।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৭৭)।

আয়াত বির্‌র দিয়ে শুরু, তাকওয়ায় শেষ। কারণ বির্‌র করতে হলে তাকওয়া আগে দরকার। তাকওয়া ছাড়া বির্‌র কবুল হয় না। আরেক আয়াত আছে, “বাড়ির পেছন থেকে আসা বির্‌র নয়। বরং বির্‌র হলো যে খোদাভীতি অবলম্বন করে। বাড়ির দরজা দিয়ে ঢোকো। আল্লাহকে ভয় করো, যাতে সফল হও।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৯)

আরও পড়ুনইসলামে ‘ইহসান’ বলতে কী বুঝায়০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কারো বাড়ির পেছন দিয়ে ঢোকা অনুচিত এবং তাকওয়ার লঙ্ঘন। সঠিক পথে অতিরিক্ত ইবাদত করা হলে তা হবে খোদাভীরু মানুষের বির্‌র। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ খোদাভীরুদের থেকে কবুল করেন।” (সুরা মায়িদাহ, আয়াত: ২৭)

“বির্‌র ও তাকওয়ায় সাহায্য করো, পাপ ও সীমালঙ্ঘনে নয়। আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো, তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।” (সুরা মায়িদাহ, আয়াত: ২)

কেউ বলেন, বির্‌র মানে আদেশ পালন, তাকওয়া নিষেধ থেকে বিরত। কেউ বলেন, বির্‌র মানে সৎকর্ম, তাকওয়া মানে মন্দ কাজ ছেড়ে দেওয়া। কেউ বলেন, তাকওয়া আল্লাহর সন্তুষ্টি, বিরর মানুষের সন্তুষ্টি। আয়াতে তাকওয়ার কথা পরে বলা হয়েছে, বির্‌র তাকওয়ার ওপর নির্ভর করে।

বির্‌র হলো মর্যাদাবান কাজ, নফল নামাজ, অতিরিক্ত দান। কোরআনে বির্‌র আগে, তাকওয়া পরে, বিররের মর্যাদা বেশি। ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, “বির্‌র ও তাকওয়া ইমান-ইসলামের অংশ। হৃদয়ের তাকওয়া, অঙ্গের বিরর।” (ইবনুল কাইয়্যিম, মাদারিজুস সালিকিন, ১/১২৩, দারুল কিতাব আল-আরাবি, বৈরুত, ১৯৯৬)

ইহসান কী?

ইহসান মানে সর্বোত্তমভাবে সৎ কাজ করা। ইবাদতে শরিয়ত মোতাবেক, অন্তরে খাঁটি নিয়ত, পিতামাতার সঙ্গে সদয়, কাজে দক্ষতা মিলেই ইহসান হয়। ইহসান ইসলামের সঙ্গে শুরু: ফরজ পূর্ণ করা, হারাম ছেড়ে দেওযা, আমল নফল যোগ করা।

আল্লাহ বলেছেন, “যে তার চেহারা আল্লাহর দিকে সমর্পণ করে এবং ইহসানকারী, সে মজবুত হাতল ধরেছে।” (সুরা লুকমান, আয়াত: ২২)

ইহসানের উচ্চ স্তর সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল বলেন, “আল্লাহকে এমন ইবাদত করো যেন দেখছ। না দেখলে তিনি দেখছেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০)।

আল্লাহ বলেন, খোদাভীরুরা রাতে কম ঘুমায়, সেহরিতে ইসতিগফার করে, দান করে, এরা মুহসিন। (সুরা যারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯)

আল্লাহ ইহসানকারীদের জান্নাত, উজ্জ্বল মুখ, মুক্তার ঘর, ক্ষমা, সন্তুষ্টি, দিদার দেন। আল্লাহ বলেছেন, “যারা ইহসান করে, তাদের জন্য হুসনা ও অতিরিক্ত।” (সুরা ইউনুস, আয়াত: ২৬)

নবীজি বলেন, “আল্লাহকে যেন দেখছ এমন ইবাদত করো।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮)।

আল্লাহ বলেছেন, “যে তার রবের সামনে দাঁড়ানোর ভয় করে, তার জন্য দুই জান্নাত... ইহসানের প্রতিদান ইহসান ছাড়া কী?” (সুরা রাহমান, আয়াত: ৪৬-৬০)

আল্লাহ আমাদের সকলকে ইহসানের স্তরে পৌঁছান, আমিন।

আরও পড়ুনসামাজিক নিরাপত্তায় প্রয়োজন ‘তাকওয়া’১৭ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সন ত ষ ট র ত কওয ইহস ন র র জন য ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

তাকওয়া, বির্‌র ও ইহসানের সম্পর্ক

আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার তিনটি স্তর রয়েছে: তাকওয়া, বির্‌র ও ইহসান। কোরআন ও সুন্নাহ আমাদের এই তিনটির সঠিক অর্থ, সম্পর্ক এবং ফলাফল শেখায়। যে এগুলো বুঝে জীবনে প্রয়োগ করে, তার জীবন হয়ে ওঠে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ।

তাকওয়া কী?

তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয়ে চলা। ফরজ পালন করা, হারাম ছেড়ে দেওয়া। এটি শাস্তি থেকে রক্ষা করে। শর্ত হলো, খাঁটি নিয়ত এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণ। কোরআনে তাকওয়ার ফলের কথা বলা হয়েছে যে তাকওয়া থাকলে কাজ সহজ হয়, রিজিক আসে, গুনাহ মাফ হয়, ফিতনা থেকে বাঁচা, সত্য-মিথ্যা চেনা যায়।

আল্লাহ বলেন, “হে ইমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো, তিনি তোমাদের ফুরকান দেবেন, গুনাহ মাফ করবেন, ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।” (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৯)

আরও বলেন, “যে তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ করে দেন, অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে রিজিক দেন। যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনি তার জন্য যথেষ্ট।” (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩)

আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫বির্‌র কী?

বিরর তাকওয়ার চেয়ে উঁচু স্তর। তাকওয়া ফরজ-ওয়াজিব, বিরর নফলের স্তর। আল্লাহ বলেন, “তোমরা যা ভালোবাসো তা ব্যয় না করলে বিরর পাবে না।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯২)

ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, এর অর্থ হলো, প্রিয় জিনিস দান না করলে জান্নাত পাবে না। (জামিউল বায়ান ফি তাওয়িলিল কোরআন, ৬/১৬৫, দারু ইহইয়া আত-তুরাস, বৈরুত, ২০০১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “সম্পদে জাকাত ছাড়াও হক আছে।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৮৩৮)।

তাবারি (রহ.) বর্ণনা করেন, এক বেদুঈন এসে জিজ্ঞাসা করল, জাকাতের পর উটে আর হক আছে কি? নবীজি বললেন, “হ্যাঁ, লাগাম ধার দেওয়া, দুধ দেওয়া।” (জামিউল বায়ান ৬/১৬৭, দারু ইহইয়া আত-তুরাস, বৈরুত, ২০০১)

সহজ কথা হলো, জাকাত দিলে তাকওয়া, প্রিয় জিনিস দিলে বির্‌র। জাকাতকারীকে বলা হয়েছে প্রিয় সম্পদ নেবেন না। কিন্তু বির্‌র চাইলে প্রিয়টি দিতে হবে।

তাকওয়া ও বিররের সম্পর্ক

কোরআনে দেখুন, “বির্‌র এটা নয় যে পূর্ব-পশ্চিমে মুখ করো। বরং বির্‌র যে আল্লাহ, আখেরাত, ফেরেশতা, কিতাব, নবীতে ইমান আনে; প্রিয় সম্পদ আত্মীয়, এতিম, মিসকিন, মুসাফির, প্রার্থী, দাসমুক্তিতে দেয়; নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয়; ওয়াদা পালন করে; দারিদ্র্য, কষ্ট, যুদ্ধে ধৈর্য ধরে। এরাই সত্যবাদী, এরাই মুত্তাকি।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৭৭)।

আয়াত বির্‌র দিয়ে শুরু, তাকওয়ায় শেষ। কারণ বির্‌র করতে হলে তাকওয়া আগে দরকার। তাকওয়া ছাড়া বির্‌র কবুল হয় না। আরেক আয়াত আছে, “বাড়ির পেছন থেকে আসা বির্‌র নয়। বরং বির্‌র হলো যে খোদাভীতি অবলম্বন করে। বাড়ির দরজা দিয়ে ঢোকো। আল্লাহকে ভয় করো, যাতে সফল হও।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৯)

আরও পড়ুনইসলামে ‘ইহসান’ বলতে কী বুঝায়০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কারো বাড়ির পেছন দিয়ে ঢোকা অনুচিত এবং তাকওয়ার লঙ্ঘন। সঠিক পথে অতিরিক্ত ইবাদত করা হলে তা হবে খোদাভীরু মানুষের বির্‌র। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ খোদাভীরুদের থেকে কবুল করেন।” (সুরা মায়িদাহ, আয়াত: ২৭)

“বির্‌র ও তাকওয়ায় সাহায্য করো, পাপ ও সীমালঙ্ঘনে নয়। আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো, তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।” (সুরা মায়িদাহ, আয়াত: ২)

কেউ বলেন, বির্‌র মানে আদেশ পালন, তাকওয়া নিষেধ থেকে বিরত। কেউ বলেন, বির্‌র মানে সৎকর্ম, তাকওয়া মানে মন্দ কাজ ছেড়ে দেওয়া। কেউ বলেন, তাকওয়া আল্লাহর সন্তুষ্টি, বিরর মানুষের সন্তুষ্টি। আয়াতে তাকওয়ার কথা পরে বলা হয়েছে, বির্‌র তাকওয়ার ওপর নির্ভর করে।

বির্‌র হলো মর্যাদাবান কাজ, নফল নামাজ, অতিরিক্ত দান। কোরআনে বির্‌র আগে, তাকওয়া পরে, বিররের মর্যাদা বেশি। ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, “বির্‌র ও তাকওয়া ইমান-ইসলামের অংশ। হৃদয়ের তাকওয়া, অঙ্গের বিরর।” (ইবনুল কাইয়্যিম, মাদারিজুস সালিকিন, ১/১২৩, দারুল কিতাব আল-আরাবি, বৈরুত, ১৯৯৬)

ইহসান কী?

ইহসান মানে সর্বোত্তমভাবে সৎ কাজ করা। ইবাদতে শরিয়ত মোতাবেক, অন্তরে খাঁটি নিয়ত, পিতামাতার সঙ্গে সদয়, কাজে দক্ষতা মিলেই ইহসান হয়। ইহসান ইসলামের সঙ্গে শুরু: ফরজ পূর্ণ করা, হারাম ছেড়ে দেওযা, আমল নফল যোগ করা।

আল্লাহ বলেছেন, “যে তার চেহারা আল্লাহর দিকে সমর্পণ করে এবং ইহসানকারী, সে মজবুত হাতল ধরেছে।” (সুরা লুকমান, আয়াত: ২২)

ইহসানের উচ্চ স্তর সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল বলেন, “আল্লাহকে এমন ইবাদত করো যেন দেখছ। না দেখলে তিনি দেখছেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০)।

আল্লাহ বলেন, খোদাভীরুরা রাতে কম ঘুমায়, সেহরিতে ইসতিগফার করে, দান করে, এরা মুহসিন। (সুরা যারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯)

আল্লাহ ইহসানকারীদের জান্নাত, উজ্জ্বল মুখ, মুক্তার ঘর, ক্ষমা, সন্তুষ্টি, দিদার দেন। আল্লাহ বলেছেন, “যারা ইহসান করে, তাদের জন্য হুসনা ও অতিরিক্ত।” (সুরা ইউনুস, আয়াত: ২৬)

নবীজি বলেন, “আল্লাহকে যেন দেখছ এমন ইবাদত করো।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮)।

আল্লাহ বলেছেন, “যে তার রবের সামনে দাঁড়ানোর ভয় করে, তার জন্য দুই জান্নাত... ইহসানের প্রতিদান ইহসান ছাড়া কী?” (সুরা রাহমান, আয়াত: ৪৬-৬০)

আল্লাহ আমাদের সকলকে ইহসানের স্তরে পৌঁছান, আমিন।

আরও পড়ুনসামাজিক নিরাপত্তায় প্রয়োজন ‘তাকওয়া’১৭ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ