টানা ১১ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন পাঞ্জাবি গায়ক রাজবীর জাওয়ান্ডা। বুধবার (৮ অক্টোবর) মোহালির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে।  

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গায়ক রাজবীরকে মৃত ঘোষণা করেন।  

আরো পড়ুন:

নিষিদ্ধের গুঞ্জনে মুখ খুললেন রাশমিকা

দীপাবলিতে মুক্তি পাবে চার সিনেমা

গায়ক রাজবীরের মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন পাঞ্জাবের শিক্ষামন্ত্রী হরজত সিং বেইনস। তাতে তিনি লেখেন, “বিখ্যাত গায়ক রাজবীর জাওয়ান্ডার অসময়ে চলে যাওয়ার খবরে গভীরভাবে শোকাহত।” 

গত ২৭ সেপ্টেম্বর মোটরসাইকেল যোগে হিমাচলপ্রদেশের শিমলায় যাচ্ছিলেন সংগীতশিল্পী রাজবীর। হিমাচলপ্রদেশের বাডি এলাকায় মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তারপর গুরুতর আহত অবস্থায় গায়ককে মোহালির একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।    

তারপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজবীর। বেশ কিছুদিন ভেন্টিলেশন সাপোর্টে ছিলেন গায়ক। দুর্ঘটনার পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও রাখা হয়েছিল। সর্বশেষ পরপারে পাড়ি জমালেন এই শিল্পী।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বাবার বিরুদ্ধে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠনের অভিযোগ দুই কন্যর

আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা ডা. শেখ বাহারুল আলম খুলনায় ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠন করছেন। আলোচিত শেখ বাড়ির সঙ্গে সু-সম্পর্ক থাকায় নিজ বাড়িতে ও খুলনা বিএমএতে বসে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠনের কাজ করছেন তিনি। এ অভিযোগ খোদ তার দুই কন্যার।

বুধবার (৮ অক্টোবর) খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ডা. শেখ বাহারের মেয়ে শেখ তামান্না আলম ও ডা. তাসনুভা আলম। একইসঙ্গে তারা তাদের বাবার বিরুদ্ধে চিকিৎসক মাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগ করেন।

আরো পড়ুন:

‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে অধিদপ্তরের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে’

পবিত্র কুরআন অবমাননাকারীর শাস্তির দাবিতে কুয়েটে বিক্ষোভ

এমনকি পরকীয়াসহ তার নানা অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় যেকোনো সময় তারা দুই বোন খুন বা অপহরণের শিকার হতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তামান্না আলম ৩৬ বছর আগে তার মায়ের হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য বাবাকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়েরের কথা জানান। বাবার নানা অনৈতিক কাজের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, এসব কারণে খুলনা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন আদালতে ডা. বাহারের বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়া দুই বোন জীবনের নিরাপত্তার জন্য সোনাডাঙ্গা থানায় জিডিও করেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই বোন বলেন, “ডা. বাহার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। তিনি বিএমএর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও খুলনা শাখার সভাপতি। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি। খুলনা বিএমএ ভবন ও তাদের সোনাডাঙ্গাস্থ বাসভবনে দিনের বেশিরভাগ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করেন। রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ গঠনের লক্ষ্যে সারাদিন ডা. বাহার তাদের নিয়ে বৈঠক করেন।”

বাহার কন্যা শেখ তামান্না আলম অভিযোগ করে জানান, পিতার পরকীয়া সম্পর্ক ও নির্মম অত্যাচারে ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর তার মায়ের মৃত্যু হয়। এরপরও বিভিন্ন নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালসের বেতনভুক্ত কর্মচারী হেনা রানী ভৌমিকের সঙ্গে ডা. বাহারের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের ঘরে ১৮ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

হেনা রানী ভৌমিক বিবাহিত, তার স্বামী চিত্ত রঞ্জন সেন জেনেশুনে তার স্ত্রীকে ডা. বাহারের কাছে থাকতে দিচ্ছেন। বিনিময়ে ডা. বাহারের বিএমএ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের পদ পদবী ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকাকালে নিয়োগ ও বদলী বাণিজ্য করেছেন।

সম্প্রতি হেনা রানীকে এপিসি ফার্মাসিউটিক্যালসের ১০ হাজার শেয়ার লিখে দিয়েছেন। চিত্ত রঞ্জন সেন ব্যক্তিগত গাড়ি কিনে রেজিস্ট্রেশনের সময় ডা. বাহারের বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। এক সময়ের সামান্য বেতনের কর্মচারী হেনা রানী এখন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক। অথচ অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে ৫০ বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান এপিসি ফার্মা এখন বন্ধের পথে।

তিনি আরো অভিযোগ করে জানান, মূলত ডা. বাহারকে ব্যবহার করে তার সমুদয় অর্থ সম্পত্তি গ্রাস করতে চায় হেনা রানী ও চিত্ত রঞ্জন। আর বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে তাদের দুই বোনকে হত্যার চক্রান্ত করা হচ্ছে।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওষুধ কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে স্মার্ট অ্যাগ্রো বিডি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা গ্রহণের পর তা আত্মসাতের চেষ্টা, পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে ডা. বাহারের বোনদের বঞ্চিত করা, বড় মেয়ের স্বাক্ষর জাল করে ঢাকার ফ্ল্যাট ৭০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া, ছোট মেয়ের স্বাক্ষর জাল করে পূবালী ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা লোন উত্তোলনের অভিযোগ আনা হয়।

এসব ঘটনায় স্মার্ট অ্যাগ্রো বিডির মালিক মিসেস লুবনা জাহান, তারা দুই বোন ও তাদের ফুপুরা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে ডা. বাহারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানানো হয়।

তবে মেয়েদের অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, “কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মেয়েরা এসব কথা বলছে। না হলে ৩৬ বছর পরে কেন অভিযোগ উঠবে। এপিসি ফার্মায় আমাকে কাবু করতে পারলে এটা স্বস্তায় কিনতে পারে। এজন্য তারা নেপথ্যে থেকে এটা করাচ্ছে।”

কন্যা তামান্না আলম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সম্প্রতি তাকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। নিয়ম বর্হিভূত কাজ করায় কোম্পানি এ সিদ্ধান্ত নেয়। এটা ও মানতে পারছে না।”

আওয়ামী লীগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করায় দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন জানিয়ে ডা. বাহার বলেন, “এমনকি স্বাচিপ থেকে তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ