নেত্রকোনায় ডিলারের বিরুদ্ধে কালোবাজারে চাল বিক্রির অভিযোগ, তদন্ত শুরু
Published: 26th, November 2025 GMT
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওই কমিটি গত সোমবার থেকে তদন্ত শুরু করেছে। এ সম্পর্কে কমিটির আহ্বায়ক বারহাট্টা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তকাজ শুরু করেছি। উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে প্রাথমিক ধাপে কীভাবে কার মাধ্যমে খাদ্যশস্য উত্তোলন করা হয়েছে, এসবের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। আরও বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে।’
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২৬ জন ডিলার আছে। মোট কার্ডধারীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৩৬ জন। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বরাদ্দ ৫৬০ মেট্রিক টন চাল ডিলাররা গুদাম থেকে উত্তোলন করেছেন। তবে সেই চাল সুবিধাভোগীদের মধে৵ যথাযথভাবে বিক্রি না করে কালোবাজারে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। ওই দুই মাসের চাল না পেয়ে নওপাড়া ইউনিয়নের সুবিধাভোগী রিয়াজ উদ্দিন, দুখু মিয়া, ঝান্টু মিয়া, ফজলু মিয়াসহ সাতজন ১৩ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
পরে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে ১৭ নভেম্বর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
অভিযোগকারী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘আগস্ট মাসে আমাদের চাল না দিয়ে ডিলার আমির হোসেন বেশি দামে অন্য জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওপাড়া ইউনিয়নের ডিলার গত রবি ও সোমবার দুই মাসের ৬০ কেজি চাল একসঙ্গে সুবিধাভোগীদের কাছে বিক্রি করেন। জানতে চেয়ে ডিলার আমির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ওই ইউনিয়নের ট্যাগ কর্মকর্তা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু কাওসারের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বলাইশিমুল ইউনিয়নের সরাপাড়া বাজারের ডিলার হাবিবুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে যথাসময়ের মধ্যে সুবিধাভোগীদের কাছে চাল বিক্রি করা হয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। অন্য ইউনিয়নের বিষয়গুলো আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাওসার আহমেদ ও খাদ্যগুদামের তখনকার দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতাকাব্বির খান বলেন, ডিলাররা যথাসময়ে চাল উত্তোলন করেছেন। সব কিছুরই প্রমাণ রয়েছে। এ ছাড়া চাল বিক্রির সময় ঘটনাস্থলে ট্যাগ অফিসার থাকেন। কালোবাজারে চাল বিক্রি হয়েছে কি না, তা সুষ্ঠু তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।
জেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোয়েতাছেমুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রকৃত বিষয় জানা যাবে। যদি আমার কোনো কর্মকর্তা কালোবাজারের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: খ দ য ন য ন ত রক ইউন য ন র কর মকর ত ন বল ন তদন ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অবৈধভাবে মজুত করা টিসিবির ২৪৮ বস্তা চাল জব্দ, আটক ১
অবৈধভাবে মজুত করা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির ৩০ কেজি ওজনের ২৪৮ বস্তা চাল শেরপুর সদর থেকে জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় গোপান তথ্যের ভিত্তিতে সদরের শেখহাটি বাজার থেকে এই চাল জব্দ হয়। এসময় আটক করা হয় টিসিবির ডিলার নজরুল ইসলামকে (৩৫)।
আরো পড়ুন:
পাবনায় রাস্তায় পড়ে থাকা ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
বগুড়ায় গলা কাটা ২ শিশু ও তাদের মায়ের মরদেহ উদ্ধার
আটক নজরুল ইসলাম সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের গণইভরুয়াপাড়া গ্রামের একাব্বর হাজির ছেলে।
পুলিশ জানায়, ডিলার নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে টিসিবির পণ্য কৌশলে গ্রাহকদের না দিয়ে স্থানীয় বাজারসহ আশপাশের বাজারে বিক্রি করছিলেন। মঙ্গলবার গ্রাহকদের এসব চাল স্থানীয় জান্নাত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি দোকানে অবৈধভাবে মজুত করছিলেন তিনি। এনএসআইর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ। এসময় ৩০ কেজি ওজনের ২৪৮টি বস্তায় থাকা ৭ হাজার ৪৪০ কেজি চাল জব্দ করা হয়। আটক করা হয় নজরুল ইসলামকে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া।
শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুবায়দুল আলম বলেন, “চাল জব্দ করা হয়েছে। একজনকে আটক করা হয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ