চেলসির কাছে পাত্তা পেল না বার্সেলোনা
Published: 26th, November 2025 GMT
স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ১০ জনের বার্সেলোনাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ যাত্রায় ছন্দে ফিরল চেলসি। ম্যাচে সবচেয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ১৮ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার এস্টেভাওয়ের দুর্দান্ত একক প্রচেষ্টার গোলটি। যা বহুদিন মনে রাখবে পশ্চিম লন্ডন।
জুল কুন্দের আত্মঘাতী গোলে আগে থেকেই এগিয়ে ছিল এনজো মারেৎস্কার দল। দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় ক্যাপ্টেন রোনাল্ড আরাউহোকে লাল কার্ডে হারানো বার্সা রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে জাদুকরি কিছু উপহার দিলেন তরুণ এস্টেভাও।
আরো পড়ুন:
দাপুটে জয়ে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তন
‘যেভাবে বার্সেলোনা ছাড়ব ভেবেছিলাম, তা হয়নি’ মেসির হৃদয়ভরা আক্ষেপ
ডানদিক দিয়ে রিস জেমস একটি সূক্ষ্ম ফ্লিক করে বল বাড়ান তার দিকে। সেখান থেকে এস্টেভাও যেন নাচতে নাচতে পেরিয়ে যান পাও কুবারসি ও আলেহান্দ্রো বালদেকে। এরপর তীরের মতো এক শট পাঠান জালে। উঁচু পোস্ট ঘেঁষে ঢুকে যাওয়া সেই দুর্দান্ত ফিনিশে হতবাক ক্যাম্প ন্যুর প্রতিনিধিরা।
প্রথমার্ধেই চেলসি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বার্সেলোনার ওপর। আক্রমণ, প্রেসিং, মধ্যমাঠের লড়াই সবকিছুর দখল ছিল তাদের হাতে। পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন দলটি ছিল স্পষ্টতই পিছিয়ে; রক্ষণে দুর্বল, আক্রমণে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন, আর চেলসির গোল-ক্ষুধার সামনে পুরোপুরি নিরুপায়।
মাঝমাঠে দারুণ লড়াই করলেও প্রায় সব বলেই দখল নেন ব্লুজদের খেলোয়াড়রা। ম্যাচ শেষে কোচ মারেৎসকা বলতেই পারতেন- চেলসির দায়িত্ব নেওয়ার ১৮ মাসে এর চেয়ে ভালো ৯০ মিনিট তিনি দেখেননি।
শেষ দিকে মাঠে নেমে লিয়াম ডিল্যাপ করেন দলের তৃতীয় গোল। ক্লাব বিশ্বকাপের পর তার প্রথম গোল। এই জয় চেলসিকে সরাসরি নকআউটে যাওয়ার শক্ত ভিত গড়ে দিল। শুধু তাই নয়, মনে হলো- পুরনো সেই ইউরোপ-জয়ী চেলসি হয়তো ফিরছে।
ম্যাচের শুরুতেই এনজো ফার্নান্দেজ বল জালে পাঠালেও, ওয়েসলি ফোফানার হাতছোঁয়ার কারণে গোল বাতিল হয়। এরপর সুযোগ পেয়ে ফাঁকা পোস্টে শট নষ্ট করেন ফেরান তোরেস। এস্টেভাওয়ের ফ্রি-কিক থেকে আবারও অফসাইডে হারিয়ে যায় এনজোর আরেকটি গোল।
তবে গোল পেতে এরপর আর দেরি হয়নি। কর্নার থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণে কুকুরেয়ারার দারুণ দৌড় ও কাটব্যাকে পেদ্রো নেতোর শট লাইনে ক্লিয়ার করেন তোরেস। কিন্তু বল ফিরে লেগে যায় কুন্দের গায়ে আর ঘুরে ঢুকে পড়ে বার্সার জালে।
এরপর বার্সা আরও বিপদে পড়ে ক্যাপ্টেন আরাউহোর বেপরোয়া ট্যাকলিংয়ে। মাত্র ১২ মিনিটের ব্যবধানে তিনি দ্বিতীয় হলুদ দেখে মাঠ ছাড়েন। তাতে চেলসি পায় সংখ্যাগত সুবিধা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অফসাইডে বাতিল হয় আন্দ্রে সান্তোসের গোল। কিন্তু খুশি হওয়ার মতো মুহূর্ত বেশিক্ষণ অপেক্ষা করল না। এরপরই এলো এস্টেভাওয়ের সেই বিস্ময়কর গোল।
সবশেষে বদলি হিসেবে নামা ডিল্যাপ এনজো ফার্নান্দেজের পাস থেকে অনায়াসে দলকে তৃতীয় গোল এনে দেন আর নিশ্চিত করেন দাপুটে জয়।
এই জয়ে ৫ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে চেলসি। অন্যদিকে সমান ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে ১৫তম অবস্থানে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ এস ট ভ ও
এছাড়াও পড়ুন:
বেলিংহামের শেষ মুহূর্তের গোলে হার এড়াল রিয়াল
জুদ বেলিংহামের শেষ মুহূর্তে করা সমতাসূচক গোল রিয়াল মাদ্রিদকে বাঁচিয়ে দিল পরাজয়ের হাত থেকে। শনিবার দিবাগত রাতে এলচের মাঠে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুইবার পিছিয়ে পড়েও ২-২ ড্র করে রিয়াল। এই ড্রয়ে বার্সেলোনা থেকে মাত্র ২ পয়েন্টে এগিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে লস ব্লাঙ্কোস।
প্রথমার্ধে ছিল গোল-মিসের উৎসব। অথচ তুমুল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের সেই অর্ধ শেষ হয় গোলশূন্যতেই। শুরুতেই রাউল আসেনসিওর পাস থেকে কিলিয়ান এমবাপ্পে গোল করার মতো অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে আন্দ্রে সিলভাও খুঁজে পাননি পোস্ট। এরপর থিবো কোর্তোয়া দারুণ এক সেভে বাঁচান দলকে, রাফা মিরের শট ঠেকিয়ে দিয়ে।
আরো পড়ুন:
দাপুটে জয়ে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তন
দ্রুততম ৪৪ গোলে রোনালদোর রেকর্ড ভাঙলেন এমবাপ্পে
একদিকে মাদ্রিদের আক্রমণভাগ ব্যর্থ, অন্যদিকে সুযোগ পেয়েও এলচে বারবার ভুল করেছে। বিশেষ করে ২৭ মিনিটে আন্দ্রে সিলভার এক ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে শট না নিয়ে মিরকে খুঁজতে গিয়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন। এমবাপ্পে এরপর আরেকবার গোলরক্ষক পেনিয়ার কাছে থামেন। দুই দলের গোলরক্ষকের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে প্রথমার্ধ ০-০ তে শেষ হয়।
বিরতির পরও পেনিয়া আগের ছন্দ ধরে রাখেন। রদ্রিগোর শট চমৎকারভাবে ঠেকান তিনি। কোর্তোয়াও তাই। তবু গোল হজম এড়ানো গেল না। ৫৩ মিনিটে জার্মান ভালেরার পেছন দিকের ব্যাকহিল পাস থেকে ফেবাস ক্লোজ রেঞ্জ থেকে বল জালে পাঠান। এগিয়ে যায় এলচে।
এরপর জাবি আলোনসো একের পর এক পরিবর্তন আনেন। বেঞ্চ থেকে নামানো ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ৭২ মিনিটে গোলের সামনে বল পেয়েও শট না নিয়ে এমবাপ্পেকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আলভারো নুনিয়েজ তা কাটিয়ে দেন। অবশেষে আক্রমণের চাপ ধরে রেখে ৭৮ মিনিটে হুইসেন গোল করে সমতা ফেরান। এলচের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের কর্নার ক্লিয়ার করতে না পারার ব্যর্থতার সুযোগটা নেন তিনি।
সমতায় ফিরেও থামেনি এলচে। মির ও মার্টিন নেটো দুইজনই লিড পুনরুদ্ধারের সুযোগ পেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৮৪ মিনিটে রদ্রিগেজ বক্সের ঠিক বাইরে থেকে দারুণ শটে এলচেকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ২০১৩ সালে লা লিগায় ফেরার পর এই প্রথম রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জয়ের গন্ধ পাচ্ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু নাটক বাকি ছিলই।
৮৭ মিনিটে ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে না পারলে বল এসে পড়ে বেলিংহামের সামনে। তিনি টোকা দিয়ে গোললাইন পার করিয়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় পেনিয়ার ফাউলের দাবি রেফারি আমলে নেননি।
যোগ করা সময়ের শুরুতেই হতাশা বাড়ে এলচের। এমবাপ্পেকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ দেখে মাঠ ছাড়েন ভিক্টর চুস্ত। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় ম্যাচ।
ম্যাচ শেষে রিয়ালের কোচ আলোনসো বলেন, ‘‘ফুটবল এমনই। ভালো একটা সময় কাটানোর পর হঠাৎ খারাপ ফল আসতেই পারে। সমালোচনা হবে, আমাদের তা মেনে নিয়েই এগোতে হবে। দল এখনো লড়াই করে যাচ্ছে, আমরা উন্নতির জায়গাগুলো দেখব। সামনে অনেক ম্যাচ আছে। আমাদের সেখানেই ফোকাস করতে হবে। আমরা ফলাফলে খুশি নই, তবে ছন্দে ফিরতেই হবে।’’
ঢাকা/আমিনুল