থাইল্যান্ডে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন এবং লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এই দুর্যোগের ফলে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

মিস ইউনিভার্স: যে রাউন্ডে মিথিলার স্বপ্নভঙ্গ

গুরুতর অভিযোগ তুলে মিস ইউনিভার্সের দুই বিচারকের পদত্যাগ

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে দেশটির দক্ষিণের দশটি প্রদেশে বন্যা আঘাত হেনেছে। মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী হাট ইয়ে শহরে ৩০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, একদিনে ৩৩৫ মিমি। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, শহরের যানবাহন ও ঘরবাড়ি ডুবে আছে, আর মরিয়া বাসিন্দারা তাদের ছাদে উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছেন।

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে বন্যায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কিন্তু মাত্র ১৩ হাজার জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য কাজ চলছে, কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। থাই কর্তৃপক্ষ ত্রাণ প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য সামরিক জাহাজ ও হেলিকপ্টার মোতায়েন করেছে।

সংকট মোকাবেলার দায়িত্বে নিযুক্ত থাই সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা একটি বিমানবাহী রণতরী এবং ১৪টি নৌকার একটি ফ্লোটিলা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা প্রতিদিন ৩ হাজার জনকে খাবার সরবরাহ করতে সক্ষম বলে জানা গেছে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, প্রয়োজনে বিমানবাহী রণতরীতে থাকা মেডিকেল টিম এটিকে ‘ভাসমান হাসপাতালে’ রূপান্তর করবে। 

সোংখলা প্রদেশের গভর্নর বলেছেন, হাট ইয়ে শহরের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য নৌকা, হাই-ক্লিয়ারেন্স ট্রাক এবং জেট স্কিও মোতায়েন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা সোংখলাকে দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করেছে এবং ত্রাণের জন্য তহবিল বরাদ্দ করেছে।

‘মাচিমা রেসকিউ সেন্টার’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারী দল রয়টার্সকে জানিয়েছে, তারা তিন দিন ধরে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধারের জন্য হাজার হাজার মানুষের ফোনকল পাচ্ছেন।

মাচিমার ফেসবুক পেজেও মানুষ সাহায্যের জন্য জরুরি আহ্বান জানিয়েছে। একজন লিখেছেন, ‘অনেক মানুষ আটকা পড়েছে.

..দয়া করে সাহায্য করুন। বন্যার পানি দ্বিতীয় তলায় পৌঁছেছে, যেখানে শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ এবং প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘তার পরিবার তিন দিন ধরে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছে, প্রতিটি সেকেন্ড এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দয়া করে পোস্টটি শেয়ার করে সাহায্য করুন।”

কেউ কেউ কয়েকদিন ধরে খাবার এবং পানি না পাওয়ার কথাও লিখেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সারে গ‍্যাসের দাম ১৬ থেকে বেড়ে ২৯ টাকা ২৫ পয়সা

সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে একলাফে বাড়িয়ে ২৯ টাকা ২৫ পয়সা করা হয়েছে। নতুন দাম আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।

আজ রোববার বিইআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ নতুন দাম ঘোষণা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির সদস্য মো. আবদুর রাজ্জাক, মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ শাহিদ সারওয়ার প্রমুখ।

পেট্রোবাংলা এবং গ্যাসের বিতরণ কোম্পানিগুলো ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করার আবেদন করেছিল। সে প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি গ্রহণ করা হয় গত ৬ অক্টোবর।

সার কারখানায় পুরো মাত্রায় গ্যাস দেওয়া হলে ২০ লাখ টনের ওপরে সার উৎপাদন করা সম্ভব। আর ২০ লাখ টন সার উৎপাদন করা গেলে গ্যাসের দাম ৩০ টাকা হলেও আমদানির তুলনায় কম দাম পড়বে। বছরে ৩০–৩২ লাখ টন ইউরিয়া সার জোগান দিতে হয়। গ্যাসের অভাবে আমদানি করে ১৬–২১ লাখ টন জোগান দিতে হয়।

দাম বাড়ানোর পর সার কারখানায় গ‍্যাস সরবরাহ না বাড়লে পেট্রোবাংলাকে জরিমানা করা হবে কি না বা দাম কমানো হবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি চেয়ারম‍্যান জালাল আহমেদ বলেন, পেট্রোবাংলা এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে সার কারখানায় গ‍্যাস সরবরাহ বাড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পেট্রোবাংলার প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, দাম বাড়ানো হলে বাড়তি ৭ কার্গো এলএনজি আমদানি করে সারে সরবরাহ করা হবে। ছয় মাস (অক্টোবর-মার্চ) পুরো মাত্রায় (২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হবে। অবশিষ্ট ছয় মাসের মধ্যে (এপ্রিল-মে) ১৬৫ মিলিয়ন হারে, জুনে ১৭৫ মিলিয়ন আর জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ করবে।

সার কারখানায় পুরো মাত্রায় গ্যাস দেওয়া হলে ২০ লাখ টনের ওপরে সার উৎপাদন করা সম্ভব। আর ২০ লাখ টন সার উৎপাদন করা গেলে গ্যাসের ৩০ টাকা হলেও আমদানির তুলনায় কম দাম পড়বে। বছরে ৩০–৩২ লাখ টন ইউরিয়া সার জোগান দিতে হয়। গ্যাসের অভাবে আমদানি করে ১৬–২১ লাখ টন জোগান দিতে হয়।

ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার পিএলসির দৈনিক চাহিদা ৭২ মিলিয়ন ঘনফুট, শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের চাহিদা ৪১ মিলিয়ন ঘনফুট, চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের চাহিদা ৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট, যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের চাহিদা ৪১ মিলিয়ন ঘনফুট, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের চাহিদা ৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত আশুগঞ্জ সার কারখানা অনেক পুরনো হওয়ায় গ্যাস খরচ অনেক বেশি, যে কারণে কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুনসার কারখানার জন্য গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব০৬ অক্টোবর ২০২৫

এ ছাড়া বিদেশি কোম্পানির মালিকানাধীন কাফকো সার কারখানায় দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট। কাফকোকে চুক্তির আওতায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হয়। আর তাদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক দরে ডলারে সার কিনে নেয় বাংলাদেশ। সম্প্রতি কোম্পানিটির সঙ্গে ৩০ টাকা দরে চুক্তি নবায়ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক মাস পরও শৃঙ্খলা ফেরেনি, পণ্য পেতে সময় লাগছে বেশি
  • নাগরিক দুর্ভোগ দূর করুন
  • ‘উদাসীনতায়’ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সংকটে যবিপ্রবি
  • ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার, ভারত থেকে সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি
  • সি-স্যুট সম্মাননা পেলেন দেশের ২৪ জন করপোরেট ব্যক্তিত্ব
  • বহুপক্ষীয় বৈশ্বিক ব্যবস্থা এখন, শুধু পশ্চিমে দেখার সুযোগ নেই
  • পঞ্চবটিতে পাইপলাইন ফেটে বন্ধ গ্যাস সরবরাহ, চরম ভোগান্তি
  • মুন্সীগঞ্জের দুই পৌর এলাকায় গ্যাস নেই, ভোগান্তি চরমে
  • সারে গ‍্যাসের দাম ১৬ থেকে বেড়ে ২৯ টাকা ২৫ পয়সা